ব্যর্থতা ভুলে শ্রীলংকার বিপক্ষে ঘুড়ে দাঁড়াতে চায় বাংলাদেশ

ক্রীড়া ডেস্ক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
পেছনের সব ব্যর্থতাকে ভুলে নতুনভাবে শুরুর লক্ষ্য নিয়ে আগামিকাল থেকে শ্রীলংকার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।  সিরিজের প্রথম টেস্টটি অনুষ্ঠিত হবে ক্যান্ডির পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামে।  খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে।
সিরিজটি আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্ভুক্ত।  করোনার কারণে গেল বছর দু’বার সিরিজটি স্থগিত হয়েছিলো।
করোনা বিরতির পর প্রথম মাঠে ফিরেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতে বাংলাদেশ।  তবে ক্যারিবীয়দের কাছে দুই ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে হারে টাইগাররা।  সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কয়েকজন শীর্ষ খেলোয়াড় অংশ নেয়নি।  তারপরও টেস্ট সিরিজে বিধ্বস্ত হয় বাংলাদেশ।
এরপর নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে ও টি-২০ সিরিজে হেয়াইটওয়াশ হয় বাংলাদেশ।  বাংলাদেশের এমন পারফরমেন্সে প্রশ্ন উঠে বড় দলের বিপক্ষে লড়াই করার সামর্থ্য আছে কি-না টাইগারদের।
নিউজিল্যান্ডে টাইগার দলের পরাজয়ের ধরণ দেখে স্বাভাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে।  তবে শ্রীলংকার বিপক্ষে ভালো করার ব্যাপারে আশাবাদি বাংলাদেশ।  কারণ লংকানদের মাটিতে অতীত পারফরমেন্স সাহস দিচ্ছে টাইগারদের।
বড় ফরম্যাটে গর্ব করার মত কিছুই নেই বাংলাদেশের।  কারণ এই ফরম্যাটে নিজেদের সবসময় দুর্বল প্রমাণ করছে তারা।  এই ফরম্যাটে পথচলা শুরুর পর ১২১ টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ।  জিতেছে মাত্র ১৪টিতে।  হেরেছে ৯১টি।  এর মধ্যে ৪৩টি ম্যাচে ইনিংস ব্যবধানে হার টাইগারদের।  বাকী ১৬টি ড্র হয়।
পরিসংখ্যানে প্রশ্ন জাগে, ক্রিকেটের অভিজাত এই ফরম্যাটে খেলার মত সামর্থ্য রাখে কি-না বাংলাদেশ।  তারপরও শেষ দু’বারের সফর থেকে আশাবাদী বাংলাদেশ।  কারন খালি হাতে শ্রীলংকা ছাড়েনি তারা।
এখন পর্যন্ত শ্রীলংকার বিপক্ষে ২০টি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ।  জিতেছে মাত্র ১টিতে।  হেরেছে ১৬টিতে।  তবে শেষ পাঁচ লড়াইয়ে ১টি জয়ের সাথে দু’টি ড্রও ছিলো টাইগারদের।  শ্রীলংকার মাটিকে টাইগারদের জয়টি এসেছিলো ২০১৭ সালে।  যা ছিলো বাংলাদেশের শততম টেস্ট।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ের পর প্রতিপক্ষের মাটিতে একমাত্র শ্রীলংকার বিপক্ষেই জিতেছে বাংলাদেশ।  ওয়েস্ট ইন্ডিজ-জিম্বাবুয়ে খর্বশক্তির দল হলেও, পূর্ন শক্তির শ্রীলংকাকে হারিয়েছিলো টাইগাররা।  তাই লংকানদের বিপক্ষে সেই জয়টি অবিস্মরণীয়।
৪ উইকেটে শ্রীলংকার বিপক্ষে জয় পাওয়া সেই ম্যাচে খেলা বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই বর্তমান দলে আছেন।
সেই ম্যাচের কথা স্মরণ করে দলের অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজ জানান, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে হারের বৃত্ত থেকে বের হতে অবিস্মরনীয় জয় পাওয়া ম্যাচ থেকে অনুপ্রাণিত হতে পারে দল।  তিনি বলেন, সেটি ছিল আমাদের জন্য একটি স্মরণীয় ঘটনা।  ম্যাচের আগে আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম আমরা আরও ভাল কিছু করতে সক্ষম।
তিনি আরো জানান, শ্রীলংকার মাটিতে বাংলাদেশ সফল সফরকারী দল।  তাই লংকান সফর অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে টাইগারদের।  তিনি বলেন, অতীতে শ্রীলংকা সফরে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলেছি।  নিদাহাস ট্রফিতে আমরা ফাইনাল খেলেছি।  ফাইনাল জয়ের খুব কাছে গিয়ে আমরা ট্রফি জিততে পারিনি।  শ্রীলংকার সঙ্গে দুই ম্যাচের টেস্ট ১-১এ ড্র করেছি।  গত তিন-চার বছরের পারফরমেন্স বিবেচনা করলে, আমরা বলতে পারি এখানে আমাদের ভালো সুযোগ রয়েছে।  অতীতের মত লড়াই করার মানসিকতা দেখাতে পারলে, আমি মনে করি ভালো ফল নিয়ে শ্রীলংকা ছাড়তে পারবো আমরা।
অন্য দিকে শ্রীলংকা দলের সাম্প্রতিক পারফরমেন্সও খুব ভালো নয়।  ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে কোনো জয় পায়নি তারা।  দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ০-০তে ড্র করলেও, ওয়ানডে ও টি-২০ সিরিজ হারে লংকানরা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের আগে দেশের মাটিতে ইংল্যান্ডের কাছে দুই ম্যাচে টেস্ট সিরিজ হারে শ্রীলংকা।  তাই সাম্প্রতিক পারফরমেন্স বিবেচনায় শ্রীলংকার বিপক্ষে ভালো সুযোগ দেখছে বাংলাদেশ।  কিন্তু মেহেদি হাসান মনে করেন, সাফল্য পেতে হলে লংকানদের বিপক্ষে লড়াই করতে হবে দলকে।
তিনি আরো বলেন, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আমাদের লড়াই করার মানসিকতা দেখাতে হবে।  আমি বিশ্বাস করি, টেস্ট সিরিজে আমরা তা দেখাতে সক্ষম হবো।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ