ফটিকছড়িতে কোভিড বিশেষায়িত হাসপাতাল উদ্বোধন

মোহাম্মদ জিপন উদ্দিন, ফটিকছড়ি প্রতিনিধি >>>
উত্তর চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় সর্বস্তরের মানুষের সম্মিলিত সহযোগিতায় কোভিড বিশেষায়িত হাসপাতালের উদ্বোধন করা হয়েছে।  আজ সোমবার (২৭ জুলাই) ফটিকছড়ির সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হাসপাতালটির উদ্বোধন করেন।
এ সময় উপজেলা পরিষদ মুক্তিযোদ্ধা জহরুল হক হল রুমে উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জানে আলম, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হোসাইন মো. আবু তৈয়ব, মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান জেবুন নাহার মুক্তা, ভাইস-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ছালামত উল্লাহ চৌধুরী শাহীন, ফটিকছড়ি থানার অফিসার্স ইনচার্জ বাবুল আকতার, ফটিকছড়ি পৌর মেয়র মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, ডা. জয়নাল আবেদীন মুহুরী, ডা. আবুল বাসেত প্রমুখ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন ফটিকছড়ির সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদ, চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির, চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি, ফটিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান হোসাইন মোহাম্মদ আবু তৈয়ব, ফটিকছড়ি পৌর মেয়র ইসমাইল হোসেন।
সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি বলেন, ফটিকছড়িবাসীর সুচিকিৎসার কথা চিন্তা করে আমি উপজেলার সদর ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটিকে করোনা বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসাবে রূপান্তরের ঘোষণা দিই।  যার জন্য প্রয়োজন ছিল ১ কোটি টাকা।  এতটাকা কিভাবে আসবে সে চিন্তায় ছিলাম আমরা সবাই।  কিন্তু ফটিকছড়ির মানুষ এভাবে এগিয়ে আসবে আমি কল্পনাও করতে পারিনি।  হাসপাতালটি সরকারি হিসাবে বন্ধ থাকায় এতে কোনো প্রকার বরাদ্দ না থাকা স্বত্বেও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় আমরা হাসপাতালটি কোভিড-১৯ হাসপাতালে রূপান্তর করতে সক্ষম হয়েছি।  ফটিকছড়িবাসীকে নিয়ে আমি গর্ব করি।  মুজিববর্ষে আমি এ হাসপাতাল প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিলাম।  আমার উপজেলায় কোনো মানুষ বিনা চিকিৎসায় মারা যেতে পারে না।  এছাড়াও যারা এ হাসপাতালের জন্য নানাভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।  আপনাদের কথা সবাই আজীবন মনে রাখবে।  একইসাথে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সায়েদুল আরেফিন যিনি হাসপাতাল রূপান্তরের জন্য প্রধান সমন্বয়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন তাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান তার এমন গুরুদায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের জন্য।
ফটিকছড়ি বিবিরহাটে অবস্থিত ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি অনেকবছর যাবৎ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল শুধুমাত্র বহির্বিভাগ ব্যতীত।  ফটিকছড়ির আপামর জনতার কথা চিন্তা করে এ হাসপাতালকে করোনা বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসাবে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যার জন্য প্রয়োজন ছিল ১ কোটি টাকা এবং প্রতিমাসে ৩০ লাখ টাকারও বেশি।  এ হাসপাতাল করোনা বিশেষায়িত হাসপাতালে রূপান্তরের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সায়েদুল আরেফিনকে প্রধান সমন্বয়ক হিসাবে দায়িত্ব দেয়া হয়।  শীততাপ নিয়ন্ত্রিত এবং অত্যাধুনিক মানসম্পন্ন হাসপাতালটি গড়ার জন্য এগিয়ে এসেছেন শিল্পপতি, রাজনীতিবীদ, বিভিন্ন ধর্মীয়-সামাজিক সংগঠন, শিক্ষার্থীসহ ছোট-বড় অনেকেই।  সবার সহযোগিতায় উপজেলা আপদকালীন ফান্ডে এ হাসপাতালের জন্য জমা হয় ১ কোটি ৫৯ লক্ষ ৫ হাজার ৩২০ টাকা যা বিশেষায়িত হাসপাতাল রূপান্তরের প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ টাকা।
এজন্য সর্বস্তরের জনসাধারণ ফটিকছড়িবাসীকে অভিনন্দন জানান।  নিজেদের টাকায় নিজেরা হাসপাতাল তৈরী করতে পেরে আনন্দিত ফটিকছড়িবাসী।

ডিসি/এসআইকে/এমজেইউ