চট্টগ্রামে আজই শেষ হচ্ছে টেস্ট কিট, করোনা পরীক্ষা নিয়ে সংশয়

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
গত ২৬ মার্চ চট্টগ্রামের বিশেষায়িত একমাত্র হাসপাতাল বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) কে করোনা শনাক্তকরণ কীট প্রদান করা হয়।  সে দিনই শুরু হয় কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ পরীক্ষা।  এরপর গত ১৮ দিনে ৯০৮ নমুনা পরীক্ষায় মোট ৩০ জনকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়।  এদের মধ্যে ২৭ জন চট্টগ্রাম নগর ও উপজেলাগুলোর বাসিন্দা।  প্রথমবার পাঠানো সেই করোনী টেস্ট কীট শেষ হতে যাচ্ছে আজ (১৫ এপ্রিল)। আজকের মধ্যে আরো টেস্ট কীট না পেলে বৃহত্তর চট্টগ্রাম বিভাগে মহামারি করোনা টেস্ট করা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।  এর ফলে আক্রান্ত করোনা রোগীদের দ্বারা সংক্রমণের মাত্রা আরো বেড়ে যাওয়ারও সংশয় দেখা দিয়েছে।
বিআইটিআইডি’র একাধিক সূত্র জানিয়েছে, নভেল করোনা করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য বন্দর নগরের প্রবেশদ্বার ফৌজদারহাটে অবস্থিত বিআইটিআইডিতে করোনা টেস্ট কীট এসেছে মোট ৪ ক্যাটাগরির।  এর মধ্যে অনুমোদনহীন সাড়ে ৫০০ টেস্টিং কীট বাতিল করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে (আইইডিসিআর) বিষয়টি জানালে গতকাল মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) কিছু কীট পাঠানো হয়।  কিন্তু সেগুলোর এক্সটেনশন টেস্ট কীট পাঠানো হয়নি। এ অবস্থায় নতুন টেস্ট কীট দিয়ে করোনা পরীক্ষা সম্ভব নয় চট্টগ্রামে।
প্রতিষ্ঠানটির (বিআইটিআইডি) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক শাকিল আহমদ জানান, ‘আমাদের হাতে থাকা টেস্ট কীট আজ (বুধবার) শেষ হচ্ছে। এখন আমার হাতে যে কয়টা খুচরো টেস্ট কিট আছে তা দিয়েই কাজ চালাচ্ছি। আর হয়তো ১০০ বা ১৬০ টির মতো পরীক্ষা সম্ভব। এরপর আর কাজ করা সম্ভব হবে না। আমরা এখন পর্যন্ত ১ হাজার কিট পেয়েছি। এর মধ্যে প্রথম ১০০ টেস্ট কীট আমরা ফ্রান্সের একটি দাতব্য সংস্থা থেকে সংগ্রহ করেছি, ওগুলো অত্যন্ত ভালোমানের। এরপর ঢাকার আইইডিসিআর আমাদের আরও ১০০টি টেস্ট কীট দেয়। সেগুলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাপ্লাই করা। সেগুলোও ভালোমানের। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনুমতি ছাড়াই বিভিন্ন পর্যায়ে আমদানি করা ৫৫০টি র‍্যাপিড টেস্টিং কীটও রয়েছে। তবে এসব কীটের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায়, সেগুলো দিয়ে পরীক্ষা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি’।
বিআইটিআইডি’র ল্যাব প্রধান শাকিল আহমেদ আরো জানান, ‘আইইডিসিআরকে জানানোর পর মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) কিছু টেস্ট কীট পাঠানো হয়েছে, কিন্তু সেগুলোর এক্সটেনশন কীট পাঠানো হয়নি। আসলে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করতে হয় তিন স্তরে। এখন এক্সটেনশন কীট না থাকলে কিভাবে পরীক্ষা করব? একই কাজের একটা অংশ দেবে, অপর অংশ দেবে না, তাহলে কাজ কিভাবে করব বলেন?’
বিআইটিআইডি থেকে গত ৩ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত মোট ৯০৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় কোভিড- ১৯ সনাক্ত হয়েছেন নোয়াখালীর ১ জন, লক্ষ্মীপুর জেলার ২ জন এবং চট্টগ্রাম জেলার ২৭ জন। সময় মতো টেস্ট কীট না পেলে চট্টগ্রামে করোনার ভয়াবহতা বেড়ে গেলেও পরীক্ষার অভাবে চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পড়বে। তাই আজকের মধ্যেই প্রয়োজনীয় সংখ্যক টেস্ট কীট না পেলে করোনা টেস্ট করা সম্ভব হবে না।

ডিসি/এসআইকে/এসএজে