কক্সবাজার সৈকতে প্রতিমা বিসর্জনে মানুষের ঢল

কক্সবাজার প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বিজয়া দশমী এবং দেবী বিসর্জনে মানুষের ঢল নেমেছে।  গভীর শ্রদ্ধায় মা দুর্গাকে বিদায় জানাতে জড়ো হয়েছেন সনাতন ধর্মাবলম্বী এসব মানুষ।
সোমবার (২৬ অক্টোবর) সৈকতের লাবনী পয়েন্টে দুর্গাপূজার শেষ দিন বিজয়া দশমীতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ।  আয়োজকরা জানান, এ বছর রামু ও সদর উপজেলা মিলে অর্ধশতাধিক প্রতিমা সৈকতে বিসর্জন দেওয়া হচ্ছে।  অন্য বছর আলোচনা সভাসহ নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে উৎসব সম্পন্ন হলেও এ বছর শুধুমাত্র বিসর্জন মন্ত্র পাঠ করেই প্রতিমা সাগরে ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়া একই সময়ে কক্সবাজারের চকরিয়ার মাতামুহুরী, টেকনাফের নাফনদী, উখিয়ার ইনানী সৈকত ও রেজুনদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বিসর্জন অনুষ্ঠানকে ঘিরে দুপুর ২টা থেকে শোভাযাত্রা সহকারে প্রতিমা আসতে শুরু করে।  ট্রাকে করে প্রতিমা আসতে আসতে ভরে যায় অনুষ্ঠানস্থল।  সৈকতের বালুচরে রাখা দুর্গা প্রতিমা ঘিরে চলে ভক্তদের শেষ আরাধনা।  শুধু তাই নয়, নাচে-গানে এক অন্য রকম আনন্দ মুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয় বিশ্বের দীর্ঘতম এ সৈকত।  অনুষ্ঠানকে ঘিরে সমাগম ঘটে পর্যটকসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লাখো মানুষের।
রামু কেন্দ্রীয় কালী মন্দিরের পুরোহিত সুবীর ব্রাহ্মণ চৌধুরী জানান, এবার মা দুর্গা এসেছেন দোলনায় চড়ে।  যাচ্ছেন হাতির পিঠে চড়ে।  এ কারণে এবার আমরা রোগ-শোকের আশঙ্কা করছি।  তাই মা দুর্গার কাছে আমাদের বিশেষ প্রার্থনা ছিল মানুষ যেন বিভিন্ন রোগ-শোক থেকে রক্ষা পায়।  মা দুর্গা আমাদের প্রার্থনা শুনেছেন।  যে কারণে আবহাওয়া আমাদের অনুকূলেই ছিল।
জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা বলেন, এ বছর জেলায় ২৯৯টি মণ্ডপে পূজা উদযাপন হয়েছে।  এরমধ্যে ১৪৪টি প্রতিমা পূজা, ১৫৫টি ঘট পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।  সরকারি নির্দেশনা অনুসারে আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আমাদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিসমূহ সম্পন্ন করেছি।
তিনি বলেন, ২৬ দফা নির্দেশনা মেনে এবার দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হয়।  বিশেষ করে করোনা মহামারির কারণে এবার আলোচনা অনুষ্ঠান আমরা করিনি।  অনুষ্ঠানস্থল নিরাপদ করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিনস্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনি গড়ে তোলা হয়েছে।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রণজিৎ দাশ জানান, বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠান দেশের সবচেয়ে বড় প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছরও এখানে দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ লাখো মানুষের সমাগম হয়েছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান জানান, জেলার আট উপজেলার ২৯৯টি পূজামণ্ডপে তিনস্তরের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।  সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় দুর্গোৎসবের আজ বিজয়া দশমী।  সমুদ্র সৈকতে বিজয়া দশমীর প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

ডিসি/এসআইকে/এফআর