৫০ বছরের আস্থাবলে নেত্রী আমাকে এই দায়িত্ব দিয়েছেন : সুজন

আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সুজন।

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন, ৫০ বছর ধরে রাজনীতির মাঠে আছি।  দলের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছি।  দীর্ঘ ৫০ বছরের আস্থাবলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে এই দায়িত্ব দিয়েছেন।  তিনি আমার ওপর যে আস্থা রেখেছেন, তার মর্যাদা আমি রক্ষা করবো।
প্রশাসক পদে আনুষ্ঠানিকভাবে নিযুক্ত হওয়ার পর আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এই কথা বলেন।  প্রশাসক পদে আসার জন্য কোনো চেষ্টা-তদবির করেননি বলেও মন্তব্য করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা খোরশেদ আলম সুজন।
এর আগে সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুরের কিছু আগে সচিবালয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম জানান, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) প্রশাসক হিসেবে খোরশেদ আলম সুজনকে নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
প্রায় ৫০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে এখনও মাঠে থাকা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের এই সৈনিক সর্বশেষ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশা করেছিলেন।  খোরশেদ আলম সুজন চট্টগ্রাম ইন্টারমিডিয়েট কলেজ (বর্তমানে মহসীন কলেজ) ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পরে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।  চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজতত্ত্বে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লাইব্রেরি সায়েন্সে ভর্তি হন।  ১৯৮৬ সালে জাতীয় ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।  ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি মরহুম আবদুল মান্নানসহ ছাত্রনেতারা মিলে গঠন করেন সংগ্রাম কমিটি।  তিনি এরশাদ বিরোধী আন্দোলন, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
সত্তরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করেন সুজন। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী জালালাবাদ পাহাড় আক্রমণ করার পর আহত বাঙালি সৈন্যদের সেবা দেন সুজনসহ সহকর্মীরা।  বিহারীরা তাকে দুইবার হত্যার চেষ্টা করলেও এলাকাবাসীর সহায়তায় প্রাণে রক্ষা পান।  বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে সোচ্চার ছিলেন খোরশেদ আলম সুজন।
১৯৯০-৯৮ সালে চট্টগ্রামে সন্ত্রাস ও মাদকবিরোধী সংগঠনের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন সুজন।  ১৯৯১ সালে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য উপকমিটির সদস্য নির্বাচিত হন।  ১৯৯৬ সালে চট্টগ্রাম বন্দর অবরোধসহ অসহযোগ আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন সুজন।  ৬২’র ঘরে পৌঁছানো এই রাজনীতিক এমপি পদেও মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন, তবে শেষ পর্যন্ত বঞ্চিত হন।  করোনাকালেও বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে সরব আছেন সুজন।  সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সুবিধা বাড়ানো, বেসরকারি হাসপাতালে অস্বাভাবিক বিল আদায় বন্ধ করা, সরকারি ত্রাণের চাল চুরিতে জড়িতদের ‘ক্রসফায়ারে’ দেওয়ার দাবি জানিয়ে আলোচনায় ছিলেন খোরশেদ আলম সুজন।  চট্টগ্রাম ওয়াসার গ্রাহক হয়রানি, দূষিত পানি সরবরাহের প্রতিবাদও তিনি করেছেন।
খোরশেদ আলম সুজন বলেন, আমি এখনও অফিসিয়ালি চিঠি পাইনি। আগামিকাল (৫ আগস্ট) পর্যন্ত বর্তমান মেয়র দায়িত্বে আছেন।  ৬ আগস্ট আমি দায়িত্ব নেবো।  সিনিয়র সিটিজেন, প্রাক্তন মেয়রসহ সবার সঙ্গে আলোচনা করে এই শহরকে বাসযোগ্য শহর হিসেবে গড়তে কাজ করবো।  তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম শহরের প্রধান সমস্যা যানজট, ভাঙ্গা রাস্তা।  এ ব্যাপারে নজর দেবো।  পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমকে আপগ্রেড করবো।  হকারদের শৃঙ্খলায় আনতেও বিশেষ পরিকল্পনা আছে।

ডিসি/এসআইকে/এসএজে