ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির ইন্তেকাল

ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পি
ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পি

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক : সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর গত চারদিন ধরে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন বাপ্পি। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সকাল ৮ টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে তার ছোট ভাই লেফটেন্যান্ট কর্নেল বাছির জানান।

১৯৭০ সালের ৩১ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে জন্মগ্রহণ করা বাপ্পির ৪৯তম জন্মবার্ষিকী ছিল গত মঙ্গলবার। তখন তিনি লাইফ সাপোর্টে, অচেতন। তার অসুস্থতার কথা জানিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন তার স্বামী শেখ রফিক। সেখানে তিনি স্ত্রীর জন্য সবার দোয়া চেয়েছিলেন। পেশায় আইনজীবী বাপ্পি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। যুব মহিলা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা উপ কমিটির সদস্য হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।

২০০৭-০৮ সময়ে জরুরি অবস্থার মধ্যে দলের নেতাদের মধ্যে কেউ কেউ যখন ‘সংস্কারের’ কথা বলছিলেন, বাপ্পি ছিলেন শেখ হাসিনার প্রতি আনুগত্যে অনড়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি এক সময় সুপ্রিম কোর্টে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্বও পালন করেছেন। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর পর সংরক্ষিত নারী আসন ৫টি বাড়ানো হলে ২০১১ সালের ১৫ ডিসেম্বর নবম সংসদের সদস্য হিসেবে শপথ নেন বাপ্পি। পরে দশম সংসদেও তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদেরও শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল বাছির বলেন, বেলা ১ টার পর বাপ্পির মরদেহ সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে তার প্রথম জানাজা হবে। পরে বিকাল ৩ টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা জানাজা হবে। সন্ধ্যায় মিরপুরে তাকে দাফন করা হবে।

উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী এবং দ-প্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের সব স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার একটি সিদ্ধান্ত প্রস্তাব ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। পরের বছর ৪ মে গৃহীত হয় একাত্তরের গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিতে শাস্তির জন্য আইন করার একটি প্রস্তাব। দু’টি প্রস্তাবই সংসদে তুলেছিলেন সাংসদ বাপ্পি।