করোনা সতর্কতা : অকারণে বাইরে, চট্টগ্রামে ৭ জনকে জরিমানা

নগর প্রতিবেদক >>>
কোনো কারণ না থাকা সত্বেও বাড়ির বাইরে অহেতুক বের হওয়ায় চট্টগ্রামে জরিমানা গুনলেন ৭ জন। শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এই জরিমানা করা হয়। বন্দর নগরের চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ, খুলশী এবং বাকলিয়া থানা এলাকায় এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সরকারি নির্দেশনা প্রতিপালন করতে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, নগরের চান্দগাঁও থানার সামনে ২ জনকে, জিইসি মোড়ে ২ জনকে এবং লালখান বাজার মোড়ে ৩ জনকে জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সরকারি নির্দেশনা না মেনে বাসা ছেড়ে সড়কে মোটরসাইকেল এবং প্রাইভেটকার নিয়ে বের হয়েছিলেন তারা। যৌথ বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদে বের হওয়ার কোনো যৌক্তিক কারণ দেখাতে না পারায় তাদের মোট ৯ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
এদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ, খুলশী এবং বাকলিয়া থানা এলাকায় পরিচালিত অভিযানে নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম।
নগরের চকবাজার, বায়েজিদ, সদরঘাট, এবং কোতোয়ালী থানা এলাকায় পরিচালিত অভিযানে নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানা। অভিযানে তার সঙ্গে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সদস্যরা অংশ নেন। ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানা জানান, অভিযানে সম্প্রতি বিদেশফেরতদের হোম কোয়ারেন্টিন পর্যালোচনা, লোকজনকে ঘরের বাইরে না আসার আহ্বান জানিয়েছি আমরা। এছাড়া আন্দরকিল্লার হাজারী গলি এলাকায় হোটেল খোলা রেখে খাবার পরিবেশনের দায়ে ২টি হোটেলকে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ৫টি অস্থায়ী ফুলের দোকান উচ্ছেদ করা হয়।
নগরের ডবলমুরিং, বন্দর এবং ইপিজেড থানায় পরিচালিত অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুল হাসান। অভিযানে তার সঙ্গে ক্যাপ্টেন তাজের অধীনে সেনাবাহিনীর সদস্যরা অংশ নেন।
ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুল হাসান জানান, সম্প্রতি বিদেশফেরতদের হোম কোয়ারেন্টিন পর্যালোচনা, লোকজনকে ঘরের বাইরে না আসার আহ্বানের পাশাপাশি কাটগড় এলাকায় বাড়তি দামে মাংস বিক্রি করায় এক দোকানিকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
নগরের পাহাড়তলী, আকবর শাহ এবং হালিশহর থানা এলাকায় পরিচালিত অভিযানে নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশিক-উর-রহমান। অভিযানে তার সঙ্গে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সদস্যরা অংশ নেন। ম্যাজিস্ট্রেট আশিক-উর-রহমান জানান, লোকজনকে জরিমানার পরিবর্তে করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন করেছি আমরা। বিদেশফেরতদের হোম কোয়ারেন্টিন মানার পরামর্শসহ ওই এলাকার বাসিন্দাদের জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না আসার অনুরোধ জানিয়েছি।
অভিযানে হালিশহর এলাকায় হোটেল খোলা রেখে ভেতরে খাবার পরিবেশনের দায়ে মালিককে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয় বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বদিউল আলম জানান, সম্প্রতি বিদেশফেরতদের হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করার পাশাপাশি লোকজনের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বাজায় রাখতে চট্টগ্রামে প্রশাসন ও সেনাবাহিনী কাজ করছে। তিনি জানান, আগে এক শিফটে ৪ জন ম্যাজিস্ট্রেট সারাদিন নগরে দায়িত্ব পালন করলেও অভিযানের ব্যপ্তি বাড়াতে এখন দুই শিফটে ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতিদিন অভিযান পরিচালনা করছেন। সরকার ছুটি দিয়েছে লোকজনকে ঘরে থাকার জন্য। কেউ সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে অপ্রয়োজনে বাইরে ঘোরাঘুরি করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুক্রবারের অভিযানেও ১১টি মামলায় ২০ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

ডিসি/এসআইকে/ইউএস