খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে বিএনপি’র সংগ্রামে নেতৃত্ব দিবেন : ফখরুল

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
বেগম খালেদা জিয়া দ্রুত সুস্থ হয়ে বিএনপি’র সংগ্রামে নেতৃত্ব দেবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।  তিনি বলেন, হতাশ হবেননা, সংগ্রাম লড়াই করেই এগুতে হবে।  দানব সরকার সবকিছু তছনছ করে দিচ্ছে।  পরিকল্পিত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এগুতে হবে।
শনিবার (৫ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি আয়োজিত বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে ‘বৈশ্বিক দুর্যোগ: ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
পরিবেশ রক্ষায় আমাদের নেতাদের বিশেষ করে রাজনৈতিক নেতাদের এবং সরকার দলীয়দের নেতাদের, বিশ্ব নেতাদের কমিটমেন্ট প্রয়োজন উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়।  জনগণের সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই, জনগণের প্রতি তাদের দায়িত্বও নেই।  দুদিন আগে একটা বাজেট দিয়েছে।  সে বাজেটে দেখেন তো পরিবেশ প্রকৃতির ওপর কত টাকা বরাদ্দ করা আছে।  মজার ব্যাপার হচ্ছে, ক্লাইমেট চেঞ্জের ওপর বিশ্ব ব্যাংকের একটা ফান্ড আছে।  সে ফান্ড থেকে গত কয়েক বছর ধরে তারা ৭ শত কোটি টাকা ফান্ডও পেয়েছে।  তার অর্ধেক খেয়ে ফেলেছে, আর অর্ধেক ফেরত দিয়েছে।  সরকারের কর্মকাণ্ডের মূল লক্ষ্য ছিল লুট করা।  লুট করা ছাড়া তাদের আর কোনো কর্মকান্ড আমি দেখতে পাই না।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার বড় বড় মেগা প্রজেক্ট করছে।  এই মেগা প্রজেক্ট গুলো কেন?  বারবার করে বলছি করোনা থেকে মানুষকে বাঁচানোর জন্য নগদ টাকা সরবরাহ করতে।  সেদিকে সরকারের কোনো লক্ষ্য নেই।  তারা এই পারপাসে ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে।  মেগা প্রজেক্ট এর জন্য এবারও দিয়েছে ৭৫ হাজার কোটি টাকা।  যেটা এই মুহূর্তে কোনো প্রয়োজন নেই।  সবচেয়ে বড় প্রয়োজন মানুষকে বাঁচানোর।
তিনি বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে পৃথিবী ধ্বংস হচ্ছে।  পৃথিবী অতি দ্রুত তার ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে।  কারণ উন্নত দেশগুলো তাদের স্বার্থে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভলপমেন্ট করেছে।  কার্বনের কারণেও ওজন মন্ডল ফুটো হয়ে গেছে।  যার ফলে পৃথিবীর উষ্ণতা সৃষ্টি হয়েছে।  এই উষ্ণতার ফলে পৃথিবীর সকল ইকোসিস্টেম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।  এখানে বিশ্ব নেতাদের একটা কমিটমেন্ট প্রয়োজন।  সে কমিটমেন্ট নিয়ে পৃথিবীকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বেগম জিয়া পরিবেশের জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন তা ইকো ব্যালেন্স রক্ষা করার জন্য।  এই যে উপকূলের সবুজ বেষ্টনী, সে সময় লক্ষ লক্ষ গাছ লাগানো হয়েছিল।  রাস্তার ধারে গাছ লাগাতে সামাজিক বনায়ন হবে।  তাই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।  জিয়াউর রহমান সাহেব যে খাল খনন কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন তা তিনটে দিক ছিল।  একটি হচ্ছে প্রাকৃতিক পানি সংরক্ষণ করা ও সেখান থেকে ইরিগেশন করা, মাছের চাষ করা এবং খালের দুই ধারে বাগান তৈরি করা
তিনি বলেন, মানুষের অস্তিত্বের কারণে মানুষের সাথে প্রকৃতির দ্বন্দ্ব।  মানুষ বেঁচে থাকার প্রয়োজনে জীবিকার প্রয়োজনে সভ্যতার প্রয়োজনে বন নষ্ট করেছে, নদী নষ্ট করেছে, পানি নষ্ট করেছে, বড় বড় কংক্রিটের বস্তি গড়ে তুলেছে, আমাদের দেশের রয়েল বেঙ্গল টাইগারকে হঠাতে হঠাতে এক বারে পিছু হঠিয়ে ফেলেছে।  আগে যে পাখি গুলো আসতো, সেগুলো এখন আর আসতে পারে না।  জীববৈচিত্র্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।  যার ফলে প্রকৃতি তার প্রতিশোধ নিতে শুরু করছে।  আমরা কিন্তু প্রতিনিয়ত এই প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করছি।  আমরা চাঁদে যাচ্ছে মঙ্গল গ্রহে যাচ্ছি।
ফখরুল আরও বলেন, সাসটেইনেবল এনভাইরমেন্ট এন্ড ইকোনমি, এটা যদি আমাদের তৈরি করতে হয়- কিভাবে নদী, পানি, মাটি এবং তার বর্জ্য কিভাবে ম্যানেজমেন্ট করব এটার উপর নির্ভর করবে আমি কতটা সাসটেইনেবল এনভাইরমেন্ট এবং ইকোনমি করতে পারব।
স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, জবাবদিহিমূলক সরকার না হলে পরিবেশ সংরক্ষণে ভূমিকা রাখা সম্ভব নয়। দুর্নীতিতে সূচক অনেক উপরে।
বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, মূর্খের শাসন চলছে এই অঞ্চলে।  বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ে সচেতন নন একনায়ক বিশ্বনেতারা।  জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য অনুদান পেলেও তা জনগণের কাছে পৌঁছায় না।  গণতান্ত্রিক সরকার নেই বলেই পরিবেশ সংরক্ষণে কোনো ভূমিকা রাখছেনা।  দলে ও দেশে গণতান্ত্রিক আচরণ থাকতে হবে।  তুমুল গণআন্দোলনে ন্যায়শাসন প্রতিষ্ঠা হলেই পরিবেশ বিপর্যয় রক্ষা করা সম্ভব।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সহ-সম্পাদক কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপু, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন প্রমুখ।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ