উপকূল অতিক্রম করেছে নিম্নচাপ

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়ে সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করেছে।  তবে দেশের চারটি সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রাখা হয়েছে।  শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) রাতে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-৭) এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার কাছ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-খুলনা উপকূল অতিক্রমরত নিম্নচাপটি আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করেছে।  এটি শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় স্থল নিম্নচাপ আকারে ফরিদপুর-মাদারীপুর অঞ্চল ও কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছিল।  এটি আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি এলাকায় বায়ুচাপের পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে এবং গভীর সঞ্চারণশীল (বজ্র মেঘ) মেঘমালার সৃষ্টি হয়েছে।
স্থল নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।  বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া বিভাগ।
বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, স্থল নিম্নচাপটির প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম এবং জেলাগুলোর কাছাকাছি দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৪ ফুটের বেশি উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
এছাড়া নিম্নচাপের প্রভাবে চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, ঢাকা, সিলেট, ময়মনসিংহ, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে অনেক স্থানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।  সেই সঙ্গে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ করতে নিষেধ করেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
শুক্রবার বিকেল ৪টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, ঢাকা, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলের উপর দিয়ে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে অস্থায়ীভাবে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কি.মি. বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারী সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
নিম্নচাপের প্রভাবে শুক্রবার সারাদিনই ঢাকাসহ সারাদেশেই বৃষ্টি হয়েছে।  নিম্নচাপের প্রভাবে আগামিকাল শনিবারও সারাদেশে বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
আবহাওয়া অধিদফতর আরও জানিয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু (বর্ষা) বাংলাদেশের পশ্চিমাংশ থেকে বিদায় নিয়েছে।  দেশের অবশিষ্টাংশ থেকেও শিগগিরই বিদায় নেবে মৌসুমী বায়ু।
এছাড়া শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, এ সময়ে সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।  রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।
আবহাওয়া বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল দিনাজপুরে ৩৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।  শুক্রবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ডিমলায় ৩০ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে বরিশালে, সেখানে ১৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।  এ সময়ে ঢাকায় ৫৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ