গোমতী খননে ব্যয় ২৮৮ কোটি, উদ্দেশ্য আমদানি-রপ্তানি

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
উত্তর-পূর্ব ভারতের অরুণাচল, আসাম, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও ত্রিপুরায় পণ্য রপ্তানি এবং সেখান থেকে আমদানি বাড়াতে কুমিল্লার গোমতী নদী খনন করা হবে। ইতোমধ্যেই গোমতী নদী দিয়ে ভারতের এসব রাজ্যের সঙ্গে পরীক্ষামূলক নৌবাণিজ্য শুরু হয়েছে। কিন্তু নাব্য সংকট থাকায় গোমতী নদী খনন ছাড়া এ বাণিজ্য সফলতার মুখ দেখছে না। তাই নদী খননের জন্য ৭৯৭ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছিল নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। তবে পুরনো ডিপিপি সংশোধন করে আবারও পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। নতুন করে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা। সরকারি অর্থায়নে প্রকল্পটি জানুয়ারি ২০২২ হতে জুন ২০২৫ মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে।
গোমতী নদীর নাব্য পুনরুদ্ধার প্রকল্পের আওতায় এমন উদ্যোগ নিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। এজন্য সব প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে। প্রকল্পটি শিগগির জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি বা একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, নৌপথ মানেই পণ্য পরিবহনে ব্যয় সাশ্রয়। আমরা নৌপথগুলো খনন বা সংস্কার করলে একদিকে কম খরচে পণ্য পরিবহন করা যাবে অন্যদিকে সময়ও বাঁচবে। এরই অংশ হিসেবে গোমতী নদী খনন করবো। এর মাধ্যমে ত্রিপুরাসহ ভারতের অন্যান্য রাজ্যে পণ্য রপ্তানি এবং আমদানিতে সুবিধা হবে। এতে উভয় দেশই লাভবান হবে। আমরা সব কাজ শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছি। আশা করি শিগগির প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ শুরু করতে পারবো।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গোমতী নদী ভারতে উৎপত্তি লাভ করে কুমিল্লা সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়ন দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এর পরে কুমিল্লার সদর, দেবীদ্বার, কোম্পানীগঞ্জ হয়ে ১৫০ কিলোমিটার সর্পিল পথ পেরিয়ে দাউদকান্দির শাপটা এলাকায় মেঘনা নদীতে পতিত হয়েছে। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উত্তর-পূর্বপ্রান্তীয় পার্বত্যাঞ্চল ডুমুর নামক স্থান থেকে গোমতী নদীর উৎপত্তি।
ত্রিপুরার সিপাহিজলা জেলার সোনামুড়া থেকে বাংলাদেশের কুমিল্লার দাউদকান্দি পর্যন্ত নদীপথটি ৯৩ কিলোমিটার দীর্ঘ। এ নৌপথের ৮৯ দশমিক ৫ কিলোমিটার পড়েছে বাংলাদেশে এবং বাকি পথ ভারতে। বর্তমানে এ নৌপথে সর্বোচ্চ ৫০ টন ওজনের পণ্যবাহী নৌযান চলাচল করতে পারে। নৌপথটি খনন করা হলে বাংলাদেশ ও ত্রিপুরার মধ্যে সরাসরি পণ্য আমদানি-রপ্তানির অন্যতম রুট হিসেবে এটি ব্যবহার করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এই পথে ২০০ থেকে ৪০০ টনের বড় বড় পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল করতে পারবে বলে দাবি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ