আনোয়ারার জননেতারা উধাও

জাহাঙ্গীর আলম, আনোয়ারা প্রতিনিধি >>>
বৈশ্বিক মাহামারি করোনাভাইরাসের কারণে দেশ লকডাউনে, লোকডাউনে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলাও। লকডাউনের পর থেকেই কার্যত কর্মহীন হয়ে পড়েছেন আনোয়ারা উপজেলার লাখো মানুষ। গত অর্ধমাস ধরে সারা দেশের সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে আনোয়ারা। এর ফলে ঠেলাগাড়িচালক, রিকশা-অটোরিকশা, বাস ও ট্রাক চালক থেকে শুরু করে পরিবহন শ্রমিক, দিনমজুর, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ সব শ্রেণির মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন। মধ্যবিত্তরাও এক ধরণের অসহায় জীবনযাপন করছেন। ইতোমধ্যে সরকারের পাশাপাশি স্থানীয় সংসদ সদস্য ভূমি মন্ত্রী মো. সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ তাঁর ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ৫ হাজার মানুষের জন্য খাদ্য সামগ্রী নিয়ে ঘুরে গেছেন আনোয়ারার বিভিন্ন ইউনিয়নে। মাঠে সরব আছেন স্থানীয় উপজেলা, ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরাও। কিন্তু এই সংকটময় মুহুর্তে আনোয়ারাবাসী পাশে পাচ্ছেন না বিভিন্ন সময় জননেতা পরিচয়ে সরব থাকা রাজনীতিবিদদের। এসব কথিত জননেতা কার্যত উধাও হয়ে আছেন।
উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনোয়ারা-কর্ণফুলী আসনে আওয়ামীলীগ ছাড়াও বিএনপি, জাতীয় পার্টি, বিএনএফ, ইসলামী ফ্রন্ট, এলডিপি, ইসলামিক ফ্রন্ট, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন, ইসলামী ঐক্যজোটসহ স্বতন্ত্রভাবে প্রায় ডজনখানেক নেতা প্রার্থী হন। এছাড়া উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও অর্ধশতেরও বেশি প্রার্থী মানুষের ঘরে ঘরে ছুটে বেড়িয়েছেন। কিন্তু মানুষের এই সংকটময় মুহুর্তে সেই জননেতাদের কোনো হদিসও পাওয়া যাচ্ছে না।
স্থানীয় রিকশা চালক আবু ছৈয়দ জান, নির্বাচন আসলে যারা কোটি টাকা খরচ করতে পারে মানুষের এই বিপদে তাদের দেখা মেলেনি। ভূমিমন্ত্রীর দেয়া সামান্য চাউল-ডাল ছাড়া কিছুই পাইনি। এ গুলা দিয়ে আর কয়দিন চলবে!
জানা যায়, করোনাভাইরাসের ভয়ে এসব নেতারা বিভিন্ন অজুহাতে হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন। প্রায় নেতা মুঠো ফোন পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছেন। এমনকি অনেকে দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথেও যোগাযোগ বন্ধ রেখেছেন। এছাড়া কিছু নেতা শুধু নির্বাচন আসলেই এলাকায় দেখা যায়। নির্বাচনের পরে উধাও হয়ে যান।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও আনোয়ারা উপজেরা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. শাহজাহান চৌধুরী বলেন, এই মুহুর্তে দলীয় কোনো ত্রাণ বিতরণের কর্মসূচি না থাকলেও বিভিন্ন ইউনিয়নে আমাদের দলীয় নেতা-কর্মীরা কেউ কেউ ব্যক্তিগতভাবে সহায়তা দিচ্ছে। আমাদের নেতা সরোয়ার জামাল নিজাম কয়েকদিনের মধ্যে ঢাকা থেকে আসলে আমরা ব্যাপক আকারে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে মানুষের কাছে যাব। পবিত্র মাহে রমজানেও আমাদের সহায়তা থাকবে।
আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক এমএ মান্নান চৌধুরী বলেন, কে কি দিল সেটা দেখার বিষয় এখন নয়, আমাদের নেতা ভূমি মন্ত্রী আলহাজ্ব সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি বলেছেন, আনোয়ারা-কর্ণফুলীর কোনো মানুষ যেন খাদ্যাভাবে কষ্ট না পায়। আমরা ইতোমধ্যে আনোয়ারায় ৫ হাজার পরিবারকে ভূমি মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহায়তায় খাবার সামগ্রী মানুষের ঘরে ঘরে পাঠিয়ে দিয়েছি। আগামিতেও এ সহায়তা অব্যাহত থাকবে।

ডিসি/এসআইকে/জেএ