বিপজ্জনক আয় বৈষম্যের দেশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ : অর্থনীতি সমিতি

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত বলেছেন, বিপজ্জনক আয় বৈষম্যের দেশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ।  ২০৩২ সাল নাগাদ বিদেশি ঋণ পরিশোধে বাংলাদেশ বিপদে পড়তে পারে।  তখন বড় ধরনের রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।  
আজ রবিবার (২২ মে) অর্থনীতি সমিতির অডিটোরিয়ামে ‘বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির বিকল্প বাজেট প্রস্তাবনা ২০২২-২৩: একটি জনগণতান্ত্রিক বাজেট প্রস্তাব’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত এসব কথা জানান। তিনি জানান, ১৯৭২-৭৩ থেকে শুরু করে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছর পর্যন্ত এই ৪৬ বছরে বাংলাদেশে কালো টাকার পরিমাণ ৮৮ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা।  একই সময়ে বিদেশে অর্থপাচার হয়েছে ৮ লাখ কোটি টাকা।  সভায় দুর্নীতি, অর্থপাচার ও কালো টাকা উদ্ধারে একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়ে আবুল বারকাত বলেন, ৪৬ বছরে দেশের পুঞ্জিভূত কালো টাকা থেকে দুই শতাংশ বাজেটের আয় খাতে ব্যবহার করার প্রস্তাব করছি।  এতে ১ লাখ ৭৭ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা উদ্ধার হবে।
পাশাপাশি একই সময়ে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থের ১০ শতাংশ উদ্ধার করে বাজেটে যুক্ত করার প্রস্তাব দেন তিনি।  এ সময় ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ২০ লাখ ৫০ হাজার ৩৬ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট পেশ করেন অধ্যাপক আবুল বারকাত।  এটি চলতি বাজেটের চেয়ে ৩ দশমিক ৪ গুণ বড়।
দেশের আয় বৃদ্ধি ও বাজেট ঘাটতি পূরণের বিষয়ে অর্থনীতির এই অধ্যাপক বলেন, অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের অন্যতম উৎস হলো সম্পদ কর ও অতিরিক্ত মুনাফার ওপর কর।  কালো টাকা থেকে উদ্ধার হওয়া অর্থ এবং পাচার ও বিদেশি নাগরিক থেকে প্রাপ্ত করও বাজেটে ব্যবহার করা যেতে পারে।  তাই আমরা ওই টাকা সংগ্রহের কথা বলছি।
তিনি আরও বলেন, অর্থনীতি সমিতি মনে করে, সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে কালো টাকা ও অর্থপাচার দুটোতেই রাশ টানা সম্ভব।
মেগা প্রকল্পে ঋণ পরিশোধকালে ঝুঁকি আছে জানিয়ে আবুল বারকাত বলেন, দেশের মেগা প্রকল্পের বৈদেশিক ঋণ যখন শোধ করা শুরু হবে, তখন আমরা সরাসরি রেড ঝুঁকিতে চলে যাবো।  সংকট সমাধানে আর কোনো মেগা প্রজেক্ট নেওয়া যাবে না, এমনকি কোনো প্রজেক্টের মেয়াদ বাড়ানোও যাবে না।
দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, বিপজ্জনক আয় বৈষম্যের দেশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ।  ২০৩২ সাল নাগাদ বিদেশি ঋণ পরিশোধে বাংলাদেশ বিপদে পড়তে পারে।  তখন বড় ধরনের রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।
বিকল্প বাজেট সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম।  এতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের ৬৪টি জেলা, ১০৭টি উপজেলা ও ২১টি ইউনিয়ন থেকে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সদস্য এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা যুক্ত ছিলেন।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ