মানবাধিকার লঙ্ঘনে সম্পৃক্তদের বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান ফখরুলের

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
মানবাধিকার লঙ্ঘনে সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত নিশ্চিত করে অবিলম্বে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানাচ্ছি’।
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা সফরকারী জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনার মিশেল বাশেলের প্রদত্ত বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এই বিবৃতি দেন বিএনপির মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, ‘সফরকারী জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনার মিস মিশেল বাশেলে এবং তার টিম গত ১৪-১৮ আগস্ট বাংলাদেশ সফরে এসে এখানকার মানবাধিকার পরিস্থিতি, বিশেষ করে গুম, নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, বাকস্বাধীনতা, সভা-সমাবেশ, রাজনৈতিক নিপীড়ন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ নারীর প্রতি সহিংসতা এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার বিষয়ে গণমাধ্যমের কাছে লিখিতভাবে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা দীর্ঘদিন ধরে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, বিরোধী মত, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন এবং বিভিন্ন রাষ্ট্র কর্তৃক প্রকাশিত প্রতিবেদনেরই প্রতিচ্ছবি’।
এতে বলা হয়, ‘মানবাধিকার হাইকমিশনারের বক্তব্যে দ্ব্যর্থহীনভাবে উঠে এসেছে, গুম, নির্যাতন এবং বিচারবহির্ভূত হত্যা সংক্রান্ত বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিভিন্ন মেকানিজম এবং তাদের নির্যাতনবিরোধী কমিটি যে উদ্বেগ তুলে ধরেছেন তার অনেকটাই র‌্যাবের ভূমিকা নিয়ে। এ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের জবাবদিহি না থাকার বিষয়ে’।
ফখরুল বলেন, ‘আমরা লক্ষ করেছি, তিনি তার লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন, এই অভিযোগগুলো নিয়ে তিনি বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রীদের কাছে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। একটি নিরপেক্ষ, স্বাধীন এবং স্বচ্ছ তদন্তের ওপর জোর দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে নিরাপত্তা সেক্টর সংস্কারের ওপরও জোর দিয়েছেন বলে আমরা দেখলাম’।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘হাইকমিশনার স্পষ্টভাবে বলেছেন, স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি গুম, যথাযথ আইনি ব্যবস্থা এবং বিচারিক রক্ষাকবচ না থাকার অ্যালার্মিং অভিযোগ আছে। বিশেষ করে দীর্ঘদিন ঘটনাগুলোর তদন্তে অগ্রগতি না হওয়া এবং ন্যায়বিচারের অন্যান্য প্রতিবন্ধকতার বিষয়টি তিনি তুলে ধরেছেন’।
তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, ‘গুম সংক্রান্ত জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপকে এ বিষয়ে আমন্ত্রণ জানালে তা হবে এটা সমাধানের জন্য সরকারের সদিচ্ছার বহিঃপ্রকাশ’।
এখন থেকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে পাঠানোর জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য বাছাইয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনে সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিবিড়ভাবে পরীক্ষা করার তাগিদ দিয়েছেন মির্জা ফখরুল। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনের ওপরও জোর দিয়েছেন তিনি।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ