খালেদা জিয়া গৃহবন্দি: ফখরুল

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ‘গৃহবন্দি’ অবস্থায় আছেন বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।  তিনি বলেন, ‘তাকে মুক্ত করতে এবং দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে আন্দোলনের বিকল্প নাই’।  মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) দলের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।  ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভার প্রধান অতিথি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বক্তব্য রাখেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্রের জন্যই দেশনেত্রী আজকে গৃহবন্দি অবস্থায় ও কারাবন্দি হয়ে আছেন।  তার যে ত্যাগ গণতন্ত্রের জন্য, বাংলাদেশের মানু্ষের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য, এটা নিঃসন্দেহ অপরিসীম একটা ত্যাগ।  আজকে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমাদের বড় প্রতিজ্ঞা হোক-যেকোনো মূল্যে আমাদের চ্যালেঞ্জ গণতন্ত্রকে উদ্ধার করা, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা।  তাকে মুক্ত না করলে গণতন্ত্র মুক্ত হবে না।  এটা হচ্ছে জরুরি কথা এবং সেটা আমাদের অবশ্যই অত্যন্ত যথাযথ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সফল করতে হবে’।
আন্দোলনের জন্য দল ও অঙ্গসংগঠনগুলোকে সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।  তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে যে পরিস্থিতি ছিল এখনকার পরিস্থিতি এক নয়।  ১৯৭৫ সালে যে পরিস্থিতি ছিল, এখনকার পরিস্থিতি এক নয়।  আজকে ২০২০ সালের বিশ্ব রাজনীতির প্রেক্ষাপটকে অনুধাবন করে এবং যোগ্য কৌশল উদ্ভাবন করেই আমাদের গণতান্ত্রিক রাজনীতিকে প্রতিষ্ঠা করবার জন্য গণতান্ত্রিকভাবেই এগিয়ে যেতে হবে।  অত্যন্ত সত্য কথা আন্দোলনের কোনো বিকল্প নাই।  কিন্তু সেই আন্দোলন কীভাবে ফলপ্রসূ হবে, সেই বিষয়টা আমাদের দেখতে হবে, বুঝতে হবে এবং তার জন্য আলোচনা করতে হবে।  এর মধ্য দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে’।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন,‘বর্তমান বাংলাদেশ দুইটা দুর্যোগের মধ্যে আছে।  একটা হচ্ছে আওয়ামী দুর্যোগ, আরেকটা হচ্ছে করোনা দুর্যোগ।  এই দুই দুর্যোগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ অতিক্রম করছে।  সেজন্য দেশে রাজনীতি নেই, গণতন্ত্র নেই, অর্থনীতি সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত।  এ অবস্থা পরিবর্তন করার দায়িত্বটা বিএনপির’।
স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া একটা অহেতুক বানোয়াট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন।  দুই বছর তাকে কারাগারে রেখেছিল।  এখন সাজা স্থগিত রেখে তাকে বাড়িতে রেখেছে।  এটা কিন্তু অন্তরীণ থাকার মতোই।  তিনি সম্পূর্ণভাবে মুক্ত নন’।
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে দেখা যায়- বিলুপ্তি ঘটে।  এখানে দেখা যায় বিলুপ্তি ঘটে না।  কোনো কর্তৃত্ববাদী ও ফ্যাসিবাদী সরকার কখনোই বিনা চ্যালেঞ্জে বিনা আন্দোলনে যায় না, আওয়ামী লীগও যাবে না।  এদের তাড়ানোর জন্য এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমাদের শপথ হোক- আমরা যেকোনো মূল্যে নেতার নির্দেশে এমন কিছু করবো, যেভাবে আমরা নব্বইয়ে এবং পরবর্তী সময়ে আন্দোলনে আমরা ফ্যাসিবাদী সরকারকে তাড়িয়েছিলাম।  এই সরকারকেও ইনশআল্লাহ আমরা তাড়াবো’।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরউদ্দীন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, মহানগর দক্ষিণের নেতা হাবিব উন নবী খান সোহেল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ