২৪৩৬ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা চসিকের

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
২ হাজার ৪৩৬ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) বিদায়ী মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।  ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য মোট ২ হাজার ৪৩৬ কোটি ৩০ লাখ ৪২ হাজার টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন তিনি।  মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) চট্টগ্রাম ক্লাবের হল রুমে চসিকের পঞ্চম নির্বাচিত পরিষদের শেষ বাজেট ঘোষণা করেন তিনি।
এ সময় তিনি নগরের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কর্ম পরিকল্পনার বিস্তারিত তথ্য উপাত্ত প্রদানকালে প্রস্তাবিত বাজেটের রূপরেখা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে নগরবাসীর প্রত্যাশা অনেক।  তাই তাদের যত অভিযোগ ও অনুযোগ এ প্রতিষ্ঠানের প্রতি।  পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন একটি মেগাসিটি, স্মার্ট সিটি, নির্মল শহর, নির্মল পরিবেশ বান্ধব শহর নগরবাসীর প্রত্যাশা।  সামর্থ্যের মধ্যে সেই প্রত্যাশা পূরণে চসিক নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।  স্বীকার করতে হয় চসিকের যতটুকু সদিচ্ছা আছে ততটুকু আর্থিক সক্ষমতা নেই।  তাই আর্থিক সক্ষমতা ছাড়া নগরবাসীর শতভাগ প্রত্যাশা পূরণ করা যায় না।  আর্থিক সক্ষমতা না থাকাতে পৌরকরের ওপর নির্ভর করে সব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হয়।  নাগরিক সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হলে সিটি কর্পোরেশনের আর্থিক সক্ষমতা বাড়াতে হবে।  এটা করতে হলে আইনি প্রক্রিয়ায় যে সুযোগ আছে সেটা গ্রহণের বিকল্প নেই।
সে কারণেই আইনের সুযোগ কাজে লাগিয়ে পৌরকর পুনর্মূল্যায়ন করতে চেয়েছিলেন উল্লেখ করে মেয়র বলেন, কিন্তু এটা করতে গিয়ে বাধাগ্রস্ত হয়েছি এবং প্রয়াস ব্যর্থ হয়েছে।  এতে চট্টগ্রামই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।  যদি আমি সফল হতাম, তাহলে বর্তমানে যে রাজস্ব আদায় হচ্ছে তা দ্বিগুণের চেয়েও বেশি হয়ে যেত।  ফলে প্রত্যাশিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করা সহজ হতো।
এ নগরেই আমার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। এখানেই আমার অস্তিত্ব ও বসবাস। স্বাভাবিকভাবেই জন্মভূমির প্রতি সবার আকর্ষণ ও দুর্বলতা থাকে।  আমিও ব্যতিক্রম নই।  দায়িত্ব দায়বদ্ধতার প্রতি আমি শতভাগ অনুগত।  মানুষের ভালোবাসা নিয়ে আমৃত্যু মানুষের মাঝে বেঁচে থাকতে চাই।  তাই এই নগরবাসীর সঙ্গে ছিলাম, আছি এবং আগামিতেও থাকবো।  কারণ আমি এই নগরবাসীর কাছে অনেক বেশি ঋণী।  এ ঋণ শোধ করার চেষ্টায় থাকবো সর্বক্ষণ।  মেয়র হিসেবে আমার মেয়াদের এ শেষ দিনে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার প্রতি চির ঋণী হয়ে থাকার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করছি।  কেননা গত মেয়র নির্বাচনে তিনি আমাকে মেয়র পদে সমর্থন দিয়েছিলেন।  আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি প্রিয় নগরবাসীর কাছে, যারা আমাদের পরিষদকে এই নগরের নাগরিক সেবা ও উন্নয়নে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন।
তিনি চসিকের অভিভাবক স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়সহ উন্নয়নকাজের দাতা সংস্থা, সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি স্থানীয় রাজনৈতিক, পেশাজীবী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নেতৃত্ব এবং গণমাধ্যম কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, তারা আমার পথ চলার সারথী ও সাথি।  তাদের সঙ্গে আমার বন্ধন কখনো ছিন্ন হবে না, বরং সুদৃঢ় হবে। এর আগে চসিকের ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১ হাজার ৪৪৭ কোটি ৯৩ লাখ ৮২ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেট সাধারণ সভায় পাস করা হয়।  বাজেট অধিবেশন পরিচালনা করেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা।  এ সময় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, জোবাইরা নার্গিস খান, প্রফেসর ড. নিছার উদ্দিন আহমদ মঞ্জু, অর্থ ও সংস্থাপন কমিটির চেয়ারম্যান কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন হিরন, চসিকের কাউন্সিলর, সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর, চসিক সচিব আবু শাহেদ চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল সোহেল আহমেদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল আলম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া, স্পেশাল ম্যাজেস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা জজ) জাহানারা ফেরদৌস, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফা বেগম নেলী, মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, রাজস্ব কর্মকর্তা সাহেদা বেগম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী, প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. সাইফুদ্দিন, অতিরিক্ত প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবিরসহ বিভাগীয় ও শাখা প্রধানরা।

ডিসি/এসআইকে/এসএজে