স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় স্বচ্ছ নয় : ডা. রশীদ ই-মাহবুব

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিজে স্বচ্ছ নয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক সভাপতি ও স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশীদ ই-মাহবুব।
শনিবার (৯ জানুয়ারি) বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ভবন মিলনায়তনে বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত ‘কোভিড-১৯ টিকা ব্যবস্থপনা প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।  অধ্যাপক ডা. রশীদ ই মাহবুব বলেন, এই মুহূর্তে জনপ্রত্যাশা হচ্ছে টিকা পাওয়া।  কিন্ত সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কারা টিকা আনছে-সে নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।  এখানে বাংলাদেশ সরকার কেন সরাসরি টিকা আনতে পারলো না- এটা আমাদের জানার দরকার ছিল।  আর এটা না জানলে এই প্রশ্ন থাকবেই।
দেশে একাধিক সোর্স থেকে টিকা আনার বিষয়ে তিনি বলেন, মডার্না এবং ফাইজারও এ দেশে ভ্যাকসিন বিক্রি করতে চায়।  অথচ আমরা বলছি, তাদের টিকার উপযোগী চেইন কোল্ড আমাদের নেই।  কিন্তু আমরা কি সত্যি তা মূল্যায়ন করে দেখেছি সেটা আছে কি নেই প্রশ্ন করে অধ্যাপক রশীদ ই-মাহবুব বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেক্টরে না থাকতে পারে কিন্তু অন্যান্য সেক্টরে এ ফ্যাসিলিটি অ্যাভেইলেবল, কিন্তু আমরা অনেক তথ্য বলি না।
এক্ষেত্রে স্বচ্ছতার দরকার জানিয়ে তিনি বলেন, ৭০ থেকে ৮০ ডিগ্রি তাপমাত্রার কতগুলো ফ্রিজ আমাদের রয়েছে সেটাও আমরা জানি না, মন্ত্রণালয়ের তথ্য আমাদেরকে সঠিকভাবে দিচ্ছে কীনা…।  তিনি আরও বলেন, একইভাবে ভ্যাকসিনের দাম একেক দেশে একেকরকম।  আমাদের বার্গেইন ক্ষমতা কি এত কম?  ঠিক একইভাবে বাংলাদেশ যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন দেওয়া ওষুধকে অনুমোদন দেই।  কিন্তু অন্যদেরকে রেজিস্ট্রেশন দেই না, তাতো নয়।
তিনি বলেন, রাশিয়া এবং চীনের দরোজাটা বন্ধ করে রেখেছি।  তারা যদি আমাদের প্রক্রিয়ার মধ্যে আসে, তাদের নিতে পারি, তাতে করে আমাদের বার্গেনিং পাওয়ার বাড়ে।  অপরদিকে, আমাদের দেশে আমরা কেন ভ্যাকসিন বানাতে সক্ষম নই প্রশ্ন করে তিনি বলেন, গ্লোব বায়োটেককে কেন এতদিন পর অনুমতি দেওয়া হলো, তারাতো তার আগের রিপোর্ট জমা দিয়েছে, রিপোর্ট দেখতে এতদিন সময় লাগে না।
আমার কাছে মনে হচ্ছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিজে স্বচ্ছ না।  তাদের মাথায় কি আছে, সেটা আমি বুঝি না।  আর তাদের অব্যস্থাপনার জন্য জাতি আগেও ভুগেছে এবং আগামীতেও তারা আমাদের ভোগাবে।
একই তালে সুর মিলিয়েছেন বিএমএ-র বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন।  তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে কাদেরকে টিকা দেওয়া হবে সে বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন।  তার প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চিকিৎসকদের জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে আরও ভালোভাবে কথা বলবেন, আলোচনা করবেন।  কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আমাদের সঙ্গে কথা বলছে না।  তারা যদি মনে করেন তারা যাদেরকে দিয়ে টিকা প্রদান করবেন, তাহলে সারা বাংলাদেশ বিএমএ-র সদস্যরা আছেন, তাদেরকে দিয়ে সে কাজটি (টিকা প্রদান) করতে পারেন।  কিন্তু মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে এ ধরনের কিছু হয়নি- এটা দুঃখজনক হলেও সত্য।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ