১৯৩ কোটি ৮ লাখ টাকা গৃহকর আদায় করেছে চসিক

নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
২০২১-২২ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক গৃহকর আদায় করতে সক্ষম হয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)।  নগরীতে সরকারি-বেসরকারি মিলে মোট ২ লাখ ৪ হাজার ১৪০টি হোল্ডিংয়ের বিপরীতে দাবিকৃত ৩৮৩ কোটি ৭৬ লাখ ৭৪ হাজার ৬ টাকা গৃহকরের মধ্যে আদায় হয়েছে ১৯৩ কোটি ৮ লাখ ৬১ হাজার ৯০৭ টাকা।  চসিকের রাজস্ব বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক গৃহকর আদায়ের বিষয়ে চসিক মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ঢাকা সিটি কর্পোরেশনসহ অন্যান্য সিটি কর্পোরেশনের যেখানে গৃহকর আদায়ের হার ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ।  সেখানে চসিকের আদায় মাত্র ৫০ শতাংশ। যা মোটেও সন্তোষজনক নয়।
তিনি বলেন, দেশের অন্যান্য সিটি কর্পোরেশন ২৬টি খাত থেকে রাজস্ব আয় করে।  সেখানে চসিক মাত্র কয়েকটি খাত থেকে আয় করে।  তবে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক গৃহকর আদায়ের বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
সরকারি হোল্ডিং
চসিকের আওতাধীন ১৫১৬টি সরকারি হোল্ডিংয়ের বিপরীতে গত অর্থবছরে দাবি ছিল ১১২ কোটি ৮ লাখ ৪৫ হাজার ১৮ টাকা।  যার মধ্যে আদায় হয়েছে ৬৯ কোটি ৬৫ লাখ ২৬ হাজার ৬০৮ টাকা।  বকেয়া দাবি অর্থাৎ পুরানো বকেয়া ছিল ৯০ কোটি ১১ লাখ ৫৩ হাজার ৭০০ টাকা।  যার মধ্যে আদায় হয়েছে ২৪ কোটি ৫২ লাখ ৬৪ হাজার ৫৩৪ টাকা।  সরকারি হোল্ডিংয়ের বকেয়া এবং হাল দাবি মিলে মোট আদায় হয়েছে ৯৪ কোটি ১৭ লাখ ৯১ হাজার ১৪২ টাকা।  যা মোট দাবির ৪৭ শতাংশ।
বেসরকারি হোল্ডিং
২ লাখ ২৬২৪টি বেসরকারি হোল্ডিংয়ের মধ্যে গত অর্থবছর অর্থাৎ হাল দাবি ছিল ৯২ কোটি ৭ লাখ ১৭ হাজার ৬৯৫ টাকা।  যার মধ্যে আদায় হয়েছে ৬৫ কোটি ৪৮ লাখ ৪০ হাজার ৯১৯ টাকা। বকেয়া তথা পুরানো দাবি ছিল ৮৯ কোটি ৪৯ লাখ ৫৭ হাজার ৫৯৩ টাকা।  যার মধ্যে আদায় হয়েছে ৩৩ কোটি ৪২ লাখ ২৯ হাজার ৮৪৬ টাকা।  বকেয়া এবং হাল দাবি মিলে লক্ষ্যমাত্রার ৫৪ শতাংশ গৃহকর আদায় হয়েছে।
অন্যান্য খাত
ভূমি হস্তান্তর কর ৭৫ কোটি ৯৪ লাখ ৭২ হাজার ৭০০ টাকা, বিজ্ঞাপন কর ১৬ লাখ ৯২ হাজার ৯৮০ টাকা, সপসাইন ফি ৫ কোটি ১৬ লাখ ২৭ হাজার ৮৮৯ টাকা, যান্ত্রিক যানবাহন ফি ১০ লাখ ৯৭ হাজার ৮০০ টাকা, অযান্ত্রিক যানবাহন ফি ১ লাখ ৭৯০ টাকা, বিবিধ আয় ২৫ লাখ ৬২ হাজার ৭৫০ টাকা এবং এস্টেট শাখা ৪১ কোটি ৪০ লাখ ৬৩ হাজার ৮৩৫ টাকা আয় করেছে।
ট্রেড লাইসেন্স
গত অর্থবছরে চসিক থেকে নতুন ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছেন ১৪ হাজার ৪৭৫ জন ব্যবসায়ী।  এছাড়া নবায়ন হয়েছে ৬৪ হাজার ৫৯৮টি।  গত অর্থ বছরে নতুন পুরাতন মিলে মোট ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে ৭৯ হাজার ৭৩টি।  যা তার আগের অর্থ বছরে ছিল ৭৭ হাজার ৮৬টি।  এবার ট্রেড লাইসেন্সের সংখ্যা বেড়েছে ১৯৮৭টি।  এ খাত থেকে ২২ কোটি ৬৫ লাখ ৪৬ হাজার ৬৯৮ টাকা রাজস্ব পেয়েছে চসিক।
সার্কেলভিত্তিক আদায়ের হার
এক নম্বর সার্কেলে সরকারি হোল্ডিংয়ে আদায় হয়েছে ৭৩ শতাংশ, বেসরকারি হোল্ডিংয়ে কর আদায় হয়েছে ৫৭ শতাংশ।  দুই নম্বর সার্কেলে সরকারি হোল্ডিংয়ে আদায় হয়েছে ৫৯ শতাংশ এবং বেসরকারি হোল্ডিংয়ে ৫৫ শতাংশ, তিন নম্বর সার্কেলে সরকারি হোল্ডিংয়ে ৫১ শতাংশ এবং বেসরকারি হোল্ডিংয়ে ৭৭ শতাংশ, চার নম্বর সার্কেলে সরকারি খাতে ১৫ শতাংশ এবং বেসরকারি খাতে ৬২ শতাংশ।  পাঁচ নম্বর সার্কেলে সরকারি খাতে ৩০ শতাংশ এবং বেসরকারি খাতে ৭৯ শতাংশ, ছয় নম্বর সার্কেলে সরকারি খাতে ২৯ শতাংশ এবং বেসরকারি খাতে ৬৫ শতাংশ, সাত নম্বর সার্কেলে সরকারি খাতে ৮২ শতাংশ এবং বেসরকারি খাতে ৫৬ শতাংশ, আট নম্বর সার্কেলে সরকারি খাতে ২১ শতাংশ এবং বেসরকারি খাতে ২৪ শতাংশ গৃহকর আদায় হয়েছে।

ডিসি/এসআইকে/আরএআর