চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলা লকডাউন

উত্তর চট্টগ্রাম প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলা লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা করোনা (কোভিড-১৯) নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কমিটি।  বুধবার (২৩ জুন) থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত মোট আটদিন এ লকডাউন কার্যকর থাকবে।
মঙ্গলবার (২২ জুন) বিকেল ৪ টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আয়োজিত কমিটির সভায় এ ঘোষণা দেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘জেলার সিভিল সার্জন যে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছেন তাতে দেখা যাচ্ছে, জেলার মধ্যে সবচেয়ে সংক্রমণের হার বেশি ফটিকছড়ি উপজেলায়।  গত ১৪ দিনে ওই উপজেলার সংক্রমণের হার ৩৫ দশমিক ৯ শতাংশ।  এছাড়াও হাটহাজারী ও সীতাকুণ্ড উপজেলায়ও সংক্রমণ বাড়ছে।  তবে আপাতত শুধু ফটিকছড়ি উপজেলায় লকডাউন দেয়া হচ্ছে।  বাকিগুলোর পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে’।
তিনি আরও বলেন, ‘লকডাউনের সময় ফটিকছড়ির অভ্যন্তরে চলাচলকারী গাড়ি হাইওয়ে সড়কে উঠতে পারবে না।  উপজেলার কাঁচাবাজার সকাল ৭টা থেকে ১১টা ও বিকেল ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।  ওষুধের দোকান সবসময় খোলা থাকবে।  উপজেলায় সকল ধরনের সভা-সমাবেশ ও জনসমাগম বন্ধ থাকবে।  মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নামাজ আদায় করতে হবে এবং প্রবেশমুখে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে।  আগামি ২৩ জুন থেকে ৩০ জুন তারিখ পর্যন্ত মোট আটদিন এ লকডাউন কার্যকর থাকবে।  এরপর পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে’।
চট্টগ্রাম মহানগর এলাকার জন্য নির্দিষ্ট কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘মহানগর এলাকায় আগামিকাল (বুধবার) থেকে ওষুধের দোকান ছাড়া বাকি দোকান রাত ৮ টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে।  এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে জেলা প্রশাসনের ১২টি মোবাইল টিম মাঠে থাকবে।  মহানগর এলাকায় মেয়রের নেতৃত্বে আলাদা করোনা প্রতিরোধ কমিটি আছে।  ওই কমিটির প্রধান মেয়রকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানানো হবে।  যাতে তাদের কাউন্সিলরসহ সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়ন করতে পারেন’।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উদ্দেশে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে প্রতিদিন বিশেষ করে ছুটির দিনে জনসমাগম হচ্ছে।  এটি সংক্রমণ বাড়ার অন্যতম কারণ।  তাই মেট্রোপলিটন পুলিশকেও চিঠি দেয়া হবে।  যাতে তারা সমুদ্র সৈকত এলাকার প্রবেশমুখে ব্যারিকেড দিয়ে যানচলাচল ও মানুষের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে’।
গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনা হবে জানিয়ে মমিনুর রহমান বলেন, ‘আগামিকাল থেকে বিআরটিএ কার্যালয়ের তিনজন এবং জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের একাধিক ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে নামবে।  গণপরিবহনে বেশি ভাড়া, নির্দিষ্ট আসনের অর্ধেকের বেশি যাত্রী পরিবহন ও স্বাস্থ্যবিধি না মানার বিষয়টি কঠোরভাবে তদারকি করা হবে’।
কমিউনিটি সেন্টারের মালিকদের উদ্দেশে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘অনেক কমিউনিটি সেন্টারে আমাদের অগোচরে বিয়ের অনুষ্ঠান করা হচ্ছে।  বিশেষ করে যেসব কমিউনিটি সেন্টার একটু রাস্তার ভেতরে, সেগুলোতে বিয়ে হচ্ছে।  এ ধরণের খবর পেলে কমিউনিটি সেন্টারের মালিকসহ বিয়ে আয়োজকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে’।
রেস্টুরেন্ট মালিকদের উদ্দেশে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে নির্দিষ্ট আসনের অর্ধেক কাস্টমার বসানোর কথা থাকলেও অনেকেই সম্পূর্ণ আসনে কাস্টমার বসিয়ে খাবার পরিবেশন করছেন।  আগে আমরা এ বিষয় দেখলে জরিমানা কম করতাম।  এখন সর্বোচ্চ জরিমানা করা হবে।  কোনো রেস্টুরেন্টে দ্বিতীয়বার জরিমানার মুখোমুখি হলে ওই রেস্টুরেন্ট সিলগালা করা হবে’।
অনুষ্ঠানে জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বিসহ জেলা করোনা নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ