বিদ্রোহীর বোঝা মাথায় নিয়েই মাঠে থাকছে আ’লীগ, সমর্থন পরিবর্তন হতে পারে

বিশেষ প্রতিবেদক >>>
সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় বিদ্রোহী প্রার্থীর বোঝা নিয়েই চসিক নির্বাচনে মাঠে থাকছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের রবিবারের (৮ মার্চ) বিশেষ বর্ধিত সভা স্থগিত করায় বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয় বলে দলটির একাধিক নীতি-নির্ধারক দৈনিক চট্টগ্রামকে জানিয়েছেন। তবে বর্ধিত সভা স্থগিত হলেও শেষ চেষ্টা হিসেবে দলটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কঠোর বার্তা দিতে পারেন। শেষ বার্তায় কাজ না হলে দলীয় সমর্থনে কিছুটা পরিবর্তন আসতে পারে বলে একাধিক সূত্র আভাস দিয়েছে। পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে দলের সমর্থন পাওয়া যে সমস্ত কাউন্সিলরপ্রার্থীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠে এসেছে তাদের পরিবর্তে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ যাকে সমর্থন দিতে চায় তাকে দলের সমর্থন দেয়া। এভাবেই কিছুটা বিদ্রোহী মুক্ত হতে চায় দলটি। আপাতত সেই লক্ষ্যেই ওবায়দুল কাদের আসবেন।
দলটির কেন্দ্রীয় সিনিয়র দুই নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক চট্টগ্রামকে জানান, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের কড়া নির্দেশনার বিষয়টি হিতে বিপরীত হয়েছে। সকল প্রার্থীর সাথে যে সমঝোতা বৈঠক ছিল সেখানে যদি প্রার্থীদের কথাগুলো শোনা হতো তাহলে বেশ কিছু প্রার্থীকে সরানো যেতো। কিন্তু কঠোর নির্দেশনা পাওয়ায় এই উদ্যোগ ভেস্তে যায়। বরং উল্টো প্রতিক্রিয়া আসে বিদ্রোহী প্রার্থীদের কাছ থেকে। বিষয়টি হাই কমান্ডও অবগত। এছাড়াও বেশ কিছু প্রার্থীর ব্যাপারে জোড়ালো সমালোচনা ওঠার বিষয়টিও হাইকমান্ড অবগত। তাই মাঠ ওপেন করে দেয়ার একটি সিদ্ধান্ত আসতে পারে। তবে, নির্বাচনী মাঠ উন্মুক্ত করার চেয়ে দলটির সমর্থন পাওয়া যে সমস্ত প্রার্থীর বিরুদ্ধে মাদক, পতিতা ব্যবসা ও ভুয়া পদবী পরিচয়ে দলের সমর্থন পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে এবং যাদের বিরুদ্ধে কিশোর গ্যাং বা সামাজিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছে তাদের প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করে ওয়ার্ড ও থানা আওয়ামী লীগের সম্মিলিত সমর্থনের ভিত্তিতে দলীয় সমর্থন দেয়া হতে পারে। এতে অন্তত আশি শতাংশ ওয়ার্ডেই বিদ্রোহীপ্রার্থী কমে যাবে। আর এতেও যেসব প্রার্থী বিদ্রোহ করবে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করার মতো সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা এক নেতা দৈনিক চট্টগ্রামকে জানান, নীতিগতভাবে নগর আওয়ামী লীগ দলীয় সিদ্ধান্তে সহমত জানালেও প্রকৃত অর্থে নাখোশ তাদের মতামত না নিয়ে প্রার্থী দেয়ার বিষয়ে। বিদ্রোহী প্রার্থীদের চোখ রাঙিয়ে সরানো যাবে না এটা প্রায় নিশ্চিত। আমাদের সেন্ট্রাল সেক্রেটারি আসবেন, উনি আসার পরেও যদি না হয় তাহলে দলের সমর্থন পাওয়া কিছু অভিযুক্ত প্রার্থীর সমর্থন প্রত্যাহার করে ওয়ার্ড-থানা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের পছন্দসই প্রার্থীকে সমর্থন দেয়া হতে পারে। এতে প্রায় ৩২ টি ওয়ার্ডে বিদ্রোহী প্রার্থী থাকবে না বলে আমাদের ধারণা। বাকী যারা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাবে তাদের ব্যাপারে কঠোর থাকবে দল।

ডিসি/এসআইকে/আইএস