নিজস্ব প্রতিবেদক
নতুন বছরের প্রথম রাতে ছুরিকাঘাতে যুবলীগ কর্মী ও হকার সমিতির নেতা রিপন খুনের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার পাঁচ নম্বর আসামি মো. এমদাদ (৩৮) পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) ভোরে চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার মাঝেরঘোনা এলাকায় ‘বন্দুকযুদ্ধের’ এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বায়েজিদ থানার ডিউটি অফিসার ও উপ-পরিদর্শক মো. রুবেল জানান, মাঝিরঘোনা এলাকায় আসামি গ্রেপ্তার করতে গেলে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এমদাদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি প্রিটন সরকার জানান, যুবলীগ কর্মী রিপনকে ছুরিকাঘাতে খুনের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার ৫ নম্বর আসামি এমদাদকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাকে নিয়ে মাঝেরঘোনা এলাকায় অস্ত্র উদ্ধারে গেলে তার সহযোগীরা তাকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশের সাথে প্রতিপক্ষের ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে সহযোগীদের ছোড়া গুলিতে এমদাদের মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি ও কার্তুজ এবং ছুরি-চাপাতি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গত ৩১ ডিসেম্বর রাতে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার শেরশাহ মিনার মোড়ে পলিটেকনিক কলেজের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এস এম মহিউদ্দিন ও স্থানীয় কাউন্সিলর শাহেদ ইকবাল বাবুর অনুসারীদের দু’গ্রুপের মধ্যে মারামারি ঘটনা ঘটে। শেরশাহ এলাকায় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা শাহেদ ইকবালের বাসায় মেজবান খেয়ে ফিরছিলেন যুবলীগ কর্মী রিপন ও তার বন্ধুরা। মারামারির সময় ছুরিকাঘাতে স্থানীয় জালালাবাদ হকার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. রিপনের মৃত্যু হয়। রিপন কাউন্সিলর বাবুর অনুসারী ও মৃত এমদাদ পলিটেকনিক কলেজের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দিনের অনুসারী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এমদাদ নগরীর বাংলাবাজার এলাকায় ভাসমান দোকান থেকে চাঁদা আদায়, শেরশাহ এলাকায় ভূমি দখলসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ছিলেন। এলাকায় ঝুঁট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, পোশাক কারখানা থেকেও চাঁদাবাজি করতেন। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে বায়েজিদ বাংলাবাজার এলাকায় হকার উচ্ছেদ করতে গিয়ে এমদাদ ও তার অনুসারীদের হামলার শিকার হন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেট।
নগর পুলিশের বায়েজিদ বোস্তামি জোনের সহকারী কমিশনার পরিত্রাণ তালুকদার জানান, রিপন হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ৫ নম্বর আসামি এমদাদ। সিসি ক্যামেরায় সংরক্ষিত দৃশ্যে ঘটনার সময় এমদাদকে মারামারিতে অংশ নিতে দেখা গেছে। এমদাদ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মহিউদ্দিনের অনুসারী। তিনি বায়েজিদের শেরশাহ কলোনির ফরিদ আহমদের ছেলে।
স্থানীয়রা বলছেন, আধিপত্য বিস্তারে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের কোন্দলের জেরে ছুরিকাঘাতে রিপনকে খুন করা হয়েছে। রিপন জালালাবাদ হকার সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও যুবলীগের কর্মী ছিলেন। এ ঘটনায় রিপনের ছোট ভাই বাদী হয়ে বায়েজিদ বোস্তামি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নগর পুলিশের বায়েজিদ জোনের সহকারী কমিশনার পরিত্রাণ তালুকদার জানান, রিপন হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত পাঁচ নম্বর আসামি এমদাদ। সিসি ক্যামেরায় সংরক্ষিত দৃশ্যে ঘটনার সময় এমদাদকে মারামারিতে অংশ নিতে দেখা গেছে। এমদাদকে গ্রেপ্তারের পর তাকে নিয়ে মাঝেরঘোনা এলাকায় অস্ত্র উদ্ধারে গেলে তার সহযোগিরা তাকে ছিনিয়ে নিতে হামলা চালায়। এসময় এমদাদের অনুসারীদের উপর্যুপুরী ছোঁড়া গুলিতেই তার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি, কার্তুজ এবং ছুরি-চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে।