করোনা : সীতাকুণ্ডে মায়ের মৃত্যুর ৫ দিন পর মেয়ের মৃত্যুতে আতঙ্ক

এম কে মনির, বিশেষ প্রতিনিধি (উত্তর) >>>
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সর্দি-কাশি ও জ্বরের উপসর্গ নিয়ে বৃদ্ধা মায়ের মৃত্যুর পাঁচ দিন পর তার মেয়েরও মৃত্যু হয়েছে। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন না।
গত মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) রাতে স্থানীয় প্রশাসন নিহত ওই নারীর পরিবারের সদস্যদের ‘সামাজিক দূরত্ব’ বজায় রাখতে বলায় এলাকাবাসীর মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। তবে ৫৫ বছর বয়সী ওই নারীর মরদেহ গ্রহণকারী হাসপাতালের চিকিৎসকদের ধারণা, ‘হৃদরোগে’ তার মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, নিহত ওই নারীর মা (৭৫) পাঁচ দিন আগে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগে মারা গেছেন। তিনি হাসপাতালে থাকাকালে মেয়ে তারা দেখাশোনা করেছিলেন। এর পাঁচ দিন পরেই তার মৃত্যু হওয়া এলাকাবাসীকে উদ্বিগ্ন করেছে।
স্বজনেরা জানিয়েছেন, নিহত ওই নারীর সর্দি-কাশি ও জ্বর ছিল। এ অবস্থায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।
ওই নারীর দেবর বলেন, ভাবি ছিলেন একই উপজেলার আরেক ইউনিয়নে বাবার বাড়িতে। সপ্তাহখানেক আগে ভাবির মা মারা গেছেন বার্ধক্যজনিত কারণে। তার জ্বর, সর্দি ও কাশি ছিল। মাকে সেবা করতেন ভাবি। সেখানে গিয়ে তিনি অসুস্থ হন। তারও জ্বর, সর্দি ও কাশি হয়। মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) গুরুতর অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ভর্তি করেনি। সন্ধ্যায় বাবার বাড়িতে না নিয়ে তাকে নিজ বাড়িতে নেয়া হয়। বাড়িতে আনার পর তার মৃত্যু হয়।
সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নুর উদ্দীন বলেন, ওই নারী হার্টের রোগী ছিলেন। তার মায়ের শ্বাসকষ্ট ছিল। মাকে নিয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন অনেকদিন। মায়ের সেবা করতে গিয়ে সম্ভবত তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার মা করোনার রোগী ছিলেন না।
সীতাকুণ্ড পৌর কাউন্সিলর হারাধন চৌধুরী বাবু বলেন, প্রথমে তাকে বলা হলো- ওই নারী সর্দি, কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। পরে আবার জানানো হলো স্ট্রোক করে মারা গেছেন। মরদেহ দাফন করার জন্য কবরস্থানে নেওয়া হয়। আমি সেখানে যাচ্ছি- এমন খবর শুনে কালো রঙের ব্যক্তিগত গাড়িতে করে মরদেহ অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়। আমি ফিরে আসার পর আবার অ্যাম্বুলেন্সযোগে মরদেহটি আনা হয়। বুধবার (২৫ মার্চ) সকালে আবার দাফনের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন রায় বলেন, আমি শুনেছি ওই নারী জ্বর, সর্দি, কাশিতে ভুগে মারা গেছেন। তাই তার স্বজনদের ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে। যেহেতু ওই নারীর করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হয়নি, তাই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে কি না, তা নিশ্চিত করে বলা যাবে না।

ডিসি/এসআইকে/এমকেএম