উইকেট বিলিয়ে আরেকটি লজ্জার অপেক্ষা

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
দ্বিতীয় দিন শেষে তামিম ইকবাল বড় জুটির আশার কথা শুনিয়েছিলেন।  মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিঠুনের ব্যাটে হয়তো সেই আশা লুকিয়ে ছিল।  আর যাই হোক, প্রথম দিন হারানো চার ব্যাটসম্যানের মতো ছন্নছাড়া ব্যাটিং ছিল না তাদের।  খেলেছিলেন ঠান্ডা মাথায় দৃঢ়তা নিয়ে।  কিন্তু সেই তারা, বিশেষ করে মুশফিক এভাবে ‘আত্মহত্যা’ করলেন!
ব্যাটিং দক্ষতায় বাংলাদেশের সেরা খেলোয়াড় মুশফিক।  টেস্ট সংস্করণে এলে তার কার্যকারিতা আরও বেশি।  দলের বিপদের সময় হাল ধরে আশা জাগানো মুশফিক নিজের হাতে নষ্ট করেছেন সব।  তার আগে বিদায় নেওয়া মিঠুনও উইকেট উপহার দিয়ে এসেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।
সোজা কথায়, ঢাকা টেস্টে বাংলাদেশের ইনিংসে চলছে উইকেট বিলিয়ে আসার খেলা।  তাই লাঞ্চের আগেই স্বাগতিকরা হারায় ২ উইকেট।  সব মিলিয়ে তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনে স্কোর ছিল ৬১ ওভারে ৬ উইকেটে ১৮১।  অবশ্য লাঞ্চ বিরতি থেকে ঘুরে এসে ২০০ ছাড়িয়েছে স্কোর।
ছন্নছাড়া ব্যাটিংয়ের মাঝেও আশার আলো মিলেছিল মুশফিক ও মিঠুনের দৃঢ়তায়।  তৃতীয় দিনে তাদের কাছ থেকে প্রত্যাশা ছিল বড় ইনিংসের।  সকাল সকাল মুশফিক হাফসেঞ্চুরি পূরণ করে সেই প্রত্যাশার জবাবটাও দিলেন।  কিন্তু তার উদযাপনের পরপরই আবার হতাশায় ছেয়ে যায় বাংলাদেশের ড্রেসিংরুম।  শট নির্বাচনে গড়মিল করে উইকেট বিলিয়ে এলেন মিঠুন।
তার বিদায়ে স্বাগতিকরা হারায় পঞ্চম উইকেট।  দৃঢ় মনোবলে সত্যিকারের টেস্ট মেজাজে এই ব্যাটসম্যান ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিলেও শেষটা হয়েছে চরম হতাশায়-আক্ষেপে।  রাকিম কর্নওয়ালের বলে শর্ট মিডউইকেটে ধরা পড়েন ক্রেগ ব্র্যাথওয়েটের হাতে।  রান করেছেন তিনি ১৫, তবে ক্রিজে যে বেশ ভালোভাবেই মানিয়ে নিয়েছিলেন তার প্রমাণ ৮৬ বল খেলা।  আর এই জায়গাতেই বেশি করে কাঠগড়ায় ওঠেন মিঠুন। এত বল খেলার পরও শট নির্বাচনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারায় সামর্থ্যের ওপরও কিন্তু প্রশ্ন উঠে যায়!
মিঠুনের শর্ট নির্বাচন যদি হয় ভুল এবং আউট যদি হয় দৃষ্টিকটু, তাহলে মুশফিকের আউটকে কী বলা হবে?  বর্তমান টেস্ট দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার হয়েও তিনি যে ‘ভুল’ করেছেন সেটা ক্ষমার অযোগ্য।  দারুণ ব্যাটিংয়ে উজ্জ্বল সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেওয়া চমৎকার ইনিংসটা কিনা ‘আত্মহত্যায়’ শেষ করলেন মুশফিক!  টেস্ট ক্রিকেটে রিভার্স সুইপ, তাও আবার দলের বিপর্যয়ের সময়।  অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার সেটাই করে বসলেন।  আগের বলে রিস্ক শটে বাউন্ডারি পাওয়ার পরই আবার নিলেন বড় ঝুঁকি।  মাত্র কয়েক ওভার আগে মিঠুনকে হারিয়ে এমনিতেই চাপ তৈরি হয়েছিল, সেখানে অপ্রয়োজনীয় রিভার্স সুইপে উইকেট বিলিয়ে এলেন তিনি।
তাই কর্নওয়ালের বলে কাইল মায়ার্সের হাতে ধরা পড়ার আগে যতই ৫৪ রানের ইনিংস খেলুন না কেন মুশফিক, এরপরও তিনি নিশ্চিতভাবে উঠবেন কাঠগড়ায়।  বাংলাদেশের ইনিংসের অনেক কিছু তো নির্ভর করছিল তার ওপরই।

ডিসি/এসআইকে/এমএস