সেই ৫ নবজাতকের ৩ জনের মৃত্যু, সহযোগিতা কামনা

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
কুমিল্লার লাকসামে একসঙ্গে জন্ম নেওয়া ৫ নবজাতকের আরও একজন মারা গেছে।  রবিবার (১৬ আগস্ট) রাতে ঢাকার ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে শিশুটি মারা যায়।  এর আগে জন্মের দিনই দু’জন মারা যায়।  গত বুধবার দুপুরে লাকসাম জেনারেল হাসপাতালে অস্ত্রোপচার ছাড়াই পাঁচ সন্তানের জন্ম দেন শারমিন আক্তার নামে এক গৃহবধূ।  তাদের তিন জন ছেলে ও দু’জন মেয়ে।
ওজন কম হওয়ায় জন্মের পর শিশুদের নিয়ে কুমিল্লা মডার্ন হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা হন শারমিনের স্বামী মিজানুর রহমান।  যাওয়ার পথে অক্সিজেনের অভাবে এক ছেলে ও এক মেয়ে মারা যায়। অপর তিনজনকে কুমিল্লা মডার্ন হাসপাতালের ইনকিউবেটরে রাখা হয়।  অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার দুপুরে তাদের ঢাকা শিশু হাসপাতালে নেওয়া হয়।  সেখানে শয্যা না পেয়ে ধানমন্ডির উইমেন্স অ্যান্ড চিলড্রেন জেনারেল হাসপাতালে তাদের ভর্তি করা হয়।  রবিবার রাতে ইনকিউবেটরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও এক ছেলে শিশু মারা যায়।  বর্তমানে ওই হাসপাতালের ইনকিউবেটরে এক ছেলে ও এক মেয়ে চিকিৎসাধীন আছে।  তাদের চিকিৎসা বাবদ প্রতিদিন ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা করে খরচ হচ্ছে।  এত টাকা খরচ বহন করার সামর্থ্য নেই মাদ্রাসার শিক্ষক মিজানুর রহমানের।  এই অবস্থায় দুই নবজাতককে বাঁচাতে দেশের হৃদয়বান মানুষদের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
লাকসাম জেনারেল হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ লতিফা আক্তার বলেন, ‘ওই প্রসূতি নারী সাত মাসের গর্ভবতী ছিলেন।  হাসপাতালে আসার পর তার আলট্রাসনোগ্রাফি করা হয়।  তাতে দেখা যায়, তার পেটে চারটি বাচ্চা আছে।  এরপর তাকে স্যালাইন দেওয়া হয়।  পরে তিনি স্বাভাবিকভাবে একে একে পাঁচটি বাচ্চা প্রসব করেন।  ৭ থেকে ১০ মিনিটের ব্যবধানে বাচ্চাগুলো একে একে ভূমিষ্ঠ হয়।  কিন্তু তাদের ওজন কম ছিল।  ফলে মা ও বাচ্চাগুলোকে উন্নত পরিবেশে ইনকিউবেটরে রাখার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়’।
নবজাতকদের বাবা মাদ্রাসা শিক্ষক মিজানুর রহমান জানান, এর আগে তার প্রথম সন্তান দুই বছর আগে মারা যায়।  এবার পাঁচ সন্তান হওয়ায় তিনি মহাখুশি হয়েছিলেন।  কিন্তু এরই মধ্যে দুজন মারা গেছে।  দুই নবজাতককে বাঁচাতে সবার সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, ‘মাদ্রাসা থেকে মাসে ছয় হাজার টাকা বেতন পাই।  এই টাকায় সংসারই চলে না।  এরই মধ্যে এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি’।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ