বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপ টীম মাহমুদউল্লাহ’র

ক্রীড়া ডেস্ক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
প্রায় পুরো টুর্ণামেন্টে ব্যর্থ ছিলেন লিটন দাস ও ইমরুল কায়েস।  ফাইনালে এসেই তারা নিজেদের ফিরে পেলেন।  মাহমুদউল্লাহ একাদশের এ দুই ব্যাটসম্যানের কাছেই পরাস্ত হতে হলো নাজমুল একাদশকে।  ৭ উইকেটে জিতে বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপের শিরোপা ঘরে তুলেছে মাহমুদউল্লাহ’র দল।  অথচ একটা সময় মনেই হয়নি এই দলটি টুর্ণামেন্টের ফাইনালে খেলবে!
পুরো টুর্ণামেন্টের মতো ফাইনালেও একই কাণ্ড ঘটলো।  রবিবারের (২৫ অক্টোবর) ফাইনালেও টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ।  নতুন বলের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি তারা।  আজ যেমন আক্রমণে ছিলেন সুমন খান।  মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে মাহমুদউল্লাহ একাদশের এই পেসারকে সামলাতে পারেননি নাজমুল একাদশের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা।  মিডল অর্ডারের দৃঢ়তায় মাহমুদউল্লাহ একাদশকে ১৭৪ রানের লক্ষ্য দিতে সক্ষম হয় পুরো টুর্ণামেন্টে ধারাবাহিকভাবে দলগতভাবে ভালো করা নাজমুল একাদশ।  লিটন-ইমরুলের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে সেই লক্ষ্য সহজেই পৌঁছে যায় মাহমুদউল্লাহ একাদশ।
লিগ পর্বের খেলা শেষে পয়েন্ট টেবিলে সবার নিচে ছিল মাহমুদউল্লাহ একাদশ।  তামিম একাদশের হারে তাদের ভাগ্য ফেরে, সুযোগ হয় টুর্ণামেন্টের ফাইনাল খেলার।  অথচ তারাই কিনা টুর্ণামেন্টের চ্যাম্পিয়ন! ১৭৪ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই ওপেনার মুমিনুলকে হারায় মাহমুদউল্লাহ একাদশ।  এরপর যুব বিশ্বকাপজয়ী ব্যাটসম্যান মাহমুদুল হাসানকে নিয়ে ভালোই এগিয়ে যাচ্ছিলেন লিটন।  দলীয় ৬৬ রানে মাহমুদুল (১৮) ফিরে গেলে ক্রিজে নামেন ইমরুল।
তৃতীয় উইকেটে আক্রমণাত্মক জুটি গড়ে তোলেন মিরপুরের ২২ গজে।  লিটনের সঙ্গে দ্রুত ৬৩ রানের জুটিতে দলের জয়টাকে সহজ করে তোলেন ইমরুল।  দুজনই টুর্ণামেন্টের সেরা খেলাটা খেলেছেন ফাইনালে।  ৬৯ বলে ১০ চারে ৬৮ রান করে বিদায় নেন লিটন।  লিটনের বিদায়ে যেন আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন ইমরুল।  অধিনায়ককে পাশে নিয়ে ম্যাচ জিতেই মাঠ ছাড়েন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।  ৫৫ বলে ১ চার ও ৬ ছক্কায় ৫৩ রানে অপরাজিত ছিলেন ইমরুল।  অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ১১ বলে ২৩ রানে অপরাজিত থাকেন।  নাজমুল একাদশের বোলারদের মধ্যে নাসুম আহমেদ দলের সেরা বোলার।  এই স্পিনার ৪৮ রান খরচায় নিয়েছেন ২টি উইকেট।  বাকি একটি উইকেট নিয়েছেন পেসার আল আমিন হোসেন।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা নাজমুল একাদশ শুরুতেই বিপদে পড়ে।  হাসান মাহমুদ চোট পাওয়ায় মাহমুদউল্লাহ একাদশের হয়ে সুযোগ পাওয়া সুমন খান ফাইনালে করেছেন দুর্দান্ত বোলিং।  তার বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি নাজমুল একাদশের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা।  একে একে সাইফ, সৌম্য, মুশফিক ও আফিফকে বিদায় করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কাছে নিয়ে নেন সুমন খান।  তবে ৬৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারায় থাকা দলকে ম্যাচে ফেরান তৌহিদ হৃদয়-ইরফান শুক্কুর জুটি।  দুজন মিলে ৬ষ্ঠ উইকেটে করেন ৭০ রান।  তৌহিদ ২৬ রানে আউট হলেও ইরফান খেলেন ৭৫ রানের দারুণ এক ইনিংস।  ৭৭ বলে ৮ চার ও ২ ছক্কায় ৭৭ বলে ৭৫ রানের ইনিংস খেলে রুবেল হোসেনের শিকারে পরিণত হন ইরফান।
মাহমুদউল্লাহ একাদশ চ্যাম্পিয়নদলের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করেছেন অধিনায়ক নাজমুল।  ৫৭ বলে ৪ চারে ৩২ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।  এটাই টুর্ণামেন্টে নাজমুলের সর্বোচ্চ রান।  এছাড়া মুশফিকের ব্যাট থেকে এসেছে ১২ রান।  সবমিলিয়ে ৪৭.১ ওভারে নাজমুল একাদশ অলআউট হয় ১৭৩ রানে।
মাহমুদউল্লাহ একাদশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল বোলার সুমন খান।  ১০ ওভারে ৩৮ রান খরচায় নিয়েছেন ৫টি উইকেট।  এছাড়া পুরো টুর্ণামেন্টে ধারাবাহিকভাবে ভালো করা রুবেল ২৭ রানে নিয়েছেন দুটি উইকেট।  এছাড়া ইবাদত, মেহেদী হাসান মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহ নিয়েছেন একটি উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
নাজমুল একাদশ: ৪৭.১ ওভারে ১৭৩ (ইরফান ৭৫, নাজমুল ৩২, তৌহিদ ২৬, মুশফিকুর ১২; সুমন ৫/৩৮, রুবেল ২/২৭,ইবাদত ১/১৮, মেহেদী ১/৩৯, মাহমুদউল্লাহ ১/২৮)। মাহমুদউল্লাহ একাদশ: ২৯.৪ ওভারে ১৭৭/৩(লিটন দাস ৬৮, ইমরুল কায়েস ৫৩*, মাহমুদউল্লাহ ২৩* মাহমুদুল হাসান ১৮; নাসুম ২/৪৮, আল আমিন ১/৩২)

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ