৩০০০ বছর আগে মৃত্যুও আলাদা করতে পারেনি তাদের

বিচিত্র বিশ্ব ডেস্ক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
ভালোবাসার শুরু ভালোলাগা আর শ্রদ্ধাবোধ থেকেই।  সেটি হতে পারে তরুণ বয়সের প্রেমে কিংবা স্বামী স্ত্রীর সংসারের গন্ডিতে অভ্যস্ত ভালোবাসা।  তবে ভালোবাসার গভীরতা কতখানি তা দেখিয়ে দিয়ে গেছেন রোমিও-জুলিয়েট এবং লাইলী- মজনু, শিরি-ফরহাদসহ আরো নাম না জানা অনেকে।  তবে এবার এই ভালোবাসার আরেক দম্পতি।
প্রায় তিন হাজার বছর ধরে একে অপরকে জড়িয়ে আছেন ভালোবাসায়।  ইসরায়েলের বেথসাইদার বাইবেল সাইটে এক দম্পতির সমাধি পাওয়া গেছে।  পুরুষের তার এক হাত দিয়ে নারীকে জড়িয়ে আছেন।  প্রত্নতাত্ত্বিকরা এই দেহাবশেষ আবিষ্কার করার পর নাম দেন – ‘রোমিও- জুলিয়েট’।
এই গবেষণার কাজের তদারকিতে আছেন বেথসাইদা প্রকল্পের পরিচালক এবং নেব্রাস্কা ওমাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মীয় অধ্যয়নের অধ্যাপক রামি আরভ।  তারা এখনো এই দম্পতির মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলেননি।  ২০২০ সালের ২৫ থেকে ২৮ অক্টোবর নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইস্রায়েলের পুরাকীর্তি কর্তৃপক্ষের আয়োজিত ভার্চুয়াল প্রত্নতত্ত্ব সম্মেলনে আরাভ বলেছেন, এরকম একটি দম্পতি পাওয়া খুব বিরল।
 এর আগে ২০১৮ সালে পূর্ব ইউরোপের সবচেয়ে বড় দেশ ইউক্রেনের একটি কবরে পাওয়া গেছে ওই দম্পতির কঙ্কাল।  তিন হাজার বছর আগে তাদের এখানে সমাধি দেওয়া হয়েছিল বলে ইউরোপীয় সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যায়।  পুরাতত্ত্ববিদরা বিশ্বাস করেন, ‘পরের জন্মে’ তার স্বামীকে সঙ্গী করার জন্য একটা সময় নারীরা স্বেচ্ছায় প্রাণ দিয়ে এক জায়গায় সমাধি চাইতেন।  হয়তো এ জন্যই নারী তার স্বামীকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছেন আড়াইশ’ যুগ ধরে।
সম্প্রতি সমাধিতে পাওয়া কঙ্কাল গবেষণা করে জানা যায়, পুরুষটির বয়স ছিল ২০ এর মধ্যেই আর নারীর বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর।  কীভাবে তারা মারা গেলেন তা এখনো জানা যায়নি।  ধারণা করা হচ্ছে কেউ তাদের হত্যা করে এখানে কবর দিয়ে দিয়েছে।  আবার হতে পারে ওই সময়ে স্বামীরা মারা যাওয়ার পর স্ত্রীকে মরতে হতো এবং তার স্বামীর কাছে সমাধি করার প্রচলন ছিল।  এছাড়া ওই কঙ্কালগুলো যেভাবে পাওয়া গেছে তা থেকে বলা যায়, সম্ভবত মৃত স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে বিষপানে ‘আত্মহত্যা’ করেছেন স্বামী।  আবার এর উল্টোটাও হতে পারে।
স্বামীর সঙ্গে স্ত্রীর মরে যাওয়া, সে সময়ে নারীদের একটি বিশ্বাস ও পছন্দ ছিল।  এছাড়া ব্রোঞ্জ যুগের নারীরা মানবজাতির ‘অনন্ত জীবন’ বিশ্বাস করতেন।  তবে আরভের মতে, এই জুটির অন্তরঙ্গ সমাধি জানান দেয় তারা একজন রোমান্টিক দম্পতি ছিলেন।  প্রত্নতাত্ত্বিকেরা তাদের সম্পর্কে আরও জানার জন্য এই দম্পতির কঙ্কালের কাছ থেকে ডিএনএ বের করতে চান।  ১৯৮৭ সাল থেকে এই অঞ্চলে প্রত্নতাত্ত্বিকদের গবেষণার কাজ চলছে।  এক সময় খননের কাজ করতে গিয়ে পাওয়া যায় এই সমাধি। – সূত্র: লাইভ সাইন্স

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ