মানুষ সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদ মন থেকে বিশ্বাস করে : ইকবাল মাহমুদ

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ
দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ

ঢাকা ব্যুরো : ‘মানুষ সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদ মন থেকে বিশ্বাস করে। এমনকি শিশুরাও সংবাদপত্র থেকে শেখে। সংবাদপত্র ও টেলিভিশন মানুষের জীবনের ‘অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমার মনে হয় সংবাদপত্রের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব দেশের প্রতি। কোনো সংবাদ যেন দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন না করে, সে দিকটাও মাথায় রাখতে হবে। শুধু সংবাদপত্র নয়, আমাদের সকলের কর্মপ্রক্রিয়ায় সর্বপ্রথম থাকা উচিত দেশ, তারপর আপনি, আমি, আমরা সবাই’।

নতুন বছরের প্রথম দিন বুধবার (১ জানুয়ারি) ঢাকার সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে ‘দুর্নীতি দমনে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের এমন মন্তব্য আসে। তিনি বলেন, কে বড় কে ছোটো- সেসব বিবেচনা না করে দুর্নীতি দমন কমিশন ‘নির্মোহভাবে’ কাজ করছে। বিগত প্রায় চার বছরে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণে আমরা পিছপা হইনি। আমি দ্ব্যার্থহীন কণ্ঠে বলতে পারি, এ সময়ে কারো দ্বারা প্রভাবিত হইনি। যা করছি নিজের বিবেক-বিবেচনা বোধ থেকেই করছি’।

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার পথে দুর্নীতিকে প্রধান অন্তরায় হিসেবে চিহ্নিত করে তিনি বলেন, নতুন বছরে দুর্নীতি কমিনে আনাই হবে মুজিব বর্ষের ‘উত্তম কাজ’। উপস্থিত সাংবাদিকদের ইংরেজি নববর্ষ ও মুজিব বর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘আজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। তার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার পথে প্রধান অন্তরায় দুর্নীতি। এই দুর্নীতির মাত্রা যতটা কমিয়ে আনা যায়, সেটাই হবে মুজিব বর্ষে আমাদের জন্য সবচেয়ে উত্তম কাজ’।

সংবাদকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মাধ্যমে যদি আমাদের প্রতিষ্ঠানের কোনো দোষ-ত্রুটি খুঁজে পান, তা নিয়েও সংবাদ প্রকাশ করবেন। জনগণকে জানাবেন। কারণ দুদক জনগণের প্রতিষ্ঠান। আপনারা আমাদের শত্রু নন, বরং সহযোগী বা সহযাত্রী। আমাদের সমালোচনা করা হলেও আমারা আপনাদের শত্রু ভাবি না। বরং প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারে সমালোচনার প্রয়োজন রয়েছে। আমরা ইতিবাচকভাবে সমালোচনাকে গ্রহণ করি’।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, ক্যাসিনোর কারবার নিয়ে অনেক কথা হয়। এটা দুদক আইনের তফসিলভুক্ত অপরাধ নয়। তবে ক্যাসিনো ব্যবসা করে যে বা যারা অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন, সেটা দুদক আইনের তফসিলভুক্ত অপরাধ। ঠিক এ কারণেই আমরা অবৈধ সম্পদ অর্জনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। এসব তথ্যের সবচেয়ে বড় উৎস হচ্ছে সংবাদপত্র, অন্য কোনো সংস্থা নয়। আমরা আমাদের এই কর্মপ্রক্রিয়া থামাব না, এটা চলবে। তিনি বলেন, ‘দুর্নীতিপরায়ণদের যতক্ষণ না আইনে সোপর্দ করতে পারছি, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা নিরবচ্ছিন্নভাবে তাদেরকে তাড়া করব’। নতুন বছরে যার যার অবস্থান থেকে দেশের জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান দুদক চেয়ারম্যান।

কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে দুদক কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক খান, এ এফ এম আমিনুল ইসলাম, সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত, দুদকের প্রশিক্ষণ অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ কে এম সোহেল এবং রিপোটার্স এগেইনস্ট করাপশন (র‌্যাক) সাধারণ সম্পাদক আদিত্য আরাফাত বক্তব্য রাখেন।