অফিস থেকে ছুটি নিতে এক নারীকে চারবার বিয়ে, তিনবার তালাক

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
অফিস থেকে ছুটি আদায়ে উদ্ভট এক কাণ্ড ঘটিয়েছেন তাইওয়ানের এক ব্যক্তি।  মাত্র ৩২ দিনের মধ্যে তিনি এক নারীকে প্রথমে বিয়ে করেছেন।  এরপর তাকে তালাক দিয়েছেন।  আবার তাকে বিয়ে করেছেন।  আবার তালাক দিয়েছেন।  এভাবে মোট চারবার বিয়ে করেছেন।  তিনবার তালাক দিয়েছেন।  এর উদ্দেশ্য, অফিসের কাছ থেকে আইন অনুযায়ী সবেতন ছুটি আদায় করা।
তিনি তাইপে’তে একটি ব্যাংকের কেরাণী বলে খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস নাউ।  এতে ওই ব্যক্তি বা তার স্ত্রীর নাম প্রকাশ করা হয়নি।  শুধু বলা হয়েছে, প্রথম বিয়ের জন্য তিনি ব্যাংকে ছুটির আবেদন করেন।  এ জন্য তাকে ৮ দিনের ছুটি দেয়া হয়।  তিনি গত বছর ৬ এপ্রিল ওই নারীকে বিয়ে করেন।  কিন্তু যখন আট দিনের ছুটি শেষ কয়ে যাচ্ছিল, তার শেষ দিনে তিনি স্ত্রীকে তালাক দেন।  পরের দিন তিনি তাকে আবার বিয়ে করেন।  এ সময়ে তিনি আবার সবেতন ছুটি চান ব্যাংকে।  তিনি জানতেন আইন অনুযায়ী তাকে এই ছুটি দিতে কর্তৃপক্ষ বাধ্য।  তিনবার তালাক দেয়া এবং চতুর্থবার বিয়ে করার পর্যন্ত এভাবেই বিয়ে-তালাক-বিয়ে সাজাতে থাকেন তিনি।
এমনিভাবে তিনি মোট ৩২ দিন ছুটি আদায় করে নেন চার বিয়ের অজুহাতে।  তিনি যেমনটা পরিকল্পনা করেছিলেন শেষ পর্যন্ত তা-ই হয়েছে।  ব্যাংক দেখতে পায়, তিনি বার বারই যা করার চেষ্টা করছেন তা হলো ছুটি বাড়াচ্ছেন।  কিন্তু বেতন ছাড়ছেন না।  অর্থাৎ প্রতিবারই তিনি বিয়ের জন্য বাড়তি পাওনা দাবি করছেন ব্যাংকের কাছে।  কিন্তু ব্যাংক তাকে প্রথম বিয়ের জন্য শুধু ৮ দিন ছুটি মঞ্জুর করে।  তাকে সবেতন ছুটি দিতে কর্তৃপক্ষ অস্বীকৃতি জানানোর পর ওই ক্লার্ক তিনবার তালাক ও চারবার একই নারীকে বিয়ের নাটক সাজান।  এরপরে পাওনা আদায়ের জন্য তিনি নিয়োগকারীদের বিরুদ্ধে তাইপে সিটি লেবার ব্যুরোতে অভিযোগ দাখিল করেন।
এতে তিনি ব্যাংকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন যে, ব্যাংক লেবার লিভ রুল বা শ্রমিকদের ছুটি বিষয়ক আইনের অনুচ্ছেদ ২ মানছে না।  আইন অনুযায়ী, কর্মচারীরা বিয়ে করার সময় সবেতন ৮ দিনের ছুটি পাবেন।  যেহেতু ওই কেরাণী চারবার বিয়ে করেছেন, তিনি এক্ষেত্রে ৩২ দিন সবেতন ছুটি দাবি করে বসেন।
এ নিয়ে তদন্ত করে তাইপে সিটি লেবার ব্যুরো।  তারা দেখতে পায়, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক শ্রম আইন লঙ্ঘন করেছে।  এ জন্য ব্যাংকে ২০২০ সালের অক্টোবরে ৫২ হাজার ৮০০ রুপি জরিমানা করে।  এর বিরুদ্ধে আপিল করে ওই ব্যাংক।  তাতে দাবি করা হয়, ওই শ্রমিক শ্রমিকের ছুটি বিষয়ক আইনের অধীনে বৈধভাবে ছুটি নেননি।  তিনি ত্রুটিপূর্ণভাবে বিবাহ বিষয়ক ছুটি ব্যবহার করেছেন।
পরে ১০ এপ্রিল বেইশি লেবার ব্যুরো আগে দেয়া রায়কে বহাল রাখে। তারা বলে, ওই কেরাণী অনৈতিক কাজ করলেও আইন ভঙ্গ করেননি।  এক্ষেত্রে শ্রমিকের ছুটি বিষয়ক আইনের অনুচ্ছেদ ২ লঙ্ঘন করেছে ব্যাংক।
এ ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।  মানুষ বিশ্বাস করতে পারছে না যে, তাইওয়ানে শ্রম আইনের মধ্যে এত বড় একটি ফাঁক লুকিয়ে আছে।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ