১৬ বছর পর স্বামী জানলেন সন্তানদের বাবা নন তিনি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
চীনের জিয়াংসি প্রদেশের বাসিন্দা ৪৫ বছর বয়সী চেন নামে এক ব্যক্তি বিয়ের ১৬ বছর পরে জানতে পেরেছেন তার ঘরে বড় হওয়া ৩ সন্তান প্রকৃতপক্ষে তার নয়।  বরং সেই ৩ সন্তান অন্য কোনো পুরুষের।  এরপর তিনি প্রতারণা করার অভিযোগে স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) এক প্রতিবেদনে চীনা সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট এই তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, পেশাগত কাজের জন্য স্ত্রীকে সবসময় কাছে রাখতে পারতেন না স্বামী।  তবে নিজের পরিবার ও বাড়ি থেকে দূরে থাকলেও ফোনের মাধ্যমে স্ত্রীর সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে চলতেন তিনি।  প্রতিনিয়ত তাদের মধ্যে অডিও এবং ভিডিওকলে কথা হতো।  এভাবেই তাদের দাম্পত্য জীবনের ১৬ বছর অতিবাহিত হয়।  এ সময়ে তাদের ঘর আলোকিত করে আসে তিন কন্যা সন্তান।
এর মধ্যে একদিন স্বামী আবিষ্কার করেন তার স্ত্রী পরকীয়ায় লিপ্ত।  তারপরও তিনি তাকে ক্ষমা করে দেন।  কিন্তু সম্প্রতি এক মেডিকেল পরীক্ষায় দেখা গেছে, এতদিন তিনি যাদের সন্তান হিসেবে মানুষ করেছেন, তারা আসলে তার বায়োলজিক্যাল সন্তান নন।  বরং তাদের বাবা অন্য কোনো পুরুষ।  এরপরই চেন তার স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
চায়না জিয়াংজি রেডিও এবং টিভি স্টেশন জানিয়েছে, চলতি বছরের শুরু থেকে চেনের ফোন রিসিভ না করাসহ তাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন তার স্ত্রী ইউ।  এমনকি তিনি বাড়ি থেকে দূরে কাজ করতে চান বলেও চেনকে জানান।  এরপরই ইউয়ের বিষয়ে চেনের মনে সন্দেহ দানা বাঁধতে থাকে।  পরে ইউয়ের মোবাইল ফোনের জিপিএস ট্র্যাকিং করেন চেন এবং মার্চের এক তারিখে তার স্ত্রীকে চীনের পূর্বাঞ্চলে একটি হোটেলে অবস্থান করছেন বলে শনাক্ত করেন।  পরের দিন সকালে চেন তার স্ত্রীকে হোটেল থেকে এক ব্যক্তির সাথে চেক আউট করতে দেখেন।  ওই ব্যক্তির সঙ্গে ইউয়ের সম্পর্ক রয়েছে বলে নিশ্চিত হন চেন।
এই ঘটনার পর চেন প্রাথমিকভাবে ইউকে ক্ষমা করলেও একটি মেডিকেল পরীক্ষা করেন।  আর এতেই বের হয় তাদের কনিষ্ঠ কন্যা অন্য পুরুষের মাধ্যমে জন্মগ্রহণ করেছে।  এরপরও পরিবারকে একসাথে রাখতে দাম্পত্যজীবন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন চেন।  তবে এরপর করা পৃথক পিতৃত্ব পরীক্ষায় জানা যায়, দম্পতির অন্য দু’টি কন্যাও চেনের জৈবিক সন্তান নয়।  আর এরপরই স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
অবশ্য পিতৃত্ব পরীক্ষায় আসল সত্য বের হয়ে আসার পর পালিয়ে যান ইউ এবং চেন এখনও তার স্ত্রীর সন্ধান পাননি।  এরপরই তিনি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের সাহায্য নেন এবং চায়না জিয়াংজি রেডিও এবং টিভি স্টেশনকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় হাতে মাথা রেখে চেনকে কাঁদতে দেখা যায়।
অবশ্য স্ত্রী ইউকে সংবাদমাধ্যম খুঁজে বের করে এবং সাক্ষাৎকার নেয়।  সেখানে অভিযুক্ত ওই স্ত্রী অনুতপ্ত বলে জানালেও তিনি বিশ্বাসঘাতকতা করেননি বলেই দাবি করেন।  ফোনে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় ইউ বলেন, আমি মনে করি না যে আমি তার সাথে প্রতারণা করেছি।  জৈবিক পিতৃত্ব কি সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ?
বিবাহবিচ্ছেদ চাওয়ার ইস্যুতে স্বামী চেনের সমালোচনাও করেন ইউ।  তিনি বলেন, ‘অনুগ্রহ করে আমার প্রতি সহানুভূতি দেখানোর চেষ্টা করুন।  আমাদের তিন সন্তান তাকে বহু বছর ধরে ‘বাবা’ বলে ডাকলেও এখন তিনি বলছেন মেয়েরা তার নিজের নয়।  তার আর পশুর মধ্যে পার্থক্য কি?

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ