কাদিয়ানীদের সমাবেশ বন্ধ ও হামলাকারীদের শাস্তি দাবি হেফাজতের

উত্তর চট্টগ্রাম প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
‘খতমে নবুওয়াত অস্বীকারকারী কাদিয়ানীরা অমুসলিম, কাফের।  মুসলিম নাম ধারণ করে ৯০ শতাংশ মুসলমানের দেশে তাদের ঈমানবিধ্বংসী কোনো কার্যক্রম চলতে দেয়া হবে না।  এসব বন্ধ না করলে পরিণতি ভালো হবে না’।
বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক মাওলানা মুহিউদ্দীন রাব্বানী প্রেরিত এক যৌথ বিবৃতিতে এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় আমীর আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা সাজিদুর রহমান।
বিবৃতিতে হেফাজতের এই দুই শীর্ষ নেতা বলেন, স¤প্রতি আমরা লক্ষ্য করছি, পঞ্চগড়ের আহমদনগরে ‘কথিত মুসলিম নামধারী কাদিয়ানী অমুসলিমরা’ জাতীয় ইজতেমার নামে ঈমানবিধ্বংসী আয়োজনের পাঁয়তারা চালাচ্ছে।  অনতিবিলম্বে এ কার্যক্রম বন্ধ করতে আমরা সরকারের প্রতি জোরদার দাবি জানাচ্ছি।
তারা বলেন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দেশ।  গণতান্ত্রিক অধিকার হিসেবে এদেশের হিন্দুরা হিন্দু নামে, বৌদ্ধরা বৌদ্ধ নামে এবং খ্রিস্টানরা খ্রিস্টান নামে তাদের ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করছে।  কিন্তু কাদিয়ানী অমুসলিমরা মুসলমান নাম ধারণ করে সরলমনা সাধারণ মুসলমানদের ধোঁকা দিয়ে ঈমানবিধ্বংসী কার্যক্রম পরিচালনা করছে।  যা ইসলাম ধর্মের নামে অপপ্রচারের শামিল।  তা কখনো মেনে নেয়া যায় না।  অনতিবিলম্বে পঞ্চগড়ে অনুষ্ঠিতব্য কাদিয়ানীদের তথাকথিত জাতীয় ইজতেমাসহ বাংলাদেশে তাদের ঈমানবিধ্বংসী সব কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।  অন্যথায় আকিদায়ে খতমে নবুওয়াত রক্ষার্থে এ দেশের লাখো নবীপ্রেমিক তৌহিদি জনতা অমুসলিম কাদিয়ানীদের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে।
বর্তমান সরকার বিগত ২০১৯ সালে পঞ্চগড়ে তাদের সম্মেলন বাস্তবায়ন করতে না দেয়ায় সরকারকে সাধুবাদ জানিয়ে তারা আরও বলেন, সরকারের কাছে এই প্রত্যাশাও রাখি যে, আগামিতে এদেশের ধর্মপ্রাণ জনসাধারণের ধর্মীয় মূল্যবোধ রক্ষায় সরকার তাদের পাশেই থাকবে।  কাদিয়ানীদের কাফের হওয়ার মধ্যে সমগ্র মুসলিম বিশ্ব একমত এবং ঐক্যবদ্ধ। তাই মুসলিম পরিচয়ে এদেশে তাদের কোনো প্রকার কর্মকাণ্ড চালানোর অধিকার নেই।  অতিদ্রুত জাতীয় সংসদে আইন পাস করে তাদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে।
সম্প্রতি পঞ্চগড়ে তাদের সমাবেশকে কেন্দ্র করে তারা বেপরোয়া হয়ে সাধারণ মুসলমানদের উপর হামলা চালাচ্ছে- এমনটা দাবি করে তাঁরা মুসলমানদের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য বলে মনে করেন হেফাজতের দুই শীর্ষ নেতা।  তাঁরা বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, পঞ্চগড়ের বোদা থানাস্থ শালশিড়ি ইউনিয়নের মতিউর রহমানের ছেলে রাকিব ও তার পরিবারের ৯ সদস্যের ওপর কাদিয়ানি সন্ত্রাসী জয়নালের ছেলে রানা, রাজিব, রাসেল ও শামসুজ্জামানের ছেলে আশরাফুল এবং ভাড়াটে মাস্তান হাসান গং হামলা চালিয়েছে।  হামলায় হাসান ও আশরাফুল নেতৃত্ব দেয়।  এই ন্যাক্কারজনক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।  অনতিবিলম্বে রাকিব ও তার পরিবারের ওপর হামলাকারী কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের দোষী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে।  অন্যথায় তৌহিদী জনতা দেশব্যাপী আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে বাধ্য হবে।  যা কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না বলে বিবৃতিতে জানানো হয়।

ডিসি/এসআইকে/এসইউ