দক্ষিণ জেলা প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা এলাকায় এস আলম গ্রুপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষে ৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২৩ জন।
শনিবার (১৭ এপ্রিল) সকালে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বেতন ভাতা নিয়ে দাবি-দাওয়ার জেরে এ সংঘর্ষ হয়। নিহতরা হলেন আহমদ রেজা (১৮), রনি হোসেন (২২), শুভ (২৪), মো. রাহাত (২৪) ও রায়হান (২৫)। তবে, স্থানীয় একাধিক সূত্র দাবি করেছে, বাংলাদেশি শ্রমিকদের ইফতার, সেহেরি করার সময় দিতে চায় না চায়না শ্রমিক-কর্মকর্তারা। তার মধ্যে আছে প্রতিশ্রুত বেতন না দেয়ার অভিযোগ। এই বিষয়ে গত কয়েকদিন আন্দোলন করে আসছিল বাংলাদেশি শ্রমিকেরা। আজকের মধ্যে দাবি-দাওয়া মেনে নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা না করায় শ্রমিকেরা আন্দোলনে নামলে পুলিশ অতর্কিতভাবে এলোপাতারি গুলি চালাতে থাকে।
এর আগে ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল দুপুরে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীদের দু’পক্ষ ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে চার জন নিহত হন। বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা এলাকায় দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপন করতে যাচ্ছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের বিরোধিতা করে এর আগেও তুমুল আন্দোলনে নেমেছিলেন উপজেলাবাসী। সেই আন্দোলনেও বেশ কয়েকজন নিহত হন।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমি জানতে পেরেছি, বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিকরা বেতন ভাতা নিয়ে বিক্ষোভ করেন। ওই বিক্ষোভের জের ধরে সংঘর্ষে ৫ জন নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে স্থানীয় গ্রামবাসীরাও অংশ নিয়েছেন। নিহতরা শ্রমিক নাকি গ্রামবাসী, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি’।
স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, সংঘর্ষে আরও অন্তত ২৩ জন আহত হয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। হতাহতের হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার জানান, ‘বাঁশখালীর ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৪ জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাদের অধিকাংশের শরীরে গুলির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ একজনকে হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেছেন। তার নাম রায়হান। তিনি নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার আদর্শ গ্রামের আবদুল মতিনের ছেলে’।
ডিসি/এসআইকে/এসইউ