আফগানদের সান্ত্বনার জয়

ক্রীড়া ডেস্ক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
বাংলাদেশের সামনে ছিল সুবর্ণ সুযোগ।  জিতলে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ তো করা হতোই, সেই সঙ্গে আইসিসি র‍্যাংকিংয়ের ছয় নম্বরে উঠে আসতো টাইগাররা।  তবে এমন ম্যাচেই তামিম ইকবালের দল হল নাস্তানাবুদ।  বিপরীতে হেসে খেলে জিতল আফগানরা।
তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে আফগানিস্তানের কাছে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ।  আগে ব্যাট করে ৪৬.৫ ওভারে ১৯২ রানে অল আউট হয়েছিল বাংলাদেশ।  জবাবে তিন উইকেট হারিয়ে ও ৫৯ বল হাতে রেখেই জিতেছে সফরকারীরা।
আফগানদের হয়ে রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই দেখে খেলে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন দুই ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও রিয়াজ হাসান।  দুজনে মিলে ম্যাচ অনেকটাই নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন।
৩৫ রান করা রিয়াজকে স্ট্যাম্পিংইয়ের ফাঁদে ফেলে আফগানদের ৭৯ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান।  এ সময় টাইগার শিবিরে ম্যাচ জয়ের আশা খানিকটা দেখা দিলেও ক্যাচ মিসের কারণে সেটা মিলিয়ে যেতে সময় লাগেনি।
গুরবাজ ও রহমত শাহ মিলে দলকে জয়ের বন্দরের কাছে নিয়ে আসেন।  জয় থেকে ১৫ রান দূরে থাকতে ৪৭ রান করা রহমতের উইকেট হারায় আফগানিস্তান।  তার জায়গায় নামা হাশমতউল্লাহ শাহিদীও ২ রানের বেশি করতে পারেননি।
তবে মিরাজের এই জোড়া উইকেট শিকার সফরকারীদের জয়ে বাঁধা সৃষ্টি করতে পারেনি।  রহমত না পারলেও দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন গুরবাজ।  এর আগে তুলে নেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি।  শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত থাকেন ১০৬ রানে।
এর আগে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দিনের শুরুতে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল।  এই ম্যাচে অপরিবর্তিত একাদশেই নামে টাইগাররা।  তবে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা থেকে বাঁচতে আফগানিস্তানের একাদশে এসেছে একটি পরিবর্তন।  সুযোগ পেয়েছেন গুলবাদিন নাইব, বাদ পড়েছেন ফরিদ আহমেদ মালিক।
বাংলাদেশের হয়ে তামিম ইকবালের সঙ্গে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান লিটন দাস।  দুজনের ব্যাটে ধীরে ধীরে এগোতে থাকে বাংলাদেশ।  প্রথম পাওয়ার প্লে থেকে তারা যোগ করেন ৪৩ রান।  তবে দ্বিতীয় পাওয়ার প্লের একদম শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ।  ফজল হক ফারুকির ইনসুইঙ্গারে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন ১১ রান করা তামিম।  এরপর সাকিব আল হাসানকে সঙ্গে নিয়ে বড় জুটি গড়েন লিটন।
দারুণ সব শট খেলে ৬৩ বলে ক্যারিয়ারের চতুর্থ অর্ধশতক পূরণ করেন লিটন।  তার সঙ্গে সাকিবের জুটিও ছাড়াও পঞ্চাশের মাইলফলক।  দুজনের ব্যাটে যখন ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার অপেক্ষায় টাইগাররা, তখনই আউট হন সাকিব।
ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হওয়ার আগে ৩৬ বলে ৩০ রান করেন সাকিব।  এরপর অল্প সময়ের ব্যবধানে সাজঘরে ফিরেছেন মুশফিকুর রহিম ও ইয়াসির আলী রাব্বি।  এই দুজন করেন যথাক্রমে ৭ ও ১ রানে।
অন্যরা আসা যাওয়ার মাঝে থাকলেও একপ্রান্ত আগলে রেখে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন লিটন।  টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরির সুবাসও পাচ্ছিলেন তিনি।  তবে মোহাম্মদ নবীকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে গুলবাদিন নাইবের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হয়ে আউট হন এ ওপেনার।  এর আগে করেন ৮৬ রান।
আফিফ হোসেনকে ৫ রানের বেশি করতে দেননি নবী।  মেহেদি হাসান মিরাজ ৬ রানে রান আউট রানের খাতা খুলতে পারেননি তাসকিন আহমেদ।  শরিফুল ইসলাম খেলেন ৭ রানের ইনিংস।
শেষ উইকেট হিসেবে মুস্তাফিজুর রহমান রান আউট হন।  একপ্রান্ত আগলে রেখে ২৯ রানে অপরাজিত থাকেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।  তিনি ৫৩ বল খেললেও দলের বাজে অবস্থার পেছনে তার দোষই বেশি।  কারণ তিনটি রান আউটেই ছিল তার অবদান।  এছাড়া ডট বল খেলে অন্যদের ওপর চাপও তৈরি করেছেন রিয়াদ।  আফগানদের হয়ে রশিদ খান তিনটি, মোহাম্মদ নবী দুটি এবং ফজল হক ফারুকি ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই একটি করে উইকেট শিকার করেন।

ডিসি/এসআইকে/আরসি