আ’লীগের তহবিল ৫০ কোটি টাকার

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
গতবছর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ২১ কোটি টাকা আয় করেছে।  ওই অর্থের সঙ্গে আগের উদ্বৃত্ত মিলে দলটির তহবিলে ৫০ কোটি টাকার বেশি জমা রয়েছে।  বুধবার (২৯ জুলাই) দুপুরে আগারগাঁও নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া বার্ষিক আয়-ব্যয় ও লেনদেন প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীরের কাছে আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ ও দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
প্রতি বছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আগের পঞ্জিকা বছরের ‘অডিট রিপোর্ট’ জমা দেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে।  নির্ধারিত সময়ের দু’দিন আগে দলটি এ প্রতিবেদন জমা দিল।
পরে প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সাংবাদিকদের জানান, ২০১৯ সালের শেষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সর্ব মোট অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫০ কোটি ৩৭ লাখ ৪৩ হাজার ৫৯৩ টাকা।  এর মধ্যে নগদ ৫ লাখ ১৩ হাজার ৭১৭ টাকা এবং ব্যাংকে ৫০ কোটি ৩২ লাখ ২৯ হাজার ৮৭৬ টাকা, যা ৪০ কোটি টাকার এফডিআর হিসাবে আছে।  এই পঞ্জিকা বর্ষে আওয়ামী লীগের আয় শতকরা ৩৫ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
২০১৯ সালের আয়-ব্যয়
একাদশ সংসদ নির্বাচনের বছর ২০১৮ সালের তুলনায় গেল বছর আওয়ামী লীগের আয় কিছুটা কমেছে।  সে বছর আয় হয়েছিল ২৪ কোটি টাকা; ২০১৯ সালের আয় ২১ কোটি টাকা। আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দল জানায়, ২০১৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আয় হয়েছে সর্ব মোট ২১ কোটি ২ লাখ ৪১ হাজার ৩৩০ টাকা।
উল্লেখযোগ্য আয়ের খাত
মনোনয়ন ফরম বিক্রি বাবদ ১২ কোটি ৩২ লাখ ৩০ হাজার টাকা, সম্মেলন বাবদ প্রাপ্ত ৩ কোটি ২ লাখ ৫৫ হাজার ৮০০ টাকা, ব্যাংক লভ্যাংশ বাবদ ২ কোটি ৩৩ লাখ ৭৫ হাজার ২২৩ টাকা, সংসদ সদস্যদের প্রদেয় চাঁদা বাবদ ১ কোটি ৭ লাখ ৬৪ হাজার টাকা।  এছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের মাসিক চাঁদা, জেলাভিত্তিক প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ চাঁদা ও প্রাথমিক সদস্য ফরম বিক্রি, কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের হলভাড়া, পত্রিকা প্রকাশনা ও বিজ্ঞাপন (উত্তরণ) এবং পুস্তক বিক্রিসহ অন্যান্য খাত থেকে বাকি আয় হয়েছে।
২০১৯ সালে আওয়ামী লীগের সর্বমোট ব্যয় হয়েছে, ৮ কোটি ২১ লাখ ১ হাজার ৫৭৫ টাকা।  ব্যয়ের উল্ল্যেখযোগ্য খাতগুলো হচ্ছে- জাতীয় সম্মেলন বাবদ ৩ কোটি ৪৩ লাখ ১৪ হাজার ৮০০ টাকা, কর্মচারীদের বেতন, বোনাস, আপ্যায়ন ও অন্যান্য খরচ বাবদ ১ কোটি ১৩ লাখ ৭৭ হাজার ৭০০ টাকা, বিভিন্ন অনুষ্ঠান বাবদ ব্যয় ১ কোটি ১৮ লাখ ১৮ হাজার ৮৬৫ টাকা, সভাপতির কার্যালয়ের ভাড়া বাবদ ৫৫ লাখ টাকা।
তহবিল
২০১৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তহবিলে নগদ ছিল ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৯৬৮ টাকা।  সে সময় ব্যাংক হিসাবে জমা ছিল ৩৭ কোটি ৫২ লাখ ৬৪ হাজার ৮৭০ টাকা।  ২০১৮ সালে সর্বমোট অর্থ ছিল ৩৭ কোটি ৫৬ লাখ ৩ হাজার ৮৩৮ টাকা।  ২০১৯ সালে যোগ হলো ১৩ কোটি টাকারও বেশি।  সব মিলিয়ে তহবিল এখন ৫০ কোটি টাকার বেশি ক্ষমতাসীন দলের।
২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর কোন খাত থেকে কত টাকা আয় হয়েছে, কত টাকা ব্যয় হয়েছে, বিল-ভাউচারসহ তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য কমিশনের নির্ধারিত একটি ছকে জমা দিতে হবে।  নিবন্ধিত ৪১টি দলের মধ্যে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ অন্তত ৭টি দল ইতোমধ্যে কমিশনে অডিট রিপোর্ট জমা দিয়েছে বলে জানান ইসি কর্মকর্তা।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ