অলিগলিতে ভিড়-আড্ডাবাজি, স্বাস্থ্যবিধি মানছে না কেউ

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গত ১৪ এপ্রিল থেকে সারাদেশে চলছে ৮ দিনের সরকারঘোষিত কঠোর লকডাউন।  জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষকে ঘরের বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে।  বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন ও অফিসও।  তবে নির্দেশনা উপেক্ষা করে কারণে-অকারণে মানুষ শহরের রাস্তায় বের হচ্ছেন।  অনেকে আবার পুলিশি ঝামেলা এড়াতে কেনাকাটা না করলেও বাজারের ব্যাগ সঙ্গে রাখছেন।  মাস্ক, সামাজিক দূরত্ব ছাড়ায় ভিড় করে রাস্তায় আড্ডা ও ঘোরাফেরা করছে মানুষ।
শনিবার (১৭ এপ্রিল) মিপুরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রধান সড়কে যান চলাচল বন্ধ।  খুব বেশি মানুষের জটলা দেখা না গেলেও পাড়া-মহল্লায় অবাধে চলছে যানবাহন।  পাইকারি বাজার, কাঁচাবাজারসহ পাড়া-মহল্লায় সব ধরনের দোকান-পাটও খোলা।  অবাধে চলাচল করছেন মানুষ।  দুপুর গড়ালেই অলি-গলিগুলো হয়ে উঠছে ভরা হাটবাজার।  শুধু মানুষ আর মানুষ।
মিরপুর, শেওড়াপাড়া, পাইকপাড়া, ৬০ ফিট এলাকার বিভিন্ন গলি ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও স্বাস্থবিধির বালাই নেই।  যে যার যার মতো অবাধে চলাফেরা করছেন।  মুখে মাস্ক নেই।  সামাজিক দূরত্ব নেই।  গলিগুলোতে অবাধে চলাচল করছে মানুষজন।  জটলা পাকিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন পাড়ার তরুণ, যুবক ও বয়স্করাও।
রিয়াদ, বাদল, মিজান ও সবুজ ৬০ ফিট রাস্তায় দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন।  তারা জানান, সারাদিন বাসায় বসে থাকতে ভালো লাগে না বলে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে ক্ষণিকের জন্য বাইরে বের হয়েছেন।  এখন কলেজও বন্ধ, পড়াশোনার চাপ নেই।  বিকেল পর্যন্ত সবাই একসঙ্গে ঘুরবেন।  সন্ধ্যায় ইফতারের আগে বাসায় ফিরবেন।
মুখে মাস্ক না পরে রাস্তায় আনারস বিক্রি করছিলেন বাচ্চু।  তিনি বলেন, ‘মাস্ক পইরা কি হইব?  করোনা হওয়ার থাকলে এমনিতেই হইব।  আল্লাহ যেদিন নিবে, হেইদিন চইলা যাইতে হইব।  এসব সামজিক দূরত্ব দিয়া কিছু হইব না’।
জাহিদুল ইসলাম মাস্ক পরেই বের হয়েছেন।  তবে তার সংশয় তিনি একা স্বাস্থবিধি মেনে কি করবেন?  তিনি বলেন, ‘আশপাশে কেউই তো মানছে না।  সবাই মিলে সচেতন না হলে করোনা নিয়ন্ত্রণে আসবে না।  কাজে বের হয়েছি।  কিন্তু রাস্তায় দেখি মানুষ আর মানুষ।  একটা জিনিস কিনতে গেলে আরও তিনজন এসে গায়ে পড়ে।  এ অবস্থায় কিভাবে স্বাস্থবিধি মেনে চলব?’
থুতনির নিচে মাস্ক পরা ফলবিক্রেতা জয়নাল বলেন, ‘মানুষকে ভিড় করতে নিষেধ করলেও শুনে না।  বিশেষ করে বিকেল বেলায় প্রচন্ড ভিড় বেড়ে যায়।  মানুষের মাথা মানুষ খায়- এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়।  কারণ ইফতারের আগ মুহূর্তে সবাই একযোগে কেনাকাটা করতে বের হন।  সবাই নিজের জায়গা থেকে সচেতন না হলে কেউ একা করোনা ঠেকাতে পারবে না।  যতই সরকার লকডাউন দিক না কেন’।
অলি-গলিতে মানুষের জটলা সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ইফতেখারুল ইসলাম জানান, সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত কাঁচাবাজারের জিনিসপত্র বিক্রির নির্দেশনা আছে।  এ সময় কিছুটা মানুষের উপস্থিতি দেখা যেতে পারে।  তবুও যাতে স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘিত না হয়, সে ব্যাপারে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে।  সবসময় মাইকিংসহ টহল দিচ্ছে’।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ