প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে উঠেছিলেন ড. ইউনূস : প্রধানমন্ত্রী

ফাইল ছবি

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি (ব্যবস্থাপনা পরিচালক) পদ নিয়ে মামলায় হেরে ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে উঠেছিলেন মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বুধবার (১ জুন) গণভবনে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল পদ্মা সেতু। আপনারা জানেন, বিশ্ব ব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অর্থ বন্ধ করে দেয়। এটা বিশ্ব ব্যাংকের দোষ দেবো না।  ঘরের শত্রু বিভীষণই হয়। আপনারা জানেন ড. ইউনূস তিনিই এই কাণ্ডটা ঘটিয়েছিলেন।  তার গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদটার জন্য।  কারণ তিনি এমডি পদটা হারিয়েছেন তার বয়সের কারণে’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংকের যে আইন আছে ৬০ বছরের ওপর বয়স যাদের, ৬০ বছর পর্যন্ত এমডি থাকতে পারে।  তিনি ৭১ বছর বয়স পর্যন্ত এমডি ছিলেন।  যেটা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে একটা ব্যাংক এভাবে বেআইনিভাবে চলতে পারে না।  সেই পদক্ষেপটা নেয়।  তার ফলে ইউনূস আমাদের সরকারের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সবার বিরুদ্ধে মামলাও করে, দুটি মামলা করে।  কিন্তু সেই মামলায়ও সে হেরে যায়’।
পদ্মা সেতুর অর্থ বন্ধে ড. ইউনূসের প্রতিহিংসা দায়ী মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মামলায় হেরে গিয়ে তিনি প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ওঠেন।  হিলারি ক্লিনটনকে দিয়ে অর্থাৎ আমেরিকার সরকার দিয়ে তিনি বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্টকে বাধ্য করান আমাদের পদ্মা সেতুর অর্থ বন্ধ করে দিতে’।
পদ্মা সেতুর দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে দুর্নীতির বিষয়ে যখন প্রশ্ন তোলে আমি এটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম।  কাজেই এটা প্রমাণ করতে পারেননি।  কানাডা কোর্ট সেটা স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন তাদের সব অভিযোগ মিথ্যা, ভুয়া।  কিন্তু সে সময় একটা প্রচণ্ড মানসিক চাপ এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। আমাদের দেশের কিছু লোক নানা ধরনের কথা বলেন।  আমি বলেছিলাম আমরা নিজেদের অর্থে করবো।  আমরা কিন্তু সেটা করেছি। আল্লাহর রহমতে আসছে ২৫ জুন আমরা আমাদের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবো ইনশাল্লাহ’।
সততার শক্তির কারণে পদ্মা সেতু নির্মাণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পেরেছেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই চ্যালেঞ্জটা আমি নিয়েছিলাম যে, বাংলাদেশকে নিয়ে কেউ কোনো বিরূপ কথা বললে সেটা আমার নিজেদেরই কষ্ট লাগে এবং লাগাটা খুব স্বাভাবিক।  আমাদের লক্ষ্য জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করা।  এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা।  নিজের ভাগ্য গড়তে ক্ষমতায় আসিনি।  ক্ষমতায় এসেছি দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কেন দুর্নীতি করতে যাবো।  দুর্নীতির করার প্রশ্নই ওঠে না।  অথচ আমাদের অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল।  আমাদের ওপর আল্লাহ সহায় আছেন।  আমি মনে করি, সততার আলাদা একটা শক্তি থাকে।  সততার শক্তি ছিল বলেই আমরা এই চ্যালেঞ্জ নিতে পেরেছিলাম।  দেশের মানুষের অফুরন্ত সহযোগিতা পেয়েছি আমি।  যার ফলে আজকে পদ্মা সেতু আমরা করতে পেরেছি’।
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই একটা সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ যে, কারো ওপর নির্ভরশীল না।  কোন একটা প্রতিষ্ঠানের প্রতি যে একেবারেই নির্ভরশীল না সেটা আমরা প্রমাণ করেছি।  যে কারো ওপর নির্ভরশীল আমরা হতে চাই না।  আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই।  আজকে আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পের ৯০ শতাংশ নিজস্ব অর্থায়নে আমরা বাস্তবায়ন করার সক্ষমতা অর্জন করেছি’।
সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ