ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে অসন্তুষ্টি, চবির গেইটে তালা সংক্ষুব্ধদের

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) মূল ফটকে তালা দিয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একাংশ। চবি ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটিকে মেয়াদোত্তীর্ণ উল্লেখ করে এই কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার দাবি করেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তিনটি উপ-গ্রুপ ভিএক্স, বিজয় ও সিএফসির একাংশের নেতাকর্মীরা এতে অংশ নেন।
২০১৯ সালের ১৪ জুলাই রাতে রেজাউল হককে সভাপতি ও ইকবাল হোসেন টিপুকে সাধারণ সম্পাদক করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই সদস্যের কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এই কমিটির মেয়াদ ছিল এক বছর। মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রায় আড়াই বছর পর গত বছরের ৩১ জুলাই ৩৭৬ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন উপ-গ্রুপের নেতাকর্মীরা কমিটি বাতিল চেয়ে অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ওপর অনাস্থা প্রকাশ করে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন তারা। শুধু তাই নয়, গত ৮ জুন সভাপতিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (আগস্ট) কমিটি বিলুপ্তির দাবিতে মূল ফটক অবরোধ করেন ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা। বিকেল ৪ টায় টায়ার পুড়িয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। পরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের আশ্বাসে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও ভিএক্স গ্রুপের নেতা প্রদীপ চক্রবর্তী দুর্জয় বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে মেয়াদোত্তীর্ণ এই কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছি। সভাপতিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে এবং সাধারণ সম্পাদক সাংগঠনিক কার্যক্রম সঠিকভাবে চালাতে পারছেন না। আমরা নতুন কমিটি চাই’। তিনি আরও বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন কমিটি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে অবরোধ প্রত্যাহার করেছি। কয়েকদিনের মধ্যে নতুন কমিটি ঘোষণা না হলে নতুন কর্মসূচি দেওয়া হবে’।
বিজয় গ্রুপের নেতা ও চবি ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, ‘রুবেল- টিপু চবি ছাত্রলীগের জন্য স্মার্ট নেতৃত্ব নন। তাই চার বছর ধরে এই কমিটি বিলুপ্তির দাবি জানিয়ে আসছি। দ্রুত এই দাবির বাস্তবায়ন চাই’।
অবরোধ কর্মসূচিতে সিএফসি গ্রুপের একাংশ অংশ নেয় বলে জানিয়েছেন এই গ্রুপের নেতা ও চবি ছাত্রলীগের সহসভাপতি মির্জা খবির সাদাফ।
চবি ছাত্রলীগ সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, ‘আগস্ট মাসে এ ধরনের কর্মসূচি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর কাছে কাম্য নয়। কোনো অভিযোগ বা দাবি থাকলে তারা তা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে জানাতে পারে। এটি ছাত্রলীগের অবমাননা’। সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপুও মনে করেন, শোকের মাসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর এ ধরনের কর্মসূচি গ্রহণযোগ্য নয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদার জানান, নতুন কমিটির দাবিতে তারা (ছাত্রলীগ) তালা দিয়েছে, এটা প্রশাসনের সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্ব নয়। তালা খুলে দেওয়ার জন্য তাদের বলা হয়েছে।

ডিসি/এসআইকে/এসইউপি