নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করে ফেলছে গ্রেফতার কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে : তৈমূর

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলেছেন, ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের ভূমিকা সম্পর্কে আপনাদের অবগত করেছি। নির্বাচন কমিশন শুরু থেকেই আমাকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দেয়নি। আমার কর্মী-সমর্থক-এজেন্ড এমনকি সোমবার আমার প্রধান সমন্বয়ক রবিকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ফলে নির্বাচন করার পরিবেশ নষ্ট করে ফেলছে গ্রেফতার কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে।
গত ১৬ ডিসেম্বর ২০ হাজার নেতা-কর্মীর একটা র‍্যালিতে আমার সভাপতিত্ব করার কথা ছিল। নির্বাচন কমিশনের অনুরোধে আমি সে সমাবেশে যাইনি। কিন্তু আমার বার বার অভিযোগের পরেও সরকারি দল এমপি ও বড় বড় নেতাদের এনে উস্কানিমূলক ও ভয়ভীতি ছড়ানোর মতো কথাবার্তা বলেন। একজন সম্মানিত মেহমান বলেছেন, তৈমূরকে মাঠে নামতে দেওয়া হবে না। আরেকজন সম্মানিত নেতা অতি দায়িত্বশীল তিনি বলেছেন, তৈমূর ঘুঘু দেখেছে ফাঁদ দেখেনি। তিনি ২৪ ঘণ্টায় আমাকে রেজাল্ট দেখানোর কথা বলেছেন। এ ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই আমি ঘুঘু ও ঘুঘুর ফাঁদ দেখা শুরু করেছি। আপনারা জানেন জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি আমার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক। তার হাতে দায়িত্ব ছিল এজেন্ট ও নির্বাচন সংক্রান্ত কাজ পরিচালনা ও সহযোগিতা করা। কালকে যখন আমি জানতে পারলাম রবিকে গ্রেফতার করা হয়েছে তৎক্ষণাৎ এসপি অফিসে যাই। তিনি অফিসে নেই। টেলিফোনে বললাম রবিকে গ্রেফতার করা হয়েছে কেন? তারা বললেন তার নামে ওয়ারেন্ট আছে।
মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) সকালে সদর থানা নির্বাচনী ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তার প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট এ টি এম কামাল উপস্থিত ছিলেন।
তৈমূর বলেন, বিএনপির এমন কোনো নেতা-কর্মী নেই যাদের নামে ওয়ারেন্ট নেই। আমি বললাম যেদিন আমি নমিনেশন ক্রয় করি, জমা দেই এমনকি বাছাই ও প্রতীক বরাদ্দের দিনও আমার সঙ্গে ছিল রবি। আপনি তাকে এতদিন গ্রেফতার করেননি। ঘুঘু দেখানোর জন্য সম্মানিত নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক সাহেব যখন বললেন তারপর থেকেই কেন আপনারা আমাকে ফাঁদ দেখানো শুরু করেছেন। আপনারা কী চান না নারায়ণগঞ্জে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হোক? আপনাদের দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি আমার ওয়ার্ড বিএনপির নেতা মোশাররফ হোসেন জানিয়েছে তার বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি করেছে। মাজহারুল ইসলাম জোসেফের বাড়িতে তল্লাশি হয়েছে। তাকে গ্রেফতারের আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। সে যুবদলের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছে।
তিনি বলেন, বন্দর থেকে ধামগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন আমাকে সমর্থন করায় তার বাড়িতে তল্লাশি হয়েছে। তার কেয়ারটেকারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এভাবেই আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে।
তৈমূর বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে আমি বলতে চাই, তিনি এ নির্বাচনটা দিয়েছেন। তারা সর্বক্ষণ বলে থাকেন বিএনপি নির্বাচনে আসে না, ভয় পায়। এখন আপনারা দেখেন রাজনৈতিক দলগুলো কেন নির্বাচন বয়কট করে। কেন তারা আসতে চায় না, এর জলজ্যান্ত প্রতিচ্ছবি আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। জনগণের রায়ই চূড়ান্ত রায়। তারা যে ঘুঘু দেখানোর কথা বলেছে সে ঘুঘু যদি দেখানো হয় তাহলে আমি মনে করি এখানে সবচেয়ে বেশি ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। হয়তো তিনি বিষয়টা জানেন না বা তার নজরের বাইরে গিয়ে এ ধরনের জুলুম-অত্যাচার করা হচ্ছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, অবশ্যই আপনি নারায়ণগঞ্জের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাবেন।
তিনি বলেন, থানায় যখন আমরা খোঁজ নেই তারা বলে আমরা কিছু জানি না। এসপি সাহেবকে বলতে চাই, আপনি যদি এর ব্যবস্থা না নেন তাহলে আপনার অফিসের সামনে বসে পড়া ছাড়া আমার অন্য কোনো উপায় থাকবে না।
তৈমূর বলেন, এ নির্বাচনে যদি আপনি পুলিশ দিয়ে এভাবে হয়রানি করেন তাহলে আপনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত হবে বলে আমি মনে করি। সরকারের অনেক বড় বড় কর্মকর্তাদের বিলেত যাওয়ার ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এতে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। আপনার নিজের ভাবমূর্তির প্রশ্নে বিষয়টা বিবেচনায় রাখবেন।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ