বান্দরবানে আইসিইউ না থাকায় ভোগান্তি

বান্দরবান প্রতিনিধি >>>
পার্বত্য জেলা বান্দরবানে আইসিইউ শয্যা ও পিসিআর ল্যাব না থাকায় ভোগান্তি পোহাচ্ছেন জেলার অধ্বিাসীরা।  অন্যদিকে একই স্থানে করোনা রোগীদের আইসোলেশন ইউনিট ও স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম পরিচালনা করায় জেলার সদরসহ সাতটি উপজেলার হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত চিকিৎসক থাকলেও চিকিৎসা সেবা নিতে যাচ্ছে না সাধারণ মানুষ।  শহরের প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতেও চিকিৎসকরা নিয়মিত বসছে না।  ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন চিকিৎসাপ্রার্থীরা।  একই হাসপাতালে করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা চলায় করোনা সংক্রমণের ভয়েও অনেকে হাসপাতালগুলোতে যাচ্ছেন না।
রোগী ও স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, করোনা রোগীদের জন্য আইসোলেশনের ব্যবস্থা হাসপাতাল এলাকার বাইরে অন্য স্থানে করা উচিত ছিল।  হাসপাতাল এলাকার বাইরে অন্য স্থানে করোনা ইউনিট করা হলে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদের মাঝে আর আতংক কাজ করতো না।
বান্দরবানে পিসিআর ল্যাব এবং আইসিইউ স্থাপনের দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা। দ্রুত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ ও রোগ নির্ণয় করতে সরকারের কাছে ল্যাব স্থাপনের দাবি জানান তারা।  কারণ নমুনা পরীক্ষায়ও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের।  জেলার স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনা আক্রান্ত সন্দেহভাজন রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ল্যাবে পাঠাচ্ছেন।  ঐ নমুনার ফল মিলছে প্রায় ১ সপ্তাহ কিংবা ১৫-২০ দিন পরে।
এদিকে, বান্দরবানে হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতো কোনো আইসিইউ শয্যা না থাকায় করোনা রোগীদের নিয়ে শঙ্কায় দিন কাটাতে হয় এই অঞ্চলের মানুষদের।  উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে হচ্ছে জেলার বাহিরে চট্টগ্রাম অথবা ঢাকায়।  জেলার সাতটি উপজেলায় ১৩০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড রয়েছে।  তবে পিসিআর ল্যাব এবং আইসিইউ শয্যা সংকটই মানুষকে আতঙ্কগ্রস্ত করে তুলছে।
বান্দরবান সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. জসিম উদ্দিন বলেন, বান্দরবান সদর হাসপাতালসহ সাতটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটিতেও আইসিইউ শয্যা নেই।  তবে সদর হাসপাতালে ৮টি আইসিইউ শয্যা স্থাপনের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।  বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে বান্দরবান সদর হাসপাতালে ৫টি আইসিইউ শয্যা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।  তিনি আরো বলেন, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।  ডাক্তার ও নার্স সবাই সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।  আমরা হেল্পলাইন নাম্বার চালু করেছি।  ঐ নাম্বারের মাধ্যমে কেউ সেবা নিতে চাইলে নিতে পারবে।  অনেকেই আমার সাথে যোগাযোগ করে থাকেন আমি সেবা দিয়ে থাকি।  যে কেউ ভিডিও কল এর মাধ্যমেও চিকিৎসা সেবা নিতে পারবে, তাতেও প্রস্তুত রয়েছে আমাদের চিকিৎসকেরা।
বান্দরবানের ডেপুটি সিভিল সার্র্জন ডা. মং টিং ঞো জানান, বর্তমানে বান্দরবান সদর হাসপাতালে কাগজে কলমে ডাক্তার আছেন ২১ জন আর বর্তমানে কাজ করছে ১৬ জন।  অন্যদিকে রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ সরকারিভাবে রয়েছে ১৩ জন, কাজ করছে ৬ জন।  থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ সরকারিভাবে রয়েছে ১২ জন, তবে কাজ করছে ৭ জন।  আলীকদমে ১১ জনের স্থলে আছেন ৭ জন।  নাইক্ষ্যংছড়িতে ১২ জনের স্থলে আছেন ৯ জন।  রোয়াংছড়িতে ১৩ জনের স্থালে কাজ করছেন ১০ জন।  বান্দরবান সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৮ জনের স্থলে কাজ করছেন ৬ জন।
তিনি আরো জানান, বান্দরবানের রোগীদের সেবা দিতে স্বাস্থ্য বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে।  তবে মূমুর্ষ রোগীদের চিকিৎসার জন্য বান্দরবানে কোনো আইসিইউ শয্যা না থাকায় আমরা তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাতে বাধ্য হই।

ডিসি/এসআইকে/আরএসপি