মূল অনুষ্ঠান স্থগিত, ভিন্ন আঙ্গিকে হচ্ছে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপি করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে মুজিববর্ষের মূল অনুষ্ঠান স্থগিত করে তা ভিন্ন আঙ্গিকে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। ১৭ মার্চ মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটিও ভিন্ন আঙ্গিকে হবে বলে তিনি জানান। জনসমাগম হবে এমন অনুষ্ঠান নিরুৎসাহিত করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় গণভবনে মুজিববর্ষ উদ্যাপনে গঠিত দুই কমিটির সঙ্গে বৈঠকের পর এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ব্যাপক জনসমাগম হয় এমন অনুষ্ঠান আমরা নিরুৎসাহিত করবো। জনস্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ১৭ মার্চের অনুষ্ঠান কিভাবে হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
সূত্র জানায়, গণভবনের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হয়। জনসমাগম নিরুৎসাহিত এবং জনগণের মঙ্গলের কথা বিবেচনা করে যেভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়, সেভাবে অনুষ্ঠান পরিচালনা করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোতে পরিস্থিতি অনুযায়ী অনুষ্ঠান করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। সূত্র জানায়, কোনো স্থানে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান করা সম্ভব হলে মিশনগুলো তা করবে, সম্ভব না হলে করবে না। এছাড়া অনেক দেশ জনসমাগম নিষিদ্ধ করেছে। সেসব দেশে অনুষ্ঠান করার প্রয়োজন নেই বলে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত জনসমাগম হতে পারে, এমন অনুষ্ঠানকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
এদিকে প্রায় এক’শ দেশে ছড়িয়ে পড়ার পর বাংলাদেশেও নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঘটায় মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান কাটছাঁট করা হয়েছে। আগামি ১৭ মার্চ প্যারেড গ্রাউন্ডের মূল অনুষ্ঠান স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি। সেদিন ছোট আকারে সীমিত পরিসরে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছেন কমিটির সদস্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
গতকাল রবিবার বিকালে বাংলাদেশে তিনজন কভিড-১৯ রোগী ধরা পড়ার কথা আইইডিসিআর জানানোর পর রাতে বৈঠকে বসে জাতীয় কমিটি। সেখানেই এই সিদ্ধান্ত হয়। কামাল নাসের বলেন, ‘১৭ মার্চের প্রোগ্রাম আপাতত স্থগিত। তা পরে করা হবে’।
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ১৭ মার্চ জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনে মুজিববর্ষ উদ্বোধনের মূল অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। তাতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশাপাশি বিদেশি অতিথিদেরও যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কামাল চৌধুরী বলেন, ‘বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে অনুষ্ঠান পুনর্বিন্যাস করা হচ্ছে। ব্যাপক জনসমাগম এড়িয়ে উদ্যাপন করা হবে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান। ছোট আকারে সীমিত পরিসরে আয়োজন করা হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সীমিত আকারে আয়োজন করা হবে’।
১৭ মার্চ সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা শহর ও বিভিন্ন স্থানে ৩১ বার তোপধ্বনি, সব সরকারি, বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরুর কথা। ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন, টুঙ্গীপাড়ায় জাতীয় শিশু দিবসের অনুষ্ঠানের পাশাপাশি দেশব্যাপি বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা আয়োজন করা হবে।
এদিন জেলা ও উপজেলায় বিভিন্ন দপ্তর, সংস্থা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে জন্মশতবার্ষিকীর উদ্বোধন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। এরপর বছর ধরে নানা অনুষ্ঠানমালার মধ্য দিয়ে মুজিববর্ষ উদ্যাপনের কথা রয়েছে।

ডিসি/এসআইকে/এসজেপি