এবারের বন্যায় পানিতে ডুবে ২১০, সাপের কামড়ে ২৫ সহ ২৫১ জনের মৃত্যু

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
চলতি মৌসুমের বন্যায় দেশের দুর্গত এলাকাগুলোতে দুই মাসে ২৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের বেশিরভাগের প্রাণ গেছে পানিতে ডুবে।  স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ন্যাশনাল হেল্থ ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টারের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ বৃহস্পতিবারের (২৭ আগস্ট) ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বন্যাজনিত মৃত্যুর’ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
৩০ জুন থেকে ২৭ আগস্ট পর্যন্ত বন্যা দুর্গত এলাকায় পানিতে ডুবে ২১০ জনের, বজ্রপাতে ১৩ জনের, সাপের দংশনে ২৫ জনের, ডায়রিয়ায় ১ জনের এবং আঘাতে ২ জনের মৃত্যু নথিভুক্ত করেছে।
বন্যা কবলিত ৩৩ জেলায় ডায়রিয়া, চর্মরোগ, চোখের প্রদাহ, শ্বাসনালীর প্রদাহসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৭ হাজার ৩০১ জন।  এর মধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যাই অর্ধেক।
তবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এবার বন্যায় মৃতের সংখ্যা ৪২ জন।  এর মধ্যে দু’জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি।  বাকিরা সবাই শিশু এবং তাদের একজন প্রতিবন্ধী।
মৃতের সংখ্যায় এই তারতম্যের কারণ জানতে চাইলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আতিকুল হক বলেন, ‘সংখ্যা নিয়ে ভুল বোঝাবিুঝি রয়েছে।  বন্যার পানিতে মৃত্যুর বিষয়ে আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা যে তথ্য পাঠাচ্ছেন এটাই সঠিক।  এখানে বন্যার পানিতে ডুবে বা ভেসে গিয়ে মৃত্যু হলে তাদের নাম-ঠিকানাসহ পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাঠাতে হয়।  বন্যা আক্রান্ত এলাকার বাইরে বা ভ্রমণে গিয়ে নৌকা ডুবি বা অন্যভাবে দুর্ঘটনার তথ্য এখানে যুক্ত করা হয় না’।
দীর্ঘদিন দুর্ভোগের শেষে পানি নেমে যাওয়ার পর ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণও করা হয়েছে।  এবার চার দফার বন্যায় সারা দেশে ৫ হাজার ৯৭২ কোটি ৭৪ লাখ ৬২ হাজার ৭৬ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ইতোমধ্যে জানিয়েছে সরকার।  ক্ষতির এই পরিমাণ ১৯৯৮ সালের বন্যার চেয়ে কম বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান জানিয়েছেন।
প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান জানান, ১৯৯৮ সালে দেশের ৫০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়, আর এবার প্লাবিত হয়েছিল ৩০ শতাংশ এলাকা।  এবারের বন্যা ৪৬ দিন স্থায়ী ছিল।  তাতে ঘরবাড়ি, গবাদিপশু, শস্যখেত, বীজতলা, মৎস্য খামার, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, সড়ক, ব্রিজ, বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।  ক্ষয়ক্ষতি অনুযায়ী পুনর্বাসন পরিকল্পনা নেওয়া হবে বলে প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন।
চলতি মৌসুমে ২৬ জুন প্রথম দফায় বন্যা শুরু হয়।  ১০ জুলাই দ্বিতীয় দফা, ১৯ জুলাই তৃতীয় দফা এবং ১৮ আগস্ট উপকূলীয় অঞ্চল প্লাবিত হয়।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ