‘পদ্মা ব্রিজ দিয়ে কি স্বর্গে যাব’ : ফখরুল

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
পদ্মা সেতু হলে দেশের উন্নয়ন বাড়বে বলে আওয়ামী লীগের এমন মন্তব্যের বিপরীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পদ্মা সেতুকে সোনায় মুড়িয়ে রাখার কথা বলেছেন।  তিনি কটাক্ষ করে এমনও বলেছেন, ‘পদ্মা ব্রিজ দিয়ে স্বর্গে যাব?’
শুক্রবার (১০ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দলের এক প্রতিবাদ সমাবেশে এমন মন্তব্য করেন বিএনপি নেতা।  গ্যাসসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ওই সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর (উত্তর-দক্ষিণ) বিএনপি।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিভিন্ন সময় বলেছেন পদ্মা সেতু উদ্বোধন নিয়ে বিএনপি নেতাদের মনে জ্বালা সৃষ্টি হয়েছে।
জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের রুমিন ফারহানা (বিএনপির সংসদ সদস্য) গতকাল খুব কথা ভালো বলেছে, যে পদ্মা ব্রিজ সোনা দিয়ে মোড়ানো….’।  পদ্মা সেতু নিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা যখন ছাত্র ছিলাম, রাজপথে স্লোগান দিতাম।  তখন ১০ টাকা তেলের দাম হয়ে গিয়েছিল।  তখন আমরা বলতাম ১০ টাকার তেল খেয়ে স্বর্গে যাব।  এখন বলতে চাই, ওই ব্রিজের টোল দিয়ে এবং পদ্মা ব্রিজ দিয়ে স্বর্গে যাব’।
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এদের সাধারণ মানুষের প্রতি কোনো ভালোবাসা নাই।  সাধারণ মানুষের জন্য বিপদ কিংবা শাস্তিও হতে পারে’।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দেশে দারিদ্র্য বেড়েছে বলেও দাবি করেন ফখরুল।  বলেন, ‘এই সরকারের আমলে শতকরা ৪২ ভাগ লোক দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাচ্ছে’।  তিনি বলেন, ‘এই সরকারের মানুষের প্রতি কোনো ভালোবাসা নাই।  তারপরে কালকে একটা বাজেট দিয়েছে।  আমি বললাম, কোন বাজেট, কাদের বাজেট।  কারা বাজেট দিয়েছে?  আপনারা দেখবেন, বাজেটে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে জনপ্রশাসনে।  জনপ্রশাসন হচ্ছে পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেট, ডিসি, ইউএনও।  ওদের বেতন বাড়াচ্ছেন, ওদের বিভিন্ন রকম সুযোগ-সুবিধা বাড়াচ্ছেন, আর জনগণের পকেট থেকে টাকা কেটে তাদের দিচ্ছেন’।
বিদেশে পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনার সুযোগ দেয়ারও সমালোচনা করেন বিএনপি নেতা।  তিনি বলেন, ‘বাজেট কাদেরকে সাহায্য করেছে?  যারা টাকা চুরি করল, ডাকাতি করল, লুণ্ঠন করল, বিদেশে পাচার করল পি কে হালদারের মতো।  তারা এখন টাকা ফেরত আনতে পারবে এবং কেউ কোনো প্রশ্ন করতে পারবে না।  হাইকোর্ট থেকেও তাদের কোনো প্রশ্ন করা যাবে না।  এ নিয়ে আমি আর কী বলব? যারা বাজেট দিয়েছে তারা কি সাধারণ মানুষের সরকার?  নাকি লুটেরা, চোর?  তারা মানুষের পকেট কেটে, নিজেদের পকেট ভারী করে, এ দেশের সম্ভাবনাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে’।
এই সরকার অনির্বাচিত দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘জনগণের বাজেট দেয়ার কোনো এখতিয়ার তাদের নাই।  গত ১৫ বছরের দুঃশাসনে তারা প্রমাণ করেছে যে তারা বাংলাদেশের মানুষের শত্রু’।
এই সরকার বেশিদিন ক্ষমতায় থাকলে দেশের ক্ষতি হবে উল্লেখ করে আন্দোলনের জন্য নেতাকর্মীদের প্রস্তুত হওয়ারও আহ্বান জানান ফখরুল।  বলেন, ‘আমাদের আর সময়ক্ষেপণ করার সময় নাই’।
পুলিশের উদ্দেশে বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা আশা করব আপনাদের মধ্যে শুভবুদ্ধির উদয় হবে।  আওয়ামী লীগকে যেমন মিটিং-মিছিল করতে দেন, আমাদেরকেও মিটিং-মিছিল করতে দিতে হবে।  আর যদি বাধার সৃষ্টি করেন, তাহলে জনগণ সেই বাধা রাখবে না।  আপনারা মানুষের ওপর অন্যায়-অত্যাচার করবেন না।  বিনা কারণে মানুষকে তুলে নিয়ে গিয়ে রিমান্ডে নেবেন না।  না হলে এগুলোর একদিন না একদিন আপনাদের জবাবদিহি করতেই হবে’।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ