লক্ষ্য আকাশ ছোঁয়া : সুযোগের অভাবে স্বপ্ন ভঙ্গ সম্ভাবনাময় যুব নেতৃত্বের

মো. নূর  উদ্দীন, নগর প্রতিবেদক >>>
ঋষিতা মৈত্রী, ২২ বছরের এই তরুণী মাধ্যমিক থেকেই যুক্ত হয়েছেন নানান সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে।  কখনো অন্যকে রক্ত দেয়া, কখনো ক্ষুধার্ত মানুষের মুখে হাসি ফোটানো, কখনো বা সমাজের বঞ্চিত মানুষগুলোর উন্নয়নে বিলিয়ে দিয়েছেন নিজের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো।  যখন কিশোরী ছিলেন, তখন তার দূরন্তপনার সময় ছিল, কিন্তু পিছিয়ে থাকা অসহায় মানুষের কল্যাণে সেই হাসি-আনন্দ আর কৈশোরের মজার সব সুযোগ ছেড়ে করেছেন সেবা।  মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা ঋষিতাদের সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী ৫২ বছরের বাবা।  নানান রোগশোকেও সংসারের জন্য করছেন সবকিছু।  আর্থিক টানাপোড়েন থাকলেও ঋষিতা নিজের টিফিন বা হাত খরচগুলো ব্যয় করেছেন অসহায় মানুষের জন্য।  সারাদিন নিজে না খেলেও অনেকবারই দরিদ্র মানুষের খাবার যোগাতে কাজ করেছেন ঋষিতা।  আজ ঋষিতা ২২ বছরের তরুণী।  নানান সময় বেশ কয়েকটি সামাজিক সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন।  স্বপ্ন দেখেছেন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হবেন।  আয়ের ৫০ শতাংশ পরিবার ও নিজের জন্য আর ৫০ শতাংশ দরিদ্র মানুষগুলোকে পুনর্বাসনে ব্যয় করবেন।  এভাবেই তিনি নিজের স্বপ্ন বুনেছেন।  কিন্তু বর্তমানে তিনি সংসারের টানাপোড়েনে নিপতিত।  ছোট ক্ষুদ্র ব্যবসা (বুটিক) করার মানসে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।  সামান্য পূঁজি জোগাড়ে ব্যর্থ ঋষিতা তাই আজ টিউশন করেই সংসারের হাল ধরেছেন।  বিসর্জন দিয়েছেন নিজের স্বপ্নকে।
ঋষিতার গল্পটি কোনো কাল্পনিক যুব নেতৃত্বের নয়।  বাস্তবেই আমাদের সমাজে বঞ্চিত, পিছিয়ে থাকা মানুষগুলোর জন্য দিন-রাত স্বেচ্ছাসেবীর ভূমিকায় থাকছেন দেশের এক তৃতীয়াংশ তরুণ-তরুণী।  নিজেদের যতটুকু সামর্থ আছে তা নিয়েই সমাজের কল্যাণে কাজ করছেন।  কিন্তু নানান কারণে এই সম্ভাবনাময় যুব প্রতিনিধিগুলো যেনো নিজের উপরই আস্থা হারাতে বসেছেন।  অবারিত সুযোগ থাকলেও নানান কারণে সেই সুযোগগুলো থেকে বরাবরই বঞ্চিত থাকে দেশের বড় একটি যুব জনগোষ্ঠী- যারা নিজের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় ব্যয় করেছেন দেশ ও সমাজের জন্য।  তারাই এক সময় বাধ্য হচ্ছেন নিজেদের গুঁটিয়ে নিতে।  তাদের মধ্যে তৈরি হয়েছে হতাশা, বিতৃষ্ণা আর অভিমান।  নিরবেই নিজের প্রতিভাকে মাটিচাপা দিয়ে নিজেকে গুঁটিয়ে নিচ্ছেন।  ফলে দেশের মানুষ তাঁদের জন্য ভাববার মানুষগুলোকে হারাচ্ছে।  দেশ তার আগামির যোগ্য নেতৃত্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সময়ের সাথে সাথে বদলেছে যুগ।  যুগের সাথে সাথে বদলেছে মানুষের চিন্তা ও উদ্ভাবন ক্ষমতা।  কালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে অনেক কিছুই।  কিন্তু আধুনিকতা দিচ্ছে আরো বেশি কিছু।  বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের একটি স্বল্পোন্নত দেশ।  আর জাতি হিসাবেও আমরা উন্নয়নশীল।  তাইতো পৃথীবিতে যে ক’টি দেশে বেকার সমস্যা সবচেয়ে চরমে তারমধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।  প্রতি বছর অসংখ্য তরুণ-তরুণী উচ্চশিক্ষা শেষ করে কর্মসংস্থান না করতে পেরে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন।  যেখানে বেশ বড় অংকের তরুণ-তরুণী নিজেদের সংসারের হাল ধরতে নাজেহাল অবস্থা পার করছেন সেখানে কিছু তরুণ সমাজে উজ্জ্বল দৃষ্ঠান্ত স্থাপন করে চলেছেন।  বর্তমানে শিক্ষা আর দক্ষতার মধ্যে চলছে মারাত্মক বৈষম্য।  একজন রিক্সা চালক সারাদিন রিক্সা চালিয়ে আয় করছেন তিন থেকে পাঁচশ টাকা, যা মাস শেষে গিয়ে দাঁড়ায় ৯ হাজার থেকে ১৫ হাজারে।  অন্যদিকে ব্যয়বহুল শিক্ষা জীবন শেষ করে একজন তরুণ বা তরুণী মাত্র ৮-১০ হাজার টাকায় চাকুরি করতে বাধ্য হচ্ছেন।  শিক্ষিত তরুণদের অনেকেই ঝালমুড়ি-হকারি করার নজীরও বাংলাদেশে আছে।  অপরদিকে তরুণদের আরেকটি অংশ চাকুরিতে না ঢুকে নিজেরাই কিছু একটা করতে আগ্রহী।  ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে নানান ব্যবসা-বাণিজ্য তাদের স্বপ্ন।  কিন্তু তরুণদের অনুদান দিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেনো অপারগ।  অসম্ভব শর্তের বেড়াজালে তারা সেই অনুদান বা ঋণ না পেয়ে হতাশাগ্রস্ত।  যাদের পারিবারিক লিংক ভালো তারা সুযোগগুলো পেলেও মধ্যবিত্ত বা সাধারণ পরিবারের বড় একটি যুবগোষ্ঠী সেই সুযোগ বঞ্চিত।  ফলে সমাজে বর্তমানে বড় ধরনের বৈষম্য পরিলক্ষিত।
বর্তমান বিশ্বের একটি বড় শক্তি যুব সমাজ।  তাদের সংখ্যা শতকরায় প্রায় ৩৭ শতাংশ।  যা অন্য জনগোষ্ঠীর তুলনায় অনেক বেশি।  আর ২৫ বছরের মধ্যে শিশু-কিশোর-তরুণ জনগোষ্ঠী রয়েছে প্রায় ৬৬ শতাংশ।
যুবরা এখন চাকুরি নির্ভর নয়, তারা উদ্যোক্তা হতেই বেশি পছন্দ করেন।  কিন্তু স্বপ্ন আকাশ ছোঁয়া হলেও সফল হতে পারছেন না বেশিরভাগই।  তরুণরা সাহস করে এগিয়ে আসতে চাইছে, কিন্তু নতুন বাংলাদেশ তৈরিতে তেমন সুযোগ পাচ্ছেন না তারা- এমন অভিযোগ এই যুব জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের।  বর্তমান সময়ে চাকুরি যেন সোনার হরিণে পরিণত হয়েছে।  করোনার প্রভাবে বাংলাদেশে যুব বেকারত্বের হার বেড়ে দ্বিগুণের বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)।  ২০১৯ সালের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী- দেশের ১১ দশমিক ৯ শতাংশ তরুণ বেকার।  করোনার কারণে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড যদি ৬ মাস বা তার বেশি বাধাগ্রস্ত হয় তাহলে যুব বেকারত্বের হার বেড়ে হতে পারে ২৪ দশমিক ৮ শতাংশ পর্যন্ত।  সম্প্রতি প্রকাশিত ‘ট্যাকিং দ্যা কভিড-১৯ ইয়ুথ এমপ্লয়মেন্ট ক্রাইসিস ইন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ শিরোনামের একটি প্রতিবেদনে এমনটিই জানিয়েছে আইএলও।  এরই মধ্যে অনেকে হারিয়েছেন চাকুরি।  তাই বাড়ছে বেকারত্বের হারও।  বেকার সমস্যা বাংলাদেশে অন্যতম প্রধান সমস্যাগুলোর একটি।
ভয়াবহ এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে অনেকটাই যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থায় তরুণ সমাজ।  নিত্য-নতুন উদ্যোগ আবিস্কার করে সমাজকে, সমাজের যুবগোষ্ঠীকে পথ দেখাচ্ছেন অনেকেই।  নিত্য প্রয়োজনীয় অনেক পণ্য নিয়ে কাজ করছে বহু তরুণ-তরুণী।  কিন্তু পারিবারিক এবং সামাজিকভাবে অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয় তাদের।  এত পড়াশোনা করে কেন চাকুরি করছে না?  কি হবে ব্যবসা করে?  ইত্যাদি আরো নানান প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া হয় তাদের দিকে।  যা একজন নতুন উদ্যোক্তাকে শুরুতেই থামিয়ে দেয়।
এদিকে, যুব সংগঠনের পরিমাণ বেড়েছে বাংলাদেশে।  যার মধ্যে কারো রয়েছে ভালো কিছু করার পরিকল্পনা, কেউবা আবার সংগঠনের আড়ালে করে যাচ্ছে অনৈতিক কাজ।  সংগঠনের পরিমাণটি দৃষ্টিগোচর হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।  সামাজিক কার্যক্রমের প্রচার ও প্রসারের মূল মাধ্যম হিসেবে ফেসবুককেই বেছে নিচ্ছেন তারা।  সময় ও পরিস্থিতির কারণে সঠিক দিক-নির্দেশনা ও পরামর্শের অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে একসময়ের সমাজের স্থায়ী পরিবর্তনে ভূমিকা রাখার মতো সংগঠনগুলো।
যুবদের মেধার বিকাশ ও নেতৃত্বদানে অনন্য ভূমিকা রাখছে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা গুলো।  যুবাদের মধ্যে কেউ কেউ নেতৃত্বের ক্রমানুসারে একেকজন পৌঁছে গেছে অনন্য উচ্চতায়।  তারা এখন শুধু নিজেদের ঘরে বা নিজ এলাকাই সীমাবদ্ধ নেই, তারা এখন নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা, জাতীয় এমনকি আন্তর্জাতিক পর্যায়েও।  সবরকমের প্রতিকূলতা কাটিয়ে আজ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছেন কিছু সংখ্যক তরুণ।  ছিল হাজারো বাঁধা।  তারা ছিলেন অদম্য, কিভাবে অসাধ্যকে সাধন করতে হবে সেই মন্ত্র যেনো তারাই জানেন।
চট্টগ্রাম নগরে কর্মরত স্বপ্নীল সামাজিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এস.এম জায়েদ উদ্দিন (২৬) জানান, আমরা চট্টগ্রামে একসময় পুরোদমে কাজ করেছি। সমাজের পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠিদের জন্য কাজ করেছি।  স্থায়ী সমাধানই আমাদের প্রধান টার্গেট ছিল।  বেশকিছু পরিবারকে আমাদের নিজস্ব আর্থিক সহায়তায় স্বাবলম্বী করতে পেরেছি।  কিন্তু নানান কারণে আমরা আর এগুতে পারছি না।
গ্রেটা থুনবার্গের ডাকে সাড়া দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনে কাজ করা বাংলাদেশের নাগরিক সোহানুর রহমান নেতৃত্ব দিচ্ছেন এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে।  ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের কো-অর্ডিনেটর সোহানুর রহমান এখন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বৈশ্বিক সংগঠন উইমেন ডেলিভারের ইয়াং লিডার, সেই সাথে কাজ করছে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়েও।  সোহানুর রহমান জানান, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমি ২০১৫ সাল থেকে কাজ করছি।  ২০১৫ সালে আমি প্রথম মরক্কোতে যাওয়ার সুযোগ পাই বাল্য বিয়ে বন্ধের বিষয়ে।  তিনি দৈনিক চট্টগ্রামকে জানান, ‘আমার পরিবারের কেউ এনজিও বা সংগঠন করেনি।  কিন্তু এখন আমি ভালই কাজ করছি।  অর্থাৎ নেতার ছেলেই যে নেতা হবে সেটা কিন্তু না।  নির্দিষ্ট একটা বিষয় নির্বাচন করে দলগতভাবে এগুতে পারলেই নিজের মধ্যে নেতৃত্বের বীজ জন্মাবে।  সামাজিক সংকটই যুব নেতৃত্ব তৈরি করে।
তিনি আরো বলেন, নেতা হতে গেলে অনেক সময় সংগঠন লাগে না।  ভাল কাজ করার মন মানসিকতা থাকলে সংগঠন ছাড়াই করা যায়।  আর যুবরাই নেতৃত্ব দিবে- এটাইতো স্বাভাবিক।
প্রান্তিক পর্যায় থেকে উঠে আসা আরেক অদম্য তরুণ, ছুটে চলেছেন দেশের এ প্রান্ত থেকে ঐ প্রান্তে।  ২০১৮ সালে দক্ষতা উন্নয়ন ক্যাটাগরিতে দেশ সেরা সংগঠন ও সংগঠক হিসেবে ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’ ও ২০১৯ সালে বিশ্বের শীর্ষ উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক এর ‘ভালো মানুষের আলোর মিছিল’ ক্যাম্পেইনের আওতায় ‘ব্র্যাক অ্যাওয়ার্ড’ এবং ইউনিলিভার-প্রথম আলো’র ‘তোমার আলোয় উজ্জ্বল বাংলাদেশ’র অদম্য সংগঠন ভোরের আলো’র প্রতিষ্ঠাতা মো. শফিকুল ইসলাম খান।  তিনি জানান, ১৯৮৮/৮৯ সালের দিকে পরিবার হারিয়ে বেড়ে ওঠেন পথশিশু হিসেবে।  কিন্তু বর্তমানে তিনি চট্টগ্রামে কাজ করছেন পিছিয়ে থাকা ও সুবিধাবঞ্চিত শিশু, কিশোর-কিশোরী ও যুব জনগোষ্ঠীর স্থায়িত্বশীল উন্নয়নে।
তার নেতৃত্বে চট্টগ্রামসহ তিন পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীদের মাঝে ইস্যুভিত্তিক সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে ভোরের আলো।  তরুণদের সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, যুব-তরুণ নেতৃত্ব কিন্তু দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে অসম্ভব ভালো কাজ করে যাচ্ছে।  কিন্তু এর মূল্যায়নের পদ্ধতিগুলো নিয়ে নানান প্রশ্ন থাকায় সেই জনগোষ্ঠী নিজেদের সম্ভাবনা আর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে পারছে না।  তিনি বলেন, সুযোগ এমন একটি বিষয় যা কেউ কাউকে দিতে পারে না।  সুযোগ তৈরি করে নিতে হয়।  বিশ্বাস অর্জনের মাধ্যমে প্লাটফর্ম তৈরি করে নিতে হবে।  তিনি আরো বলেন, লক্ষ্যটা হতে হবে প্রখর।  এটি নড়বড়ে হলে কিন্তু সফলতা আসবে না।  কাজেই হাল ছাড়াটা উচিৎ নয়।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে নতুন প্রশাসক নিযুক্ত হওয়ার পর চট্টগ্রামে কর্মরত সংগঠন ইপসার উদ্যোগে ‘১ দিনের ছায়া মেয়র’ নামক একজন তরুণ কে নির্বাচন করা হয়।  একদিনের মেয়র হিসেবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন’র প্রশাসক খোরশেদুল আলম সুজনের সাথে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কর্ম এলাকায় ১ দিনের মেয়র হিসেবে কাজ করার ও নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পান হেফাজুর রশিদ (২১)।
হেফাজুর জানান, চট্টগ্রামের বাকলিয়ায় কর্মরত প্রগতিশীল যুব সংঘের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে পিছিয়ে থাকা যুব জনগোষ্ঠির জন্য কাজ করছেন।  তিনি দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, আমাদের নেতৃত্ব দেওয়ার বিষয়টি সহজ হয়ে উঠেছে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার জন্য।  সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলো নিরপেক্ষতা বজায় রেখেই আমাদের মতো যুবদের সহজেই নেতৃত্বের দক্ষতা তৈরিতে ভূমিকা রাখছে।  ফলে আমরাও সুযোগ তৈরি করে নিতে পারছি।
শিশু বয়স থেকে কঠোর পরিশ্রম করে যুবাতে পরিণত হওয়ার পরেও নেতৃত্বদানের বর্তমান চিত্র ও ভবিষ্যতে তাদের অবস্থানের দিকটি তুলে ধরে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি’র জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা নারগিস সুলতানা দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, বর্তমান সরকার যুবদের জন্য চিন্তা করে ভবিষ্যত নেতৃত্ব বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে কাজ করছে।  শিশু বয়স থেকেই তাদের বিভিন্ন জায়গায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিচ্ছে।  সরকারি বিভিন্ন কার্যক্রমে তাদেরকে আমরা পাই।  তিনি মনে করেন, তাদের এগিয়ে যাওয়া হাজারো কিশোর-কিশোরীদের অনুপ্রেরণা যোগাবে ।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর কোতোয়ালি থানা (ইউনিট) অফিসার মোহাম্মদ জাহান উদ্দিন জানান, ‘আমরা চাই না কোনো যুব/তরুণ জনগোষ্ঠী বেকার থাকুক।  তাদের জন্য বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণের আয়োজন করে থাকি আমরা।  আমাদের দেওয়া প্রশিক্ষণ পেয়ে প্রায় অনেক যুবকই এখন সফল উদ্যোক্তা।
তিনি দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, যাদের ইচ্ছা আছে তারাই সুযোগ করে নিতে পারছে।  আমরাতো চাই প্রতিটি যুবক তাদের নিজের পায়ে দাঁড়াক।  আর সংগঠনের বিষয়টি একটু আলাদা।  আমাদের কোতোয়ালি, বায়েজিদ, চান্দগাঁও, বাকলিয়া ইউনিটে যে যুব সংগঠনগুলো ভালো কাজ করছে তাদের জন্য কিন্তু আমরা সহায়তার হাত প্রসারিত করছি।

ডিসি/এসআইকে/এমএনইউ