জাল সনদ প্রমাণিত হওয়ায় যশোর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বরখাস্ত

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) কর্মরত আট কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সনদ জাল পাওয়ায় ছয় জনকে বরখাস্ত ও দুজনকে বাধ্যতামূলক অবসরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) আব্দুর রশিদ জানান, আজ শনিবার দুপুরে যবিপ্রবির সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম রিজেন্ট বোর্ডের ৯০তম সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে সনদ যাচাই সংক্রান্ত তিনটি আলাদা কমিটি বোর্ডে তাদের প্রতিবেদন দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তদন্ত বোর্ড গঠন করা হয়। পরে বোর্ড ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় জাল সনদধারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
বরখাস্ত হওয়া ছয় জন হলেন- রিজেন্ট বোর্ডের সভায় টেকনিক্যাল অফিসার জাহিদ হাসান (স্নাতক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়), সেকশন অফিসার (গ্রেড-১) মো. জাহাঙ্গীর আলম (স্নাতক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়), সেকশন অফিসার (গ্রেড-২) সাকিব ইসলাম (স্নাতক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়), সেকশন অফিসার (গ্রেড-২) হাসনা হেনা (স্নাতক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়), সিনিয়র ক্লিনার দিলীপ হরিজন (অষ্টম শ্রেণি) ও ক্লিনার বাসুদেব দাস (অষ্টম শ্রেণি) গুরুদণ্ডের শাস্তি স্বরূপ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেকশন অফিসার (গ্রেড-১) মহিদুল ইসলাম (স্নাতকোত্তর, দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়) ও মেকানিক মো. জাকির হোসেনকে (স্নাতকোত্তর, সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়) বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া টেকনিক্যাল অফিসার মো. হেলালুল ইসলামের (স্নাতক, দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়) বিষয়ে তদন্ত বোর্ডের প্রতিবেদন নেওয়া হলেও আইনি জটিলতা থাকায় তা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ করা আইনজীবীর কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় জানানো হয়, যবিপ্রবির উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মো. হায়াতুজ্জামানের বিরুদ্ধে নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়মে জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। একইসঙ্গে যবিপ্রবির পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনকে মারধরের ঘটনা বিবেচনায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা সুপারভাইজার মো. বদিউজ্জামান বাদলের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ বহাল রাখা হয়। একইসঙ্গে ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
যবিপ্রবির উপাচার্য ও রিজেন্ট বোর্ডের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন- যশোর-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) মো. আবু ইউসুফ মিয়া, যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন-৩) সৈয়দা নওয়ারা জাহান, সাভারের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির মহাপরিচালক ড. সলিমুল্লাহ, যশোরের আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. কাওছার উদ্দিন আহমদ, বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের সদস্য গোলাম শাহী আলম, ইউজিসি অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির, ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. এম এ রশীদ, যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহসান হাবীব, যবিপ্রবির অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ইকবাল কবীর জাহিদ, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গালিব, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী হাসান, রেডিয়েন্ট ফার্মার চেয়ারম্যান মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদী, সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মর্জিনা আক্তার, রিজেন্ট বোর্ডের সচিব ও যবিপ্রবির রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব প্রমুখ।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ