নতুন ভাইরাস আতঙ্ক : যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ৩৪ দেশের যোগাযোগ বন্ধ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
করোনা ভাইরাসের নতুন প্রজাতি শনাক্তের পর বড় বিপদে রয়েছে যুক্তরাজ্য।  একদিকে ৭০ শতাংশ বেশি সংক্রামক ভাইরাস আতঙ্ক, অন্যদিকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা।  ইতোমধ্যেই যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিমান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বিশ্বের কয়েক ডজন দেশ।  আরও কয়েকটি দেশ থেকে এসেছে বিশেষ সতর্কবার্তা।
করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কায় লন্ডন, দক্ষিণপূর্ব ইংল্যান্ডসহ বেশ কিছু অঞ্চলে চার স্তরের লকডাউন জারি করেছে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ।  উৎসবকে সামনে রেখে গোটা ইংল্যান্ডেই আরোপ করা হয়েছে কড়া বিধিনিষেধ।  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, যুক্তরাজ্য ছাড়াও ভাইরাসের নতুন প্রজাতিটি পাওয়া গেছে ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস এবং অস্ট্রেলিয়াতে।  এছাড়া, দক্ষিণ আফ্রিকায় মিলেছে আরও একটি প্রজাতি।
করোনা ভাইরাসের নতুন প্রজাতি শনাক্তের জেরে ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়ার অন্তত ৩৪টি দেশ যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিমান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।  নিষেধাজ্ঞায় পড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাও।
দেখে নেয়া যাক কোন কোন দেশ দিয়েছে এধরনের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা-
গত সোমবার যুক্তরাজ্যফেরত মাত্র একটি ফ্লাইট অবতরণের অনুমতি দিয়েছে আর্জেন্টিনা।  এরপর থেকেই ব্রিটিশদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন তাদের।  এদিন থেকে যুক্তরাজ্যের সব ধরনের ভ্রমণকারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে বেলজিয়ামও।
২১ ডিসেম্বর থেকে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের সব ফ্লাইট বাতিল করেছে বুলগেরিয়া।  রোববার মধ্যরাত থেকে অন্তত তিনদিনের জন্য যুক্তরাজ্যের বেশিরভাগ ভ্রমণকারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কানাডা।
চিলিতে মঙ্গলবার থেকে যুক্তরাজ্যের সব ফ্লাইট নিষিদ্ধ।  গত ১৪ দিনের মধ্যে যারা যুক্তরাজ্য থেকে ফিরেছেন, তাদের সেলফ কোয়ারেন্টাইনও বাধ্যতামূলক করেছে লাতিন আমেরিকার দেশটি।
সোমবার থেকে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিমান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে কলম্বিয়া।  এখানেও ১৪ দিনের মধ্যে যুক্তরাজ্যফেরত ভ্রমণকারীদের সেলফ কোয়ারেন্টাইন আবশ্যক।  স্থানীয় সময় সোমবার ভোর ৬টা থেকে যুক্তরাজ্যের সব ফ্লাইট নিষিদ্ধ করেছে চেক প্রজাতন্ত্র।  মঙ্গলবার থেকে ৪৮ ঘণ্টার জন্য যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিমান চলাচল বন্ধ ডেনমার্কের।
যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে মধ্য আমেরিকার দেশ এল সালভাদর।  গত রোববার মধ্যরাত থেকে চলতি বছর শেষ না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সব ধরনের যাতায়াত বন্ধ করেছে এস্তোনিয়া।
গত রোববার থেকে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ ফ্রান্সেরও।  অন্তত ৪৮ ঘণ্টা এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রাখার ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।
যুক্তরাজ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে যোগাযোগ নিষিদ্ধ করেছে জার্মান সরকার।  গত ১৪ দিনের মধ্যে দুই ঘণ্টার বেশি যুক্তরাজ্যে অবস্থান করা সব ধরনের যাত্রীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে হংকং।  ২০২০ সাল শেষ না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিমান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে ভারত।  ২২ ডিসেম্বরের আগে যুক্তরাজ্যফেরত সব নাগরিকের আরটি-পিসিআর টেস্ট বাধ্যতামূলক করেছে দেশটি।
ভারতের মতো পাকিস্তানও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন করেছে।  তাদের এ নিষেধাজ্ঞা থাকবে ২৩ থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।  রোববার থেকে দুই সপ্তাহের জন্য যুক্তরাজ্যের সব ফ্লাইট নিষিদ্ধ করেছে ইরান।  যু্ক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকার পাশাপাশি ডেনমার্কের ফ্লাইট নিষিদ্ধ করেছে ইসরায়েল।
যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সব ধরনের বিমান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে তাদের প্রতিবেশী দেশ ইতালি।  সোমবার থেকে যুক্তরাজ্যের সব ধরনের ফ্লাইটে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করেছে জর্ডান।  তাদের এ বিধিনিষেধ থাকবে অন্তত আগামী ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত।
গত সোমবার থেকে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে আকাশপথে যোগাযোগ বন্ধ করেছে কুয়েত।  ২১ ডিসেম্বর থেকে আগামী ১ জানুয়ারি পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের সব ফ্লাইট বাতিল করেছে লাটভিয়া।
নতুন প্রজাতির ভাইরাসের জেরে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিমান চলাচল বন্ধ করেছে লিথুনিয়া ও লুক্সেমবার্গ।  গতকাল রোববার রাত থেকে ব্রিটিশ ফ্লাইট নিষিদ্ধ করেছে মরক্কো।  যোগাযোগ বন্ধের তালিকায় নাম লিখিয়েছে নেদারল্যান্ডসও।
মঙ্গলবার থেকে যুক্তরাজ্যের জন্য আকাশ, সমুদ্র ও স্থল সীমান্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে ওমান, থাকবে অন্তত এক সপ্তাহ।
যুক্তরাজ্য তো বটেই, গোটা ইউরোপ থেকে আসা ফ্লাইটই বন্ধ করে দিয়েছে পেরু।  গত দুই সপ্তাহের মধ্যে যুক্তরাজ্যে থাকা বিদেশি ভ্রমণকারীদের প্রবেশও নিষিদ্ধ করেছে দেশটি।
সোম ও মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের সব ফ্লাইট বন্ধ রেখেছে আয়ারল্যান্ড।  মঙ্গলবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য যুক্তরাজ্যের ফ্লাইট নিষিদ্ধ করেছে রাশিয়া।  পর্তুগালের মতো স্পেন সরকারও যুক্তরাজ্য ভ্রমণকারী বিদেশিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।  সেখানে মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হয়েছে এ নিয়ম।
যুক্তরাজ্যের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সুইডেন।  যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্রমণকারী বিদেশিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সুইজারল্যান্ড।
নতুন ভাইরাস সংক্রমণের ভয়ে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার সব ফ্লাইট নিষিদ্ধ করেছে তিউনিশিয়া।  গত সোমবার থেকে শুরু করে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত কার্যকর থাকবে তাদের এ নিষেধাজ্ঞা।
নিষেধাজ্ঞা দেয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে তুরস্ক।  তারা নিষিদ্ধ করেছে যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা, নেদারল্যান্ডস ও ডেনমার্কের সব ফ্লাইট। সূত্র: সিএনএন

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ