বাঁশখালী পৌরসভা নির্বাচন : দলীয় মনোনয়ন পেতে ব্যস্ত আ’লীগের ১১, বিএনপির ৩ প্রার্থী

মু. মিজান বিন তাহের, বাঁশখালী প্রতিনিধি >>>

বাঁশখালী পৌরসভার মেয়র-কাউন্সিলরদের মেয়াদ শেষ হতে বাকি আরও দুইমাস।  আগামি ডিসেম্বর মাসেই ২০১৫ সালে ১৮ ডিসেম্বর নির্বাচিত এ পরিষদের মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে।  গত ২৭ অক্টোবর বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আশাদুল হক সাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপনে ২০২১ সালের প্রথম দিকে মেয়াদ উত্তীর্ণ পৌরসভার সাধারণ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০১৯ এর ২০(২) ধারা মোতাবেক যথা সময়ে অনুষ্ঠিত হবে বলে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।  দেশের ২৫০টি পৌরসভার উপ-নির্বাচন/সাধারণ নির্বাচন সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন।  তথ্য চেয়ে ইসির পক্ষ থেকে পৌরসভায় পাঠানো হয়েছে চিঠি।  স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামি মার্চের মধ্যে দেশের সব পৌরসভার নির্বাচন শেষ করতে নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। 
সেই হিসেবে বাঁশখালী পৌরসভা নির্বাচন চলতি বছরের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত হতে পারে।  তাই এই সময়টিকে শেষ সময় মনে করে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলীয় নীতিনির্ধারকদের আস্থা অর্জনে বেশ তৎপর হয়ে উঠেছেন।  দলীয় মিটিং, সভায় তারা নিয়মিত উপস্থিত থাকছেন নেতা-কর্মীদের নিয়ে।  আবার এই সম্ভাব্য প্রার্থীদের বেশিরভাগই স্থানীয় সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর সুনজরকে দলীয় মনোনয়ন লাভের গুরুত্বর্পূণ অংশ হিসেবে দেখছেন।  তাই মূল নির্বাচনের আগে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের দলের মধ্যে লড়াই করে জয়ী হতে হবে। 

বর্তমান মেয়র সেলিমুল হক চৌধুরী, সাবেক মেয়র শেখ ফখরুদ্দিন চৌধুরী ও সাবেক মেয়র কামরুল ইসলাম হোসাইনী।

এখনো তফসিল ঘোষণা হয়নি।  তার আগেই পৌরসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।  ইতোমধ্যে পৌর এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে পোস্টার, ব্যানার ও বিলবোর্ড টাঙিয়ে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন মনোনয়ন প্রত্যাশী দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।  নির্বাচন বা দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহের কোনো ঘোষণা না আসলেও এরই মধ্যে প্রার্থী হতে নড়ে চড়ে বসেছেন আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা।  পোস্টার-ব্যানার-বিলবোর্ডের পাশাপাশি দলীয় সভা-সমাবেশে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন তারা।  দলের পাশাপাশি ভোটারদের কাছে টানতে আয়োজন করছেন বৈঠক-সমাবেশ।  নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন সামাজিক অনুষ্ঠানে।  নেতা-কর্মীরা স্ব স্ব পছন্দের প্রার্থীদের রেখেছেন চাঙ্গা, করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও।  নিয়মিত দৌঁড়ঝাপ করছেন দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে। 
তবে বিএনপির প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ অনেক কম দেখা যাচ্ছে।  মামলা-হামলার ভয়ে অনেকেই আত্মগোপনে আছেন।  আবার কেউবা বলছেন হয়রানি এড়াতে কৌশলগত কারণে এত আগে তারা প্রচারণায় নামছে না।  বর্তমানে কৌশলী অবস্থানে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা।  বিরোধীদল জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের মেয়র প্রার্থীদের কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। 
এবার আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নে আগ্রহী ১১ জন হলেন বর্তমান মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ সেলিমুল হক চৌধুরী, সাবেক পৌর মেয়র শেখ ফখরুদ্দিন চৌধুরী, উপজেলা পরিষদের বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা আ’লীগের সভাপতি রেহানা আক্তার কাজেমী, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মৌলভী নুর হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শ্যামল কান্তি দাশ, আওয়ামী লীগ নেতা আকতার হোসেন, উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মনছুর আলী, পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক অ্যাড. তোফাইল বিন হোছাইন, পৌর যুবলীগের আহবায়ক হামিদ উল্লাহ, আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজতবা আলী চৌধুরী মিশু, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মাহমুদুল ইসলাম। 

উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেহানা আক্তার কাজেমী, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মৌলভী নুর হোসেন, থানা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শ্যামল কান্তি দাশ, আওয়ামী লীগ নেতা আক্তার হোসেন।

অন্যদিকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও সাবেক পৌর মেয়র কামরুল ইসলাম হোসাইনী, পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি রাসেল ইকবাল মিয়া ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক অ্যাড মো. নাছির উদ্দীন।
আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ও বর্তমান মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ সেলিমুল হক চৌধুরী দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, আমি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে মাননীয় সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর সার্বিক সহযোগিতায় যতটুকু সম্ভব উন্নয়ন কাজ করেছি।  এখনো অনেক কাজ চলমান রয়েছে। ইতোপূর্বে ৭০% কাজ বাস্তবায়ন করেছি।  অবশিষ্ট কাজগুলোও শেষের পথে।  তিনি বলেন, পুনরায় যদি সুযোগ পাই, এই পৌরসভাকে ঢেলে সাঁজাবো।  আধুনিক পৌরসভার যে স্বপ্ন তা বাস্তবায়ন করব।  স্থাসীয় সাংসদের অনুসারি এই মেয়র বলেন, ৫ বছরে পৌরসভার উন্নয়নের পাশাপাশি দলের উন্নয়ন বার্তা পৌরবাসীর ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছি।  স্থানীয় জনগণের দাবি-দাওয়া পূরণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। এসব বিবেচনায় আগামি নির্বাচনে আমাকে আবারো দলীয় মনোনয়ন দিবে বলে আশা করছি।  দল আমাকে মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করব, নতুবা যাকে মনোনয়ন দেয় তার পক্ষে কাজ করব।
আ’লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক মেয়র শেখ ফখরুদ্দিন চৌধুরী দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, কার আমলে কে কি করেছে, সেটা জনগণই ভালো বুঝবে।  আমি মেয়র থাকাকালীন সময়ে ন্যায়বিচার ও সুশাসন নিশ্চিত ও শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করেছি, শান্ত ছিল এই পৌর এলাকা।  পৌর এলাকার কোনো মানুষ ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত ছিল না।  চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাস্তানি কেউ করতে পারেনি।  যদি আরেক বার সুযোগ পাই, দলীয় মনোনয়ন পেলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ‘ভিশন ও মিশন’ বাস্তবায়নে শতভাগ চেষ্টা করবো।  পৌরবাসীর আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের পাশাপাশি সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ-মাদকমুক্ত মডেল পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলব। 
বাঁশখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র এবং বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক কামরু ইসলাম হোসাইনী দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, ২০০২ সালের ডিসেম্বরে পৌরসভায় উন্নীত করা হয় উপজেলার জলদী ইউনিয়নকে।  এর কিছুদিনের মধ্যে ২০০৩ সালের ১৫ জানুয়ারি প্রথম পৌর প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করি।  পরবর্তীতে ২০০৪ সালের ৫ মে প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।  এ নির্বাচনে প্রথম পৌর মেয়র নির্বাচিত হয়ে এই পৌরসভাকে আমি ঢেলে সাজিয়েছি।  বিগত দশ বছর যাবৎ দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন হয়নি।  যা উন্নয়ন হয়েছে- সব আমার আমলে হয়েছে।  এটি সবার জানা রয়েছে।  যদি নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় এবং জনগণ যদি ভোট দিতে পারে তাহলে জনগণ আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করবে বলে আমি মনে করি।  তবে দলীয় মনোনয়ন পেলেই নির্বাচন করবো।  দলীয় সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেহেনা আক্তার কাজেমী দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, আমি ছাত্র জীবন থেকে আ’লীগের রাজনীতি করে আসছি।  আমার পরিবারের সকলে আ’লীগের মতাদর্শী।  আমি এই পৌরসভা প্রতিষ্ঠারআগে জলদী ইউনিয়ন থাকাকালীন সময়ে মহিলা ইউপি সদস্য ছিলাম।  তখনও এই পৌর এলাকার ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করেছি।  এলাকার উন্নয়ন করেছি।  বর্তমানে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায়ও বাঁশখালীর উন্নয়ন করেছি।  যদি দল আমাকে মনোনয়ন দেয় আমি ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে গিয়ে পৌর নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করব।  দলীয় মনোনয়ন পেলে জনদুর্ভোগ লাঘব করে বাঁশখালী পৌরসভাকে একটি আধুনিক পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলব।
বাঁশখালী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মৌলভী নুর হোসেন ২০০৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে নির্বাচন করলেও পরের নির্বাচনগুলোতে দলীয় মনোনয়ন পাননি।  পরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হলেও গত উপজেলা নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারেননি।  এবার তিনি পৌর নির্বাচনে প্রার্থী হতে তৎপর রয়েছেন।  তিনি দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, স্কুলজীবন থেকে রাজনীতি শুরু করে নিরবিচ্ছিন্নভাবে দলে সময় দিয়েছি।  দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করে মানুষের পাশে আছি।  তাই মানুষের সেবা করার জন্য প্রার্থী হতে আগ্রহী।  মনোনয়ন পেলে ঐক্যবদ্ধভাবে আধুনিক পৌরসভা গড়তে লড়ে যাব।  জনগণের দাবি-দাওয়া গুরুত্বের সাথে দ্রুত বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।  দুর্নীতি মুক্ত পৌরসভা হবে ইনশাআল্লাহ।
এদিকে পৌরসভার ছয়টি ওয়ার্ডে সংখ্যালঘু ভোটারের আধিক্য রয়েছে।  যে কারণে মনোনয়ন পেলে চমক দেখাতে পারেন উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শ্যামল কান্তি দাশ।  তিনি দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, স্কুলজীবন থেকে আমি আওয়ামী রাজনীতির সাথে যুক্ত আছি।  আশা করি আমার অবদান দল মূল্যায়ন করবে।  মনোনয়ন পেলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ‘ভিশন ও মিশন’ বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালনের পাশাপাশি অবহেলিত ও উন্নয়ন বঞ্চিত পৌরবাসীর আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণ, পরিকল্পিত নগরায়ণ, মান সম্মত শিক্ষা, ভৌত অবকাঠামোগত সমস্যা নিরসন, পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ-মাদকমুক্ত ও ন্যায় বিচার ও সুশাসনের মাধ্যমে মডেল পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলব।

আওয়ামী লীগ নেতা মনচুর আলী, অ্যাড. নাছির উদ্দীন, অ্যাড. তোফাইল বিন হোসাইন, হামিদ উল্লাহ, শেখ আলী মুজতবা মিশু ও মাহমুদুল ইসলাম।

বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাংস্কৃতিক সম্পাদক অ্যাড. নাছির উদ্দীন দৈনিক চট্টগ্রামকে জানান, আমি দীর্ঘ ৩০ বছর যাবৎ সক্রিয়ভাবে রাজনীতির সাথে জড়িত।  আমি বাঁশখালী পৌরসভা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলাম।  পৌরসভা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেছি।  চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবে আন্দোলন-সংগ্রামসহ দলের প্রতিটি কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশ গ্রহণ করেছি।  বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া শৃঙ্খলিত দল।  আমি দলের মনোনয়নে বিশ্বাসী।  আমাদের নেতা চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, বাঁশখালী থেকে বার বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী যদি আমাকে মনোনয়ন প্রদান করেন, নেতৃবৃন্দ যদি সিদ্ধান্ত প্রদান করেন তাহলে আমি নির্বাচন করার জন্য শতভাগ প্রস্তুত।  দল আমাকে ২০১৪ সালেও উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়ন প্রদান করেছিল।  দলীয় মনোনয়ন পেলেই কেবল আমি নির্বাচন করবো, নচেৎ নয়। 
আ’লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী মো. মনছুর আলী দৈনিক চট্টগ্রামকে জানান, স্বৈরচার বিরোধী আন্দোলন, বাবরী মসজিদ ভাঙ্গার সময় সাম্প্রদায়িক ডাঙ্গা বিরোধী আন্দোলন, অসহযোগ আন্দোলন জনতার মঞ্চ, আজীবন রক্তে মাংসে গড়া আওয়ামী লীগ পরিবার।  দলের দুঃসময়ে ক’জন ত্যাগীদের মধ্যে আমিও একজন।  দলের পরীক্ষিত সৈনিক হিসেবে রাজপথে ছিলাম সব সময়।  মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একজন নগন্য কর্মী হিসেবে নিঃস্বার্থ কাজ করে গেছি, বিনিময়ে বার বার অবহেলিত হয়েছি।  এবার দলীয় মনোনয়ন পাই আর না পাই, নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করব ইনশাআল্লাহ।
আ’লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হামিদ উল্লাহ বলেন, আমি ছাত্র জীবন থেকে আ’লীগের রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত ছিলাম, অজীবন থাকব।  দলের দুঃসময়ে আমি মাঠ পর্যায়ে কাজ করেছি।  বর্তমানেও করছি।  কখনও দলের সাথে বেইমানী করি নাই, করবও না।  আমার নেতা বর্তমান সংসদ সদস্য যদি আমাকে মনোনয়ন দেন।  অবশ্যই নির্বাচন করব ইনশাআল্লাহ।
আ’লীগের সম্ভাব্য আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী মাহমুদুল ইসলাম দৈনিক চট্টগ্রামকে জানান, ছাত্র জীবন থেকেই আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।  আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো।  বাঁশখালী পৌরবাসীর আগ্রহের প্রেক্ষিতে এ পৌরসভাকে একটি সমৃদ্ধশালী পৌরসভা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমি পৌরসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ইচ্ছা পোষণ করছি।  যেহেতু আমার পরিবার ও আমি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত সেহেতু নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয় মনোয়ন পাব বলে আশা করছি।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মফিজুর রহমান বলেন, পৌরসভা নির্বাচনে দল থেকে স্বচ্ছ-পরিচ্ছন্ন দুর্নীতিমুক্ত প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া হবে।  জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগের সুপারিশক্রমে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হবে।

দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার প্রাণকেন্দ্র জলদী ইউনিয়নকে ২০০২ সালের ডিসেম্বরে পৌরসভায় উন্নীত করা হয়।  পরবর্তীতে ২০০৩ সালের ১৫ জানুয়ারি প্রথম পৌর প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন বিএনপি নেতা কামরুল ইসলাম হোছাইনী।  পরবর্তীতে ২০০৪ সালের ৫ মে প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।  সেই নির্বাচনে প্রথম পৌর মেয়র নির্বাচিত হন কামরুল ইসলাম হোছাইনী।  পরবর্তীতে ২০১১ সালের ১৮ জানুয়ারি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে পৌর মেয়র নির্বাচিত হন শেখ ফখরুদ্দীন চৌধুরী।  এরপর ২০১৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ সেলিমুল হক চৌধুরী।
 

ডিসি/এসআইকে/এমএমবিটি