সমন্বিতভাবে যুগপৎ আন্দোলনে বিএনপি ও ওয়ার্কার্স পার্টির ঐকমত্য

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে রাজপথে সমন্বিতভাবে যুগপৎ আন্দোলনে মতৈক্য হয়েছে বিএনপি ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি।  বুধবার (১ জুন) দুপুরে অন্তত দুই ঘন্টা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে এই মনোভাব তুলে ধরেন উভয় দলের শীর্ষ নেতারা।  এদিন রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যান বিএনপির তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল।
সোয়া একটা থেকে তিনটার কিছু আগে বৈঠক শেষ হয়। বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও কেন্দ্রীয় নেতা জহির উদ্দিন স্বপন।  অসুস্থ থাকায় বৈঠকে যেতে পারেননি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।  বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে অংশ নেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক , রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আবু হাসান টিপু, আনছার আলী দুলাল, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাহমুদ হোসেন, এপোলো জামালীও মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক।
সমন্বিতভাবে যুগপৎ আন্দোলনে বিএনপি ও ওয়ার্কার্স পার্টির ঐকমত্য
বৈঠক থেকে বেরিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা যৌথভাবেই আন্দোলন শুরু করবো।  নিজের নিজের জায়গা থেকে আন্দোলন শুরু করবো।  আন্দোলন যুগপৎ হবে।  আন্দোলনের মধ্য দিয়েই ধারা নির্ধারিত হবে যে শেষ পর্যন্ত সেটা কিভাবে রূপ নিচ্ছে।  আমি বিশ্বাস করি, আমরা রাজনৈতিকগুলো একজোট হয়ে কাজ করলে এই দুঃশাসনকে পরাজিত করে জনগণের বিজয় অর্জন করতে সক্ষম হবো’।
সাইফুল হক বলেন, ‘আমরা মনে করি, গণআন্দোলন ও গণসংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে যদি পদত্যাগে বাধ্য করা না যায় তাহলে মানুষের ভোটের অধিকার বলি, গণতান্ত্রিক অধিকার বলি, অথবা একটা তদারকির সরকার, অবাধ গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ নির্বাচন অথবা বাংলাদেশের’ গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ কোনোটাই বাংলাদেশে নিশ্চিত করা যাবে না।  সেই কারণে আমরা আলাপ-আলোচনা করে আন্দোলনে ঐকমত্য হয়েছি।
সাইফুল হক বলেন, ‘যুগপৎ আন্দোলন অর্থ বিএনপি-বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি জোটবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করবে না, তবে একই লক্ষ্য অর্জনে তারা কর্মসূচি আলাদাভাবে পালন করলেও তাতে সমন্বয় থাকবে’।
বৈঠক শেষে সাইফুল হক জানান, বিএনপির সঙ্গে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মতবিনিময় সভায় সংকট উত্তরণে পার্টির ৩১ দফা ব্যাখ্যা করা হয়।  পার্টির পক্ষ থেকে সাংবিধানিক স্বৈরতন্ত্রের উৎস সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ পরিবর্তন, রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থার ব্যক্তিকেন্দ্রিক অগণতান্ত্রিক ক্ষমতা কাঠামোর পরিবর্তন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সব কালাকানুন বাতিল, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বন্ধ, গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পুলিশি হামলা রোধ, বিকেন্দ্রীকৃত সরকার পদ্ধতি, নির্বাচনি ব্যবস্থার আমূল সংস্কার, নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব, জাতীয় সম্পদ রক্ষা, প্রাণ প্রকৃতি বিনাশী প্রকল্প বন্ধ, জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের আশু বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়।
পরে সাংবাদিকদের সামনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যেসব সংস্কারের কথাগুলো সাইফুল হক সাহেব বলেছেন এ বিষয়ে আমরা আরও বিশদ আলোচনা করবো।  অল্প সময়ের মধ্যে এ ব্যাপারেও আমাদের বক্তব্য নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হবো’।
এর আগে গত ২৪ মে মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্য, ২৭ মে জোটের শরিক লেবার পার্টির সঙ্গে আলোচনা করেছেন বিএনপি নেতারা। এরপর মঙ্গলবার (৩১ মে) গণসংহতি আন্দোলনের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তারা।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ