রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেও এসএমএস না পাওয়ায় ভোগান্তিতে মানুষ

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে দেশে জাতীয়ভাবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকাদান কর্মসূচি।  টিকা দেওয়ার জন সুরক্ষা ওয়েব সাইটে নিবন্ধনের কথা বলা হলেও প্রত্যন্ত অঞ্চল ও বয়স্কদের জন্য স্পট রেজিস্ট্রেশন বা কেন্দ্রে গিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে রেজিস্ট্রেশন করেও টিকা নিতে পারবেন।  কিন্তু কেন্দ্রগুলোতে এ সুযোগ নিয়ে অতিরিক্ত ভিড় হচ্ছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী গত ১১ ফেব্রুয়ারি স্পট রেজিস্ট্রেশন আপাতত বন্ধ করার কথা জানান।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নিবন্ধন না করে অনেকে টিকা নিতে আসছেন।  এতে বিভিন্ন কেন্দ্রে অতিরিক্ত ভিড় তৈরি হচ্ছে।  এখন থেকে যারা নিবন্ধন করে আসবেন, শুধু তাদেরই টিকা দেওয়া হবে।  ভবিষ্যতে যদি টিকাদান কেন্দ্রে নিবন্ধনের প্রয়োজন পড়ে তখন আবারও জানানো হবে’।
তবে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নান জানিয়েছেন,  যাদের বয়স বেশি বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষ, তারা জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে নিয়ে টিকাদান কেন্দ্রে গেলে তাদের নিবন্ধন করে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করার কথা ভাবছে সরকার।
স্বাস্থ্যসচিব বলেন, গ্রামের মানুষের আগ্রহ বাড়াতে প্রয়োজনে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
রবিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেও এসএমএস না পাওয়া মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে টিকা নিতে আসা একজন জানান, তিনি গত ৭ ফেব্রুয়ারি মায়ের রেজিস্ট্রেশন করেন আর তারা স্বামী স্ত্রী রেজিস্ট্রেশন করেন ৯ ফেব্রুয়ারি।  কিন্তু তারা কেউ এসএমএস পাননি। এই জটিলতায় তিনি ঘুরছেন এ ডেস্ক থেকে সে ডেস্কে।
৬৬ বছরের নিজাম উদ্দীন এখানে এসেছেন ইস্কাটন থেকে।  জানালেন, গত ৯ কী ১০ ফেব্রুয়ারিতে রেজিস্ট্রেশন হয়েছে, ফিরতি বার্তায় আমাকে ডাউনলোড কম্প্লিট বলছে।  কিন্তু এখন পর্যন্ত মোবাইলে এসএমএস আসেনি।
নিজাম উদ্দীন বলেন, ‘কী এক ঝামেলাতে পড়লাম, এখানে আসার পর কেউ কোনও জবাব দিতে পারছে না, কেবল এখান থেকে সেখানে ঘোরাচ্ছে’।
এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে দেশে এখন পর্যন্ত টিকা নিয়েছেন নয় লাখ ছয় হাজার ৩৩ জন।  অধিদফতর জানায়, রবিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত টিকা নিয়েছেন এক লাখ ৬৯ হাজার ৩৫৩ জন।
টিকা গ্রহীতাদের ভোগান্তি সর্ম্পকে জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক ( হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জুলফিকার আহমেদ আমিন বলেন,  এই কেন্দ্রের জন্য নিবন্ধন হয়েছে প্রায় ২৭ হাজার।  তাদেরকে একদিনে টিকা দেওয়া যাবে না-এটা বুঝতে হবে।
তবে রেজিস্ট্রেশন যেহেতু হয়েছে, সেখানে টিকা অবশ্যই দেওয়া হবে।  হয়তো আজ হচ্ছে না, কাল হবে, নয়তো পরশু, অথবা তার পরের দিন। ডেট পাননি মানেই যে কেউ ডেট পাবেন না-বিষয়টি তা নয়।
কিন্তু অনেক বৃদ্ধ মানুষ এসে ফেরত যাচ্ছেন, ভোগান্তিতে পড়ছেন জানালে তিনি বলেন,  প্রবীণ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ কনসিডার করা হচ্ছে।  যতটুকু করা সম্ভব-তাদেরকে তালিকার প্রথমদিকে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হচ্ছে।
ঢাকা মহানগরীর ৪৬টি হাসপাতালে আজ টিকা নিয়েছেন ২২ হাজার ৯৮২ জন।  তার মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সবচেয়ে বেশি এক হাজার ৩২৪ জন টিকা নিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ৭ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে জাতীয়ভাবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা দেওয়া শুরু হয়।  অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি কোভিশিল্ড ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট থেকে বাংলাদেশ কিনে নেয়।  গত ২৫ জানুারি ৫০ লাখ টিকা আসে দেশে, তার আগে ২১ জানুয়ারি দেশে আসে ভারত সরকারের উপহার দেয়া ২০ লাখ টিকা।

ডিসি/এসআইকে/এমএস