জয়ের বিষয়ে দৃঢ় প্রত্যয়ী আইভী-তৈমুর

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পুরোদমে জমে উঠেছে ভোটের প্রচারণা। আগামি ১৬ জানুয়ারি এ সিটিতে ভোটগ্রহণের কথা রয়েছে। দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ বাড়ছে। কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ছুটে চলেছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। চাইছেন নিজ নিজ প্রতীকে ভোট। দিচ্ছেন উন্নয়নের আশ্বাস।
ভোটের আগে প্রচারণার মাঠেও সরব দুই হেভিওয়েট মেয়র প্রার্থী।  আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) সকাল থেকে সিটির ১১ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারণা চালান।  তিনি হাজীগঞ্জ, এসিআই, তল্লা, কিলারপুলসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণা চালিয়ে নৌকায় ভোট চান।  এ সময় নারী ভোটারা তাকে ফুল ছিটিয়ে বরণ করেন।
এদিকে, স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার শুক্রবার সকাল থেকে সিটি কর্পোরেশনের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারণা চালান।  এ সময় কর্মী-সমর্থকরা তার সঙ্গে ছিলেন।
প্রচারণাকালে সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ‘আমি যেখানেই যাচ্ছি জনগণের সাড়া পাচ্ছি।  আমার পাশে লোকজন ছুটে আসছে।  আমি জয়ের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী। ইনশাল্লাহ আমিই জিতবো’।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর অভিযোগ প্রসঙ্গে আইভী বলেন, ‘সকালে আমরা মাইকিং করছি না।  বেলা ২টা থেকে করছি।  তিনটি ওয়ার্ডে মিলে একটি মাইকিং করা হচ্ছে।  আজকে থেকে বাড়ানো হবে।  প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর (তৈমুরের) মাইকিং চলছে বেশি।  পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে লাভ নেই।  জনতা আমার পাশে আছে।  কারণ নারায়ণগঞ্জের মা-বোনরা দীর্ঘদিন ধরে আমাকে দেখেছে।  নৌকাই জয়যুক্ত হবে, এ জন্যই উনি (তৈমুর আলম) দিশেহারা হয়ে অনেক কিছু বলছেন।  নারায়ণগঞ্জে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।  ওই প্রার্থীও (তৈমুর) যেখানে যাচ্ছেন সেখানে লোকসমাগম হচ্ছে।  কোথাও তো কোনো জায়গায় বাধা দেওয়া হয়নি। আমি আমার প্রচারণা চালাচ্ছি। তৈমুর কাকা তার প্রচারণা চালাচ্ছেন।  কোনোরকম অসন্তোষ বা বিঘ্নতা দেখা দেয়নি’।
তিনি আরও বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনি চরিত্রটা হলো নির্বাচনের আগে ও পরে সবকিছু মিলে একটি উৎসবমুখর পরিবেশ থাকে। সেটা ধরে রাখার চেষ্টা করবো। জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ সংগঠনের সব নেতাকর্মীরা আমার সঙ্গে আছেন। আমি যেখানেই যাচ্ছি, সেখানেই আওয়ামী লীগের তৃণমূলসহ সব নেতাকর্মীরা আমার সঙ্গে কাজ করছেন’।
অপরদিকে, স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, ‘আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো। এই বিশ্বাস নিয়ে আমাকে চলতে হবে। আমার বিশ্বাস লোকজন আমাকে ভোট দেবেন। এ সিটিতে সাড়ে পাঁচ লাখের মতো ভোট আছে। ক্যান্ডিডেট হিসেবে আমি সবার ভোট চাই। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তৈমুর আলম খন্দকার জেতার মতো লোক। তিনি বিদেশি সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেছেন। অতএব আমার একটা আত্মবিশ্বাস আছে। কে ভোট দেবেন কে দেবেন না এটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। কেউ ভোট দিলে আপনি বাধা দিতে পারবেন না। আর কেউ না দিলে আমি তাকে জোর করতে পারবো না।  এটা সম্মানিত ভোটারদের ইচ্ছা’।
তিনি বলেন, ‘বিগত ৫০ বছরে আমার কর্ম আছে। আমার কোনো গণবিরোধী ভূমিকা নেই। জনগণ স্থানীয় সরকার নির্বাচন স্থানীয়ভাবেই চিন্তা-ভাবনা করেন।  জাতীয় মার্কায় তারা চিন্তা করেন না। আমি সবার সমর্থন পাচ্ছি। আমার দল একটি ভালো কাজ করে দিয়েছে।  আমাকে নৌকার ভোট পাওয়ার একটি সুযোগ করে দিয়েছে’।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি নির্বাচনের মাঠে সমান সুযোগ পাচ্ছি না।  আমার প্রধান নির্বাচনি এজেন্ট এ টি এম কামালকে দিয়ে আমি আজকে একটা অভিযোগ দিয়েছি।  সেটা হলো রাস্তার মধ্যে তারা বড় বড় তোরণ করেছে।  আমার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছে।  সকাল থেকে তারা মাইকিং শুরু করে’।
এদিকে, নির্বাচনি মাঠে আচরণবিধি নিশ্চিতে ৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ২৭টি ওয়ার্ডে ৯টি টিম মাঠে কাজ করছে। প্রতিদিনই নির্বাচনি আইন ভঙ্গ করায় প্রার্থী ও সমর্থকদের জরিমানার আওতায় আনছেন।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ