করোনা : চট্টগ্রামে আইসিইউ বেডের সংকটেও নতুন শনাক্ত ৪৬৭ জন

নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
তীব্র সংকটে পড়তে যাচ্ছে করোনা বৃহত্তর চট্টগ্রাম।  গত বছরের চেয়েও এবার বেশি সংকট মোকাবেলা করতে হবে বলে আভাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।  আইসিইউ বেডসহ করোনা মোকাবেলা সরঞ্জাম সংকটের এই তীব্রতার মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে আরো ৪৬৭ জনের দেহে কোভিড- ১৯ সংক্রমণ ধরা পড়েছে।  ২ হাজার ৫২৩টি নমুনা পরীক্ষা করে এসব নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।  শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ৫০ শতাংশ।  এদিন করোনায় মৃত্যুবরণ করেনি কেউ।  এ নিয়ে এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪১ হাজার ২৬৮ জনে দাঁড়িয়েছে।  মোট মৃত্যুবরণ করেন ৩৮৯ জন।
শনিবার (৩ এপ্রিল) সকালে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবসহ চট্টগ্রামে ৭টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়।  নতুন আক্রান্তদের মধ্যে নগরে ৩৮৫ জন এবং উপজেলায় ৮২ জন।
চট্টগ্রামের হাসপাতালগুলোতে দেখা দিয়েছে আইসিইউ বেডের সংকট।  চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ১০টি আইসিইউ বেডে রোগী ভর্তি আছে।  ১৪০টি জেনারেল বেডের মধ্যে ৮০ টিতে রোগী চিকিৎসাধীন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০টি আইসিইউ বেডের মধ্যে ৮টিতে রোগী ভর্তি আছে।  করোনা ওয়ার্ডে জেনারেল বেডে প্রায় ২০০ জন রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া যায়।  সেখানেও রোগী বাড়ছে।  বিআইটিআইডি হাসপাতালে ৩২টি বেডের সবগুলোই রোগীতে পরিপূর্ণ বলে জানা গেছে।
বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে ৯২টি কোভিড বেডের মধ্যে ১৬টি আইসিইউ এবং এইচডিইউ।  সেখানে আরও বেশি রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।  পার্ক ভিউ হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা ১০টি এবং ৫৬টি জেনারেল বেডের অতিরিক্ত রোগী ভর্তি করতে হয়েছে।  ম্যাক্স হাসপাতালের ১০টি আইসিইউ বেডও খালি নেই।  এছাড়া চমেক হাসপাতালে ৮০টি, জেনারেল হাসপাতালে ৩০টি, বিআইটিআইডিতে ১০টি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ১০০টি হাই-ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলায় চলছে মুমূর্ষু রোগীর চিকিৎসা।
এদিকে, দিন দিন চট্টগ্রামে অতীতের রেকর্ড ভঙ্গ করে বেড়ে চলা করোনার প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় কঠোর অবস্থানে প্রশাসন।  ইতোমধ্যে জেলায় সন্ধ্যা ৬ টার পর থেকে জরুরি সেবা ছাড়া সকল দোকাট-পাট তথা বাণিজ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।  তবে আজ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী সারাদেশে লকডাউনের সিদ্ধান্ত আসছে বলে জানিয়েছেন।  তাঁর বক্তব্যের পর জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীও লকডাউনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এক সপ্তাহের জন্য লকডাউনের এই সিদ্ধান্ত হলেও তা পর্যায়ক্রমে আরো বেড়ে ঈদ পর্যন্ত গড়াতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে।  সরকারের এমন সিদ্ধান্ত জানার পর হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে সাধারণ মানুষেরা।  নিম্ন, নিম্নমধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত, খেটে খাওয়া মানুষগুলো চরম হতাশা আর ক্ষোভ প্রকাশ করে লকডাউনে তাদের অনিবার্য ক্ষতি থেকে রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন।

ডিসি/এসআইকে/আইএস