চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির ব্যতিক্রমী নির্বাচন, জয়ী হলেন উত্তর কাট্টলীর মারুফও

সভাপতি- অ্যাড. এনামুল হক, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আবুল হোসেন মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক অ্যাড. মাহমুদ উল আলম চৌধুরী মারুফ।

নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
মাসজুড়ে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা আর ব্যতিক্রমী নানান কাজের মাধ্যমে আলোচিত চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।  ভোটারদের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও উৎসবমূখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন আইনজীবী ঐক্য পরিষদ প্যানেলের অ্যাড. এনামুল হক।  অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ প্যানেলের অ্যাড. আবুল হোসেন মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন।
প্রথমবারের মতো সকল দল-মত ও ভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা এক ব্যানারেই তাদের প্রচার-প্রচারণা চালান।  পুরো আইনজীবীপাড়া জুড়ে এমন অনুপ্রেরণামূলক নির্বাচনটি বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে।  নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পদে জয় পেয়েছেন চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী উত্তর কাট্টলীর স্বণামধন্য নাজির বাড়ির বাসিন্দা ভাষা সৈনিক মরহুম আলহাজ্ব বদিউল আলম চৌধুরী সন্তান অ্যাড. মাহমুদ উল আলম চৌধুরী মারুফ (২০২৬ ভোট)।  তিনি তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বিকে ৬৫০ ভোটে পরাজিত করেন।
গতকাল বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।  সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে ভোট শেষে গণনার পর রাত ১১টা নাগাদ ফলাফল ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাড. মোহাম্মদ হুমায়ুন আক্তার।  নির্বাচনে ৪ হাজার ৪০২ ভোটের মধ্যে ৩ হাজার ৪২৩টি ভোট পড়ে।  এতে সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ থেকে ৬টি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ এবং ৭ জন সদস্য পদে বিজয়ী হয়েছে।  অন্যদিকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদ থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে ৩ জন এবং সদস্য পদে আরো ৩ জন নির্বাচিত হয়েছেন।
ঘোষিত ফলাফলে জানা যায়, সভাপতি পদে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদের প্রার্থী অ্যাড. মো. এনামুল ১ হাজার ৮৩৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।  তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের প্রার্থী অ্যাড. আবু মোহাম্মদ হাশেম পেয়েছেন ১ হাজার ৫৪৯ ভোট।
সাধারণ সম্পাদক পদে সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের প্রার্থী অ্যাড. এএইচএম জিয়াউদ্দিন ১ হাজার ৯৪৫ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।  তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আইনজীবী ঐক্য পরিষদের অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী পেয়েছেন ৭১৮ ভোট।  একই পদে সমমনা আইনজীবী সংসদের প্রার্থী তৌহিদুল মুনীর চৌধুরী টিপু পেয়েছেন ৭২০ ভোট।
এতে সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন আইনজীবী ঐক্য পরিষদের অ্যাড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।  এছাড়াও সহ-সভাপতি পদে আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের অ্যাড. আলী আশরাফ চৌধুরী, সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাড. মোহাম্মদ আবদুল আল মামুন, অর্থ সম্পাদক পদে অ্যাড. এস এম অহিদুল্লাহ, পাঠাগার সম্পাদক পদে অ্যাড. মো. নজরুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অ্যাড. মো. মনজুরুল আজম চৌধুরী এবং তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক (আইটি) পদে আইনজীবী ঐক্য পরিষদের অ্যাড. মাহমুদুল আলম চৌধুরী মারুফ নির্বাচিত হন।
এছাড়া নির্বাহী সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ থেকে অ্যাড. ফাতেমা নার্গিছ হেলেনা, অ্যাড. এস এম আরমান মহিউদ্দিন, অ্যাড. আবু নাসের রায়হান, অ্যাড. সাহেদা বেগম, অ্যাড. খায়রুন নেছা, অ্যাড. জোহরা সুলতানা মুনিয়া এবং অ্যাড. মোমেনুর রহমান।
এছাড়া আইনজীবী ঐক্য পরিষদ থেকে নির্বাচিত হয়েছেন অ্যাড. মারুফ মো. নজিবুল আলম, অ্যাড. নুর কামাল ও অ্যাড. মো. সারোয়ার হোসেন লাভলু।
নির্বাচনে আইনজীবীদের ৪টি সংগঠনের ৪০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।  নির্বাচনে আওয়ামীপন্থি আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ এবং জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্যপরিষদ ১৯টি পদে পূর্ণ প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।  এ ছাড়া অন্য দুটি প্যানেল সমমনা আইনজীবী সংসদ ১টি এবং সাধারণ আইনজীবী কল্যাণ পরিষদে মোট ১টিসহ মোট দুটি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।
এদিকে, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে নির্বাচিত অ্যাডভোকেট মাহমুদ উল চৌধুরী মারুফ নির্বাচিত হওয়ায় অভিনন্দন এবং ভোটারদের কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তার বোন বাণিজ্য মন্ত্রণালিয়ের যুগ্ম সচিব ও বাংলাদেশ চা বোর্ডের সদস্য (অর্থ ও বাণিজ্য) ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরী, তার ভাই রাজনীতিবিদ আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, বোন অ্যাডভোকেট কানিজ ফাতেমা, ভাই নগর যুবলীগ নেতা মনোয়ার উল আলম চৌধুরী নোবেলসহ পরিবারের অপরাপর সদস্যবৃন্দসহ উত্তর কাট্টলীবাসী।
উল্লেখ্য, ১৮৯৩ সালে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়।  নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে এই পেশাজীবী সংগঠনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

ডিসি/এসআইকে/এমএনইউ