ক্যারিবীয়দের হোয়াইটওয়াশ, ওয়ানডে সিরিজ বাংলাদেশের

ক্রীড়া ডেস্ক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
তিন ওয়ানডেতেই বাংলাদেশের কাছে ধরাশায়ী হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।  সোমবার (২৫ জানুয়ারি) ২৯৮ রানের বড় লক্ষ্যের বিপরীতে জয়ের লক্ষ্যে না হলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সম্মানজনক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন রোভম্যান পাওয়েল।  তারপরেও শেষ রক্ষা হয়নি। ৪৭ রানে ব্যাট করতে থাকা এই ব্যাটসম্যানকে সৌম্য সাজঘরে ফেরানোর পরেই দ্রুত গুটিয়ে গেছে ক্যারিবীয়রা।  বাংলাদেশ শেষ ওয়ানডে জিতেছে ১২০ রানে।  এ নিয়ে ১৪তম হোয়াইটওয়াশের নজির গড়েছে বাংলাদেশ।
এই জয় দিয়েই আবার ওয়ানডেতে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে টানা অষ্টম জয় পেয়েছে তামিমরা।  সবচেয়ে বেশি জিতেছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে, ১৬টি ম্যাচ!  একই সঙ্গে সুপার লিগে অর্জন করেছে গুরুত্বপূর্ণ ৩০টি পয়েন্ট।
তামিমের নেতৃত্বে পুরো সিরিজে আধিপত্য বিস্তার করা বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিপদে ফেলে দেয় শুরুতেই।  ৩০ রানে জোড়া আঘাতে শুরুতে দুই উইকেট তুলে নেন মোস্তাফিজুর রহমান।  দ্বিতীয় ওভারে কিওর্নকে অফ-স্টাম্পের বাইরে বল করেছিলেন।  খোঁচা মারতে গিয়েই বিদায় নেন কিওর্ন।  তিনি ৮ বল খেলে ফিরেছেন ১ রান করে।  আরেক ওপেনার সুনিল আম্ব্রিস দুটি বাউন্ডারি মেরে রান বাড়িয়ে নিলে তাকেও থিতু হতে দেননি মোস্তাফিজ।  ষষ্ঠ ওভারে তাকে এলবিডব্লিউ করেছেন কাটার মাস্টার।
তারপর এনক্রুমাহ বনার ও কাইল মেয়ার্স জুটিও বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেনি।  মেয়ার্সকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে তাকে সাজঘরের পথ ধরিয়েছেন আগের ম্যাচের সেরা বোলার মিরাজ।  তার ঘূর্ণিতে পুরোপুরি পরাস্ত হয়েছিলেন মেয়ার্স।  রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি, ফিরে গেছেন ১১ রানে।
বিপদে পড়ে যাওয়া ক্যারিবীয়দের এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন জেসন-বনার জুটি।  তাদের বিদায় দিয়ে এই জুটি ভেঙে দিয়েছেন আজকে সুযোগ পাওয়া সাইফ।  ১৭ রানে ব্যাট করতে থাকা জেসনকে মুশফিকের তালুবন্দি করেছেন প্রথমে।  এরপর ৩১ রান করে ফেলা বনারকেও বিদায় দিয়েছেন সাইফ।  করেছেন বোল্ড।  অবশ্য বনার আগেই ফিরতে পারতেন।  দুবার ভাগ্য সঙ্গী ছিল বলে বেঁচে গেছেন।  একবার লেগ বিফোরের আবেদনে রিভিউ নিয়ে বেঁচেছেন।  আরেকবার তার ক্যাচ নিতে পারেননি সাকিব।
শেষ দিকে পাওয়েল প্রতিরোধ গড়লেও তাকে এলবিডব্লিউ করেছেন সৌম্য।  এরপর দ্রুত সাজঘরে ফিরেছেন বাকিরা।  ফলাফল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪৪.২ ওভারেই অলআউট ১৭৭ রানে।
দুই পরিবর্তনে আজ খেলতে নেমেছিলেন পেসার তাসকিন আহমেদ ও সাইফউদ্দিন।  তারা দুজনেই ছিলেন সফল।  ৪০ রানে দুটি উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।  সমসংখ্যক উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী মিরাজ।  ১৬ রান দিয়েছেন মোস্তাফিজ, আর মিরাজ দিয়েছেন ১৮ রান।  এছাড়া একটি করে নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ ও সৌম্য সরকার।
এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করতে বড় লক্ষ্য ছুড়ে দেয় বাংলাদেশ।  টস হেরেও স্বাগতিকরা ৬ উইকেটে করে ২৯৭ রান। চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে যা ছিল সর্বোচ্চ সংগ্রহ!  মূলত তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাফসেঞ্চুরিতে ভর করেই বড় পুঁজি পায় স্বাগতিকরা।  তামিম, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ তিন জনই করেছেন ৬৪ রান।  নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা সাকিব ৫৭০ দিন পর দেখা পেয়েছেন ওয়ানডে হাফসেঞ্চুরির।  বিদায় নেন ৫১ রান করে।  তবে শেষ দিকে স্কোরবোর্ড সমৃদ্ধ হয়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আগ্রাসী ভঙ্গিতে ব্যাটিং করায়।
ম্যাচসেরা হয়েছেন মুশফিকুর রহিম ও সিরিজ সেরা সাকিব আল হাসান।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ